পশ্চিমে এক বছরে ৭৪ ট্রেনে পাথর হামলা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে এক বছরের মধ্যে ৭৪টি পাথর হামলার ঘটনা ঘটেছে। ২০২০ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত পশ্চিম রেলের বিভিন্ন রুটে এসব পাথর হামলার ঘটনা ঘটে। এসব হামলায় ক্ষতবিক্ষত হয়েছে ট্রেনের জানালা-দরজার কাঁচ। আহত হয়েছেন ট্রেনের চালক, সহকারী চালক এবং যাত্রী।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্টের কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কর্মকর্তারা বলছেন, লকডাউনের কারণে ট্রেন বন্ধ ছিল। তা না হলে পাথর হামলার সংখ্যা আরও বেশি হতো। খেলার ছলে শিশু-কিশোরেরাই এসব হামলার সঙ্গে জড়িত বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন।

গত ১৫ আগস্ট নীলফামারীর সৈয়দপুরে ট্রেনে ছোঁড়া পাথরের আঘাতে আজমির ইসলাম নামে পাঁচ বছরের এক শিশু চোখ হারাতে বসেছে। এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হলে সৈয়দপুর রেল স্টেশন মাস্টার ময়নুল হোসেন বাদী হয়ে রেলওয়ে থানায় মামলা করেছেন। কিন্তু অন্য ঘটনাগুলোতে মামলা করার নজির কম। যদিও এই হামলার ব্যাপারে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, এ ব্যাপারে ১৮৯০ সালের রেলওয়ে আইনের ১২৭ ধারায় শাস্তির বিধান আছে। চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের জন্য ১০ হাজার টাকা জরিমানার পাশাপাশি ১০ বছর থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের কথা বলা আছে। আর কোন রেলযাত্রী মারা গেলে ৩০২ ধারায় ফাঁসিরও বিধান আছে। পাথর নিক্ষেপকারী অপ্রাপ্ত বয়স্ক হলে সেক্ষেত্রে তাঁর অভিভাবকের শাস্তির বিধান আছে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আইনগত কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।

২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল খুলনা-বেনাপোল রুটের বেনাপোল কমিউটার ট্রেনে দায়িত্ব পালন করছিলেন রেলওয়ের পরিদর্শক বায়েজিদ হোসেন। পাথর নিক্ষেপের পর তিনি গুরুতর আহত হয়েছিলেন। ৪১ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর তাঁর মৃত্যু হয়। অনেক আন্দোলনের পর ২০১৯ সালে রাজশাহী-ঢাকা রুটে চালু হয় বিরতিহীন ট্রেন বনলতা এক্সপ্রেস। এর কিছুদিন পরই ট্রেনটিতে পাথর নিক্ষেপ করে কয়েকটি জানালা চুরমার করা হয়। গত বছরের ডিসেম্বরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী মহানন্দা এক্সপ্রেস ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে ট্রেনে কর্তব্যরত গার্ড নাজমুল ইসলাম সোলেমান গুরুতর আহত হন।

পাথর নিক্ষেপের ফলে এভাবে যাত্রীদের পাশাপাশি ট্রেনের চালকসহ অন্যান্য দায়িত্বরতদেরও জীবন ঝুঁকিতে পড়ে। ২০১৯ সালের ৫ মে রাতে সিরাজগঞ্জের জামতৈল ও মনসুর আলী স্টেশনের মাঝামাঝি স্থানে পদ্মা আন্তঃনগর ট্রেনে পাথর হামলায় জিসান নামে চার বছরের এক শিশু গুরুতর আহত হন। তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। জিসান যখন এই হাসপাতালে ভর্তি হয়, তখন জুঁথি (১২) নামে আরেক শিশু পাথর হামলায় আহত হয়ে ভর্তি ছিল। পশ্চিম রেলের তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক খোন্দকার শহিদুল ইসলাম শিশু দুটিকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে বলেছিলেন, এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু আজও এই পাথর নিক্ষেপকারীদের শনাক্ত করা যায়নি।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে জানিয়েছে, গত বছরের ৮ জুলাই থেকে চলতি বছরের ২২ জুন পর্যন্ত পশ্চিমাঞ্চলে ৭৪টি পাথর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে ৬৩টি ট্রেনের দরজা-জানালার কাঁচ ভেঙেছে। এতে ২০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুজন চালক এবং একজন সহকারী চালকও ছিলেন। এছাড়া দুজন গার্ড এবং একজন সহকারীও আহত হয়েছেন। বাকীরা শিশুসহ নানা বয়সী যাত্রী। পাথর নিক্ষেপের ফলে ট্রেনে এখন যাত্রীরা জানালার পাশে বসতেই ভয় পান।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সারাদেশের ২০ জেলার ৭০টি স্থানকে পাথর নিক্ষেপের অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এরমধ্যে ১৫টি জেলা পড়েছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মধ্যে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর মধ্যে আছে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী, পার্বতীপুর, পঞ্চগড়, সৈয়দপুর,  ডোমার, পাকশী, ঈশ্বরদী বাইপাস, পোড়াদহ জং, মিরপুর, ভেড়ামারা, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, আক্কেলপুর, জয়পুরহাট, খুলনার দৌলতপুর, ফুলতলা, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, দর্শনা হল্ট, আলমডাঙ্গা, লালমনিরহাট, নোয়াপাড়া, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, পাঁচবিবি ও চাটমোটর।

পশ্চিম রেলের চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট শহিদুল ইসলাম বলেন, শিশু-কিশোরেরা ট্রেন যাওয়ার আগে লাইনে কান পেতে শোনে। এতে তাঁরা বুঝতে পারে ট্রেন আসছে। তখন রেললাইন থেকে পাথর নিয়ে তাঁরা প্রস্তুত থাকে। কে কোন বগিতে মারবে, কে কাঁচ ভাঙবে, কে ইঞ্জিনে মারবে- এসব প্রতিযোগিতা করে। এটা তাঁরা খেলা মনে করে। এ জন্য যাত্রী ও রেলের চালক-সহকারীদের জীবন হুমকির মুখে পড়েছে। যেহেতু শিশু-কিশোরেরা এই কাজটি করে, তাই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার চেয়ে সচেতনতায় জোর দেওয়া হচ্ছে।

তিনি জানান, চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ না করার ব্যাপারে সচেতনতা তৈরিতে লিফলেট তৈরি করে বিতরণ করা হয়। রেললাইনের পাