নানা সংকট, খুঁড়িয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা

  • হাসান মাহমুদ শাকিল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

চিকিৎসক সংকট, খুঁড়িয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা। ছবি: বার্তা২৪.কম

চিকিৎসক সংকট, খুঁড়িয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা। ছবি: বার্তা২৪.কম

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি এখন নিজেই রোগী হয়ে আছে। ৫০ শয্যার এ হাসপাতালটিতে রয়েছে চিকিৎসক ও সেবিকা (নার্স) সংকট। তাই এখানে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা। এতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা হচ্ছে বঞ্চিত।

এদিকে যে কয়জন চিকিৎসক আছেন তারাও প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতে বেশি সময় দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিজ্ঞাপন

রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ হাসপাতালে টয়লেটের সমস্যা ও বিশুদ্ধ পানির চরম সংকট রয়েছে। এজন্য রোগীদের টয়লেটে যেতে হয় কমপ্লেক্সের বাইরে গিয়ে। আর পানি পান করতে যেতে হয় হাসপাতালের সামনের দোকানে। এতে শিশু, মহিলা ও বৃদ্ধ রোগীদের দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। তবে, রোগীদের অসচেতনতার কারণেই টয়লেটের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ২০০৬ সালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। এরপর থেকে রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকলেও বাড়েনি লোকবল। নয়জন চিকিৎসক ও ছয়জন সেবিকা দিয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে। যেখানে ২১ জন চিকিৎসক পদের মধ্যে ১২টি ও ১৪ জন সেবিকার পদের ৮টিই শূন্য রয়েছে। সুইপারের তিনটি পদে লোক বহাল থাকলেও পুরো হাসপাতাল পরিষ্কার করা তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।

বিজ্ঞাপন

প্রতিদিনই বহির্বিভাগে প্রায় ৩০০ ও জরুরি বিভাগে ৩০-৩৫ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। এছাড়াও ৫০ শয্যার এ হাসপাতালটিতে গড়ে প্রতিমাসে ২০০ থেকে ২৫০ রোগী বিভিন্ন সমস্যায় ভর্তি থাকে। এছাড়াও গত ছয়মাস ধরে গড়ে প্রতিমাসে ২৩টি করে সিজার অপারেশন করা হয়েছে।

চরবংশী গ্রামের এক রোগীর অভিভাবক ছালেহা বেগম জানান, হাসপাতালের ভেতরে টয়লেটের অবস্থা খুবই খারাপ। এটি ব্যবহারের উপযোগী থাকে না। হাসপাতালটির বাইরের অবস্থান দেখে বোঝা না গেলেও ভেতরের অবস্থা খারাপ।

হাসপাতালের সেবার মান নিয়ে উপজেলার চর আবাবিল গ্রামের মো. সুমন জানান, নানা অব্যবস্থাপনা রয়েছে। এছাড়া চিকিৎসকরা হাসপাতালে বেশি সময় দেন না। প্রাইভেট ক্লিনিকের দিকে তাদের বেশি মনোযোগ। এ জন্য সরকারি হাসপাতালে রোগীরা আসলে সঠিকভাবে সেবা পান না। সেবিকাদের দৌরাত্মতো রয়েছেই।

তিনি আরও জানান, সবাইতো সুচিকিৎসা পেতে হাসপাতালে আসেন। চিকিৎসকের অভাবে রোগীরা সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই এখন অধিকাংশ রোগী সরকারি হাসপাতালে আসতে চান না।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. বাহার জানান, দুর্গন্ধযুক্ত গোসলখানা ও টয়লেট ব্যবহার করা উচিত না। তবে এ পরিস্থিতি রোগীদের অসচেতনতার কারণেই সৃষ্টি হয়েছে। তারা ঠিকমতো টয়লেট ব্যবহার করতে পারে না। এছাড়া তিনজন সুইপার দিয়ে পুরো হাসপাতাল পরিষ্কার করা সম্ভব নয়।

রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন জানান, কিছু সংকট থাকলেও সারাদেশের মধ্যে এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ভালো অবস্থানে রয়েছে। সরকারের স্বাস্থ্যখাতের যত কর্মসূচি রয়েছে সবগুলোই এখানে আছে। চিকিৎসক ও সেবিকা সংকটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।