গাইবান্ধায় সংবাদ প্রকাশের জেরে আনন্দ টেলিভিশনের সাংবাদিক মিলন খন্দকারকে জীবনণাশের হুমকি দেওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন গাইবান্ধা প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ। এ ঘটনায় নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে গাইবান্ধা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরীও (জিডি) করেছেন ভুক্তভোগী ওই সাংবাদিক।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকালে জিডির বিষয়টি মোবাইল ফোনে বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর ইসলাম তালুকদার।
এর আগে গত শনিবার গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মাহবুব হোসেন কোটি টাকা ঘুষ নিয়ে এমএসআর সামগ্রী ক্রয়ে উচ্চ দরদাতাকে কার্যাদেশ দেওয়া নিয়ে আনন্দ টিভিতে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রচার করা হয়। পরে ওই রাতেই ঠিকাদার সাহাদৎ হোসেন মোবাইল ফোনে মিলন খন্দকারকে বিভিন্ন ধরণের হুমকি দেন।
মিলন খন্দকারের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে করা জিডিতে উল্লেখ করা হয়, শনিবার আনন্দ টিভিতে বিকাল সাড়ে ৫টার প্রাইম নিউজে, কোটি টাকা ঘুষ নিয়ে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে এমএসআর সামগ্রী ক্রয়ে উচ্চ দরদাতাকে কার্যাদেশ দেওয়ার অভিযোগ তত্ত্বাবধায়ক মাহাবুব হোসেনের বিরুদ্ধে এমন শিরোনামে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রচার হয়।
প্রতিবেদনে গত বছরের ২ জুলাই মেসার্স স্বর্ণা এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী ঠিকাদার সাহাদাৎ হোসেন সুজা গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মাহবুব হোসেনকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ প্রদান করে বলে তুলে ধরা হয়। যা ওই ঠিকাদার ইসলামী ব্যাংক গাইবান্ধা শাখার হিসাব নাম্বার-২০৫০১৮৫০১০০০৬৬৬০০ থেকে একটি চেকের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক মাহবুব হোসেনের নিজ নামীয় সিরাজগঞ্জ জেলার সোনালী ব্যাংকের সোহাগপুর ব্রাঞ্চে জমা প্রদান করেন। ওই টাকা টাকা ঘুষ দিয়ে সাহাদৎ হোসেন ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের এমএসআর সামগ্রী ক্রয়ের উচ্চ দরদাতা হয়েও কার্যাদেশ গ্রহণ করেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া জিডিতে আরও উল্লেখ করা হয়, বিগত ২০২১-২০২২, ২০২২-২০২৩ ও ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে আওয়ামীলীগ সরকারের স্থানীয় সাবেক এমপি মাহাবুব আরা বেগম গিনি ও শাহ সারোয়ার কবিরকে ম্যানেজ করে বিবাদী একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট তৈরি করে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে খাদ্য ও এমএসআর সামগ্রী (ওষুধসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রী) ক্রয়ের উচ্চ দরদাতা হয়ে কার্যাদেশ গ্রহণ করেন। ফলে গত ০৩ বছরে সরকারের ১২ কোটি টাকা লস যায়।
এসবের ধারাবাহিকতায় গত ৮ মার্চ সংবাদ প্রকাশের জেরে একইদিন রাতে ওই ঠিকাদার মোবাইল ফোনে সাংবাদিক মিলন খন্দকারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়।
উল্লেখ্য, হুমকি প্রদানের ঘটনায় পরদিন ৯ মার্চ গাইবান্ধা সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন সাংবাদিক মিলন খন্দকার।