সুনামগঞ্জে যাত্রীবাহী বাস পানিতে ডুবে নিহত ১, আহত ৫
ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সুনামগঞ্জ
জাতীয়
সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জে যাত্রীবাহী বাস পানিতে ডুবে একযাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৫ জন।
মঙ্গলবার (২২ জুন) সকাল সাড়ে ৯ টায় সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার জয়কলস মোড়ে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত যাত্রীর পরিচয় জানা যায় নি। তবে তার বয়স আনুমানিক ২০ বছর হবে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সিলেট থেকে গেইটলক বিরতিহীন যাত্রীবাহী বাস আজ মঙ্গলবার (২২ জুন) সকাল সাড়ে ৭ টায় সুনামগঞ্জের উদ্দেশ্যে আসছিল। পথে দক্ষিণ সুনামগঞ্জের জয়কলস মোড়ে একটি প্রাইভেটকারকে অতিক্রম করতে গিয়ে ধাক্কা লেগে বাসটি সড়কের পূর্ব পাশের খালের পানিতে পড়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে বাসের যাত্রীদের উদ্ধার করে।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার এসআই দেবাশীষ সূত্রধর বলেন, সিলেট থেকে ছেড়ে আসা সুনামগঞ্জগামী বিরতিহীন যাত্রীবাহী বাস প্রাইভেটকারের সাথে ধাক্কা লেগে পানিতে পড়ে গেলে একজন নিহত ও কয়েকজন সামান্য আহত হয়। তবে নিহত যাত্রীর পরিচয় জানা যায়নি। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন দুর্ঘটনাকবলিত বাসটি উদ্ধারের চেষ্টা করছে।
জানা যায়, নিহত যাত্রীর লাশ পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে। আহতরা স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
রংপুর নগরীতে ফার্নিচারের দোকানে মালমাল তোলার সময় জাফর ওরফে কালু (৪২) নামের এক ভ্যান চালকের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) দুপুরে জাহাজ কোম্পানীর মোড়ে ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত কালুর বাড়ি রংপুর সিটি করপোরেশনের হাসনা বাজার এলাকায়।
প্রতক্ষদর্শীরা জানান, কালু কোম্পানীর মালামাল দোকানে তোলার সময় হঠাৎ বুকে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করে। পরে সকলে মিলে তাকে চেয়ারে বসিয়ে মাথায় পানি দেয়া হয়। এরপর হঠাৎ সে শুয়ে পড়লে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয় ।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি হিটস্ট্রোকে মৃত্যুবরণ করেছেন। পরে কালুর পরিবারের স্বজনরা এসে তার মরদেহ বাসায় নিয়ে যায়।
ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর বাড়িসহ আশেপাশের এলাকায় সচেতনতা কার্যক্রম জোরদার করার জন্য কাউন্সিলরদের আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) দুপুরে রাজধানীর গুলশান-২ নগর ভবনের হলরুমে ২য় পরিষদের ২৭তম করপোরেশন সভার আলোচনায় এই আহ্বান জানান তিনি।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, 'ডেঙ্গু রোগীর তালিকা অনুযায়ী তাদের ঠিকানা সংগ্রহ করে রোগীর বাড়িসহ আশেপাশের এলাকায় ব্যাপকভাবে সচেতনতা কার্যক্রম চালাতে হবে। কাউন্সিলরদের আহ্বান করছি আপনারা নিজ নিজ ওয়ার্ডের ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের বাড়িতে যাবেন, খোঁজ নিবেন। তাদের আশেপাশের মানুষদের সচেতন করবেন।'
মেয়র আরও বলেন, 'স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, রাজনীতিবিদ, ইমাম, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সবাইকে নিয়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে করণীয় সম্পর্কে মতবিনিময় সভা করতে হবে, সচেতনতামূলক র্যালি করতে হবে। এজন্য প্রত্যেক কাউন্সিলরকে ৫০ হাজার টাকা করে দেয়া হচ্ছে। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ওষুধ প্রয়োগ করা, পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করার পাশাপাশি জনগণের সচেতনতা জরুরি। জনগণের মাঝে বার্তা ছড়িয়ে দিতে হবে এডিসের লার্ভা যেন জন্মাতে না পারে সেজন্য নিজেদের ঘর বাড়ি, অফিস পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ছাদে, বারান্দায়, পরিত্যক্ত টায়ার, ডাবের খোসা, মাটির পাত্র, খাবারের প্যাকেট, অব্যবহৃত কমোড এগুলোতে পানি জমতে দেয়া যাবে না।'
কাউন্সিলরদের উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, 'খাল উদ্ধারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যার যার এলাকায় খাল দখল রয়েছে এবং দখলদার কারা আমাকে জানাবেন। আপনারা তথ্য দিবেন সেই অনুযায়ী অভিযান পরিচালনা করে খাল দখলমুক্ত করা হবে। খাল দখলদারদের কোন ছাড় দেওয়া হবে না।'
গতবারের মতো এবছরও ডিএনসিসি এলাকার কোরবানির পশুর হাটে ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থা থাকবে বলে ঘোষণা দেন ডিএনসিসি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম।
সভায় ডিএনসিসির সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিকের সঞ্চালনায় অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগে. জেনা. মোঃ মঈন উদ্দিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. ইমরুল কায়েস চৌধুরী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান, ডিএনসিসির সকল বিভাগীয় প্রধান ও ডিএনসিসির কাউন্সিলরবৃন্দ এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বাগানের চারদিকে নিরাপত্তা বেস্টনি। দূর থেকে বোঝার উপায় নেই ভেতরে কি চাষ হচ্ছে। প্রবেশের শুরুতেই চোখে পরে উন্নত জাতের মাল্টার বাগান। কিছুদুর এগিয়ে যেতেই দেখা যায় বাগানে ঝুলছে বাহারী রঙের আঙুর। দুপাশের উঁচু বেডের মাঝ দিয়ে পানি দেয়ার নালায় আগাছা পরিষ্কার করছেন এক দিনমজুর। তারও কিছুদুর এগোতে চোখে পরে হরেকরকম জাতের আম। কোনটি লম্বা, কোনটি গোলাকার, কোনটি আবার জাপানের বিখ্যাত সূর্য ডিম আম।
বিদেশি কোন বাগানের গল্প নয় এটি। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা বেলগাছা ইউনিয়নের হরিরাম গ্রামের যুবক আবু রায়হান ফারুক নিজ বাসার পেছনের কয়েক বিঘা উঁচু জমিতে গড়ে তুলেছেন এই বাগান। বেশিদিন পুরোনোও নয় এটি। ২০২০ সালে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে উদ্ভিদবিজ্ঞান থেকে অনার্স শেষ করার পর উদ্যোগ নেন এমন বাগানের। জমি প্রস্তুত করে ২০২২ সালে রোপণ করেন মাল্টা, আঙুর ও বিদেশি কিছু জাতের আম। সেগুলো দুই বছরের মাথায় এখন ফলন দেয়া শুরু করেছে। মোটামুটি ভালো অঙ্কের বিনিয়োগের পর এখন লাভের অঙ্ক গুনতে শুরু করেছেন ফারুক।
বুধবার (১৫ মে) দুপুরে এই বার্তা২৪.কম এর এই প্রতিবেদককে বাগানটি ঘুরে দেখান বাগানটির উদ্যোক্তা আবু রায়হান ফারুক।
আবু রায়হান ফারুক বলেন, আমি ২০২২ সালে এক বিঘা জমিতে আঙুর চাষ শুরু করি। ২০২৩ সালে কিছু জাতে ফলন পাই । এবছর প্রায় শতাধিক জাতের মধ্য থেকে ৪০ টিরও বেশি জাত থেকে ফলন পেয়েছি। এই আঙ্গুল ফুলের যে কালার এবং কোয়ালিটি, আমরা বহির্বিশ্ব থেকে যে আঙুর গুলো আমদানি করে আনছি সেগুলোর তুলনায় কিন্তু এগুলো একই রকম। আমাদের দেশেও এগুলো সম্ভব। সরকার যদি এগিয়ে আসে তাহলে যুবককেরা আঙুর চাষে সফল হতে পারে। এতে বেকারত্ব যেমন দূর হবে, তেমনি আমাদের ফলের চাহিদা আমাদের দেশেই পূরণ করা সম্ভব। আঙুরের পাশাপাশি আমার বাগানে কয়েক জাতের মাল্টা, ডালিম, লটকন এবং ১৫ টির মতো বিদেশি জাতের আম রয়েছে। দুই বছরের মাথায় আমি মাল্টা এবং আম থেকে ফলন পাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, ফল বিক্রির পাশাপাশি আমি আঙুরের চারা বিক্রি করে থাকি। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আমাকে প্রায় প্রতিদিনই কুরিয়ার করে পাঠাতে হয়। আশা করছি এই বছরে এই বাগান থেকে ফল ও চারা মিলে ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকা বিক্রি করতে পারব। কোন ব্যক্তি যদি এমন বাগান করতে চান তাহলে আমার সাথে যোগাযোগ করলে তাকে সর্বোচ্চ সাহায্য করার চেষ্টা করবো।
