৫ দিনে সহস্রাধিক মৃত্যু, লাখ রোগী শনাক্ত ১০ দিনে
দেশে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস শনাক্তে বা মৃত্যু প্রতিদিনই রেকর্ড ভাঙছে। দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১৬ হাজার ২৩০ জন। যা দেশে একদিনে শনাক্তে রেকর্ড। দেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১২ লাখ ছাড়িয়েছে। গত ১৮ জুলাই শনাক্ত ১১ লাখ ছাড়িয়েছিল। সর্বশেষ এক লাখ রোগী শনাক্ত হয়েছে মাত্র ১০ দিনে।
বুধবার (২৮ জুলাই) সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা সংক্রমণে আরও ২৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে করোনা সংক্রমণে মৃত্যু ২০ হাজার ছাড়িয়েছে। ২৪ জুলাই করোনায় মৃত্যু ১৯ হাজার ছাড়িয়েছিল। সবশেষ এক হাজার মৃত্যু হয়েছে মাত্র পাঁচ দিনে।
কয়েক দিন ধরে দেশে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা বাড়ছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম রোগী শনাক্তের তিন মাস পর ১৮ জুন তা এক লাখ ছাড়িয়ে যায়। এরপর এক মাসের ব্যবধানে ১৮ জুলাই শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ায় দুই লাখে। এর পরের এক লাখ রোগী শনাক্ত হয় ১ মাস ৯ দিনে, ২৬ আগস্ট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছাড়ায় তিন লাখ।
গত বছরের ২৬ অক্টোবর শনাক্ত রোগীর সংখ্যা চার লাখ ছাড়িয়ে যায়। সংক্রমিতের সংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়ায় গত ২০ ডিসেম্বর। শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পাঁচ লাখে পৌঁছাতে সময় লাগে ৫৫ দিন। এরপর ৯৯ দিনে আরও এক লাখ রোগী শনাক্ত হওয়ায় ২৯ মার্চ দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ছয় লাখ ছাড়ায়।
শনাক্তের সংখ্যা ছয় থেকে সাত লাখে পৌঁছাতে সময় লাগে মাত্র ১৬ দিন। শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৪ এপ্রিল সাত লাখ পেরিয়ে যায়। আর রোগীর সংখ্যা সাত থেকে আট লাখে পৌঁছায় গত ৩১ মে, এই লাখ রোগী শনাক্তে সময় লেগেছে ৪৭ দিন। আর রোগী ৮ থেকে ৯ লাখে পৌঁছাতে সময় লাগে ২৯ দিন। রোগী ৯ থেকে ১০ লাখে পৌঁছাতে সময় লাগে ১০ দিন। আর ১০ থেকে ১১ লাখে পৌঁছাতে সময় লাগে ৯ দিন। করোনার ডেল্টা ধরনের দাপটের মধ্যে মাত্র ১০ দিনেই এক লাখ রোগী শনাক্ত হলো।
করোনায় মৃত্যু
দেশে টানা ৪ দিন ধরে দুই শতাধিক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। বুধবার করোনায় প্রাণ হারান ২৩৭ জন। এর আগের দিন করোনায় মৃত্যু হয়েছিল ২৫৮ জনের। যা দেশে একদিনে মৃত্যুতে রেকর্ড।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত ৩১ মার্চ দেশে করোনায় মোট মৃত্যু ৯ হাজার ছাড়িয়েছিল। মৃত্যু ৮ হাজার থেকে ৯ হাজার ছাড়াতে সময় লেগেছিল ৬৭ দিন। ৯ হাজার থেকে মৃত্যু ১০ হাজারে পৌঁছাতে সময় লেগেছিল ১৫ দিন। আর ১০ হাজার থেকে ১১ হাজারে পৌঁছায় মাত্র ১০ দিনে।
এরপর ১১ মে করোনায় মৃত্যু ১২ হাজার ছাড়িয়ে যায়। মৃত্যু ১১ থেকে ১২ হাজার পৌঁছায় ১৬ দিনে। গত ১১ জুন করোনায় মৃত্যু ১৩ হাজার ছাড়ায়। মৃত্যুর সংখ্যা ১২ থেকে ১৩ হাজারে পৌঁছাতে সময় লাগে ৩১ দিন। গত ২৬ জুন করোনায় মৃত্যু ১৪ হাজারে পৌঁছায়। মৃত্যু ১৩ থেকে ১৪ হাজারে পৌঁছাতে সময় লাগে ১৫ দিন। করোনায় মৃত্যু ১৫ হাজার ছাড়িয়েছিল ৪ জুলাই। মৃত্যু ১৪ থেকে ১৫ হাজারে পৌঁছাতে সময় লেগেছিল ৮ দিন। মৃত্যু ১৫ থেকে ১৬ হাজারে পৌঁছাতে সময় লেগেছিল ৫ দিন। মৃত্যু ১৬ থেকে ১৭ হাজারে পৌঁছাতে সময় লাগে ৫ দিন। আর ১৭ থেকে ১৮ হাজারে পৌঁছাতে সময় লাগে ৫ দিন। গত ২৪ জুলাই করোনায় মৃত্যু ১৯ হাজার ছাড়ায়। মৃত্যু ১৯ থেকে ২০ হাজারে পৌঁছাতে সময় লাগে ৪ দিন।
করোনার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়েছে ঈদুল আজহার আগ থেকেই। আর ঈদুল আজহার পর এর প্রবণতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে রোগী দ্রুত বাড়ছে।