ফারুকের বাগান দেখতে প্রায় প্রতিদিনই ঘুরতে আসেন দর্শনার্থীরা। এমনি একজন ঘুরতে আসা যুবক সালমান দিদার আজমী বলেন, আমি এখানে এসে খুবই অভিভূত। আমার বন্ধু কষ্ট করে এই বাগানটি দাঁড় করিয়েছে। কুড়িগ্রামের মাটিতে আঙুরের এমন চাষ হয় সেটা এখানে আসলে প্রমাণ পাওয়া যায়। তাছাড়া টাটকা আঙুর ও বিদেশি অনেক জাতের ফল কেনার সুযোগও এখন আমরা পাবো।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি কুড়িগ্রামের উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ফারুক একজন তরুণ উদ্যোক্তা। সে আঙুরের পাশাপাশি মাল্টা এবং আম চাষ শুরু করেছে। কুড়িগ্রামের আবহাওয়া আঙুরের ফলন কেমন হয় এটির জন্য আমরা ফারুকের আঙুর বাগানের খোঁজখবর নিচ্ছি। যদি ভালো ফলাফল পাওয়া যায় তাহলে আমরা কুড়িগ্রামে সম্প্রসারণের ব্যবস্থা করবো। এজন্য তাকেও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হবে।
রাজধানীতে বেড়েই চলেছে অজ্ঞান করে সর্বস্ব হাতিয়ে নেওয়া চক্রের তৎপরতা। বিশেষ করে গণপরিবহনে চলাচল করা সমাজের মধ্যবিত্ত পুরুষদের টার্গেট করে সখ্যতা গড়ে তুলে মোবাইল ফোন ও টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেয় এই চক্রের সদস্যরা।
এর সর্বশেষ বলি হয়েছেন, যশোর থেকে ছেলের সঙ্গে ঢাকায় আসা নয়ন বিশ্বাস (৫৪)। ১১ মে বাসে করে ঢাকা এসে এই চক্রের হাতে পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন তিনি। তবে পুলিশের সক্রিয় তৎপরতায় অজ্ঞান পার্টির এক সদস্য গ্রেফতার হয়েছেন।
জানা গেছে, ১১ মে সকালে রাজধানীর মতিঝিলের টিটিপাড়া এলাকায় অজ্ঞান পার্টির দেওয়া পানি পান করে রাস্তায় জ্ঞান হারান নয়ন বিশ্বাস। পরবর্তীতে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে মর্গে পড়ে ছিল নয়ন বিশ্বাসের মরদেহ।
এ ঘটনায় বাবা নিখোঁজ উল্লেখ করে শাহজাহানপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ছেলে শ্যারন বিশ্বাস। জিডির সূত্র ধরে তদন্তে নেমে নিহত নয়ন বিশ্বাসের মরদেহ শনাক্ত ও জড়িত সন্দেহে অজ্ঞান পার্টি চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
নয়ন বিশ্বাসকে অজ্ঞান করে মোবাইল ফোন ও সঙ্গে থাকা ব্যাগ হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় সাভারের আশুলিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে বিশ্বজিৎ কর্মকার ওরফে নূর মোহাম্মদকে। এ সময় নিহতের সঙ্গে থাকা দুটি মোবাইল ফোন ও হাতিয়ে নেওয়া কাপড় এবং বিপুল পরিমাণ ঘুমের ওষুধ জব্দ করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) দুপুরে রাজধানীর পল্টনে নিজ কার্যালয়ে এ তথ্য জানান ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম খান।
ডিসি হায়াত বলেন, যশোর থেকে সুন্দরবন এক্সপ্রেসে করে গত ১১ মে ভোরে ঢাকার কমলাপুরে আসেন শ্যারন বিশ্বাস ও তার বাবা নয়ন বিশ্বাস। সেন্ট জোসেফ স্কুলের শিক্ষার্থী শ্যারন বিশ্বাস বাবাকে কমলাপুরে বিদায় দিয়ে মোহাম্মদপুরের উদ্দেশে যাত্রা করেন। অপরদিকে, তার বাবা নয়ন বিশ্বাস পায়ে হেঁটে টিটিপাড়া এলাকায় যান গাজীপুরগামী বাসে ওঠার জন্য। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, বাবাকে অনেক খোঁজাখুজি করে কোথাও না পেয়ে শাহজাহানপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন শ্যারন বিশ্বাস। জিডির পরিপ্রেক্ষিতে নয়ন বিশ্বাসের সন্ধানে নামে পুলিশ। প্রথমে কমলাপুর থেকে টিটিপাড়া পর্যন্ত সড়কের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হয়। এতে দেখা যায়, নয়ন বিশ্বাস কমলাপুর থেকে পায়ে হেঁটে টিটিপাড়া এলাকার বাস কাউন্টারের সামনে আসেন। এরপর সেখানে এক ব্যক্তি তার সঙ্গে কথা বলেন। ওই ব্যক্তির দেওয়া পানি খান তিনি। এরপর কমলাপুর স্টেডিয়ামের সামনে থেকে গাজীপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া রাইদা পরিবহনের বাসে ওঠেন।
পরবর্তীতে রাইদা পরিবহন চলাচল করা রুট সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তদন্তকারীরা। তারা জানতে পারেন, ১১ মে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে অসুস্থ অবস্থায় এক ব্যক্তিকে হাতিরঝিল থানার রামপুরা টিভি গেট এলাকায় নামিয়ে দেয় বাসের হেলপার। খবর পেয়ে অচেতন অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৪ মে বিকেলে মারা যান তিনি। পরবর্তীতে নিহতের মরদেহ অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে মর্গে রাখা হয়। এ তথ্য পেয়ে নিহতের ছেলে মর্গে গিয়ে বাবা নয়ন বিশ্বাসের মরদেহ শনাক্ত করেন।
পরবর্তীতে এ ঘটনায় জড়িত অজ্ঞান পার্টি চক্রের সদস্যকে শনাক্তে মাঠে নামেন তদন্তকারীরা। তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে সাভারের আশুলিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে নয়ন বিশ্বাসকে অজ্ঞান করে মোবাইল ফোনসহ সবকিছু হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়, বিশ্বজিৎ কর্মকার ওরফে নূর মোহাম্মদকে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিশ্বজিৎ পুলিশকে জানিয়েছেন, ঘটনার দিন ১১ মে ভোরে টিটিপাড়া এলাকায় অবস্থান করে টার্গেটের অপেক্ষা করছিলেন তিনি। এ সময়ে নয়ন বিশ্বাসকে হেঁটে আসতে দেখে তাকে টার্গেট করেন। এরপর কৌশলে তার সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন বিশ্বজিৎ।
গাজীপুরের উদ্দেশে বাসে ওঠার আগে নয়ন বিশ্বাসকে পানি খেতে দেন তিনি। এরপর তার সঙ্গে বাসে উঠে পড়েন। বাসটি মালিবাগ আবুল হোটেলের সামনে গেলে নয়ন বিশ্বাসের দুটি মোবাইল ফোন ও কাপড়ের ব্যাগ নিয়ে নেমে যান বিশ্বজিৎ। আর অসুস্থ অবস্থায় নয়ন বিশ্বাসকে রামপুরা নামিয়ে দেন বাসের হেলপার।
যেভাবে টার্গেট নির্ধারণ করা হয় হায়াতুল ইসলাম খান বলেন, অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা সমাজের উচ্চবিত্ত বা নিম্নবিত্তদের টার্গেট করে না। তাদের টার্গেট মধ্যবিত্ত। বিশেষ করে যাদের হাতে মোটামুটি দামের মোবাইল ফোন ও টাকা-পয়সা থাকে। এই ধরনের মানুষ, যারা গণপরিবহনে চলাচল করেন। তাদের সঙ্গে ঠিকানা জানা হিসেবে কৌশলে পরিচিত হয়ে সখ্যতা গড়ে তোলেন। এরপর আস্থা অর্জন করে পানি বা অন্য কোনো দ্রব্যের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিলিয়ে খাইয়ে দিয়ে অজ্ঞান করে সব কিছু নিয়ে পালিয়ে যান।
বিশ্বজিতের বিষয়ে মতিঝিল বিভাগের ডিসি বলেন, গ্রেফতার বিশ্বজিৎ কর্মকার ২০ বছর আগে ধর্মান্তরিত হয়ে মুসিলম হয়ে নুর মোহাম্মদ নাম ধারণ করেন। মাদকাসক্ত বিশ্বজিৎ মতিঝিলের মুক্তিযোদ্ধা ক্লাবে ক্লিনার হিসেবে কাজ করতেন।
তিনি ১৪ বছর ধরে মতিঝিল, সায়েদাবাদ ও পল্টন এলাকায় অজ্ঞান করে সব কিছু হাতিয়ে নিতেন। গত সপ্তাহেও অন্তত দুটি অজ্ঞান করার কাজ করেছেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন বিশ্বজিৎ।
তবে তার হিসাব সঠিক নয় দাবি করে উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম খান বলেন, কারণ, গত ১১ মে তিনি আরো একটি ঘটনা ঘটিয়েছেন। বিশ্বজিতের বিরুদ্ধে রাজধানীর মুগদা, সবুজবাগসহ বিভিন্ন থানায় মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। তবে তিনি এর আগে শত শত ঘটনা ঘটিয়েছেন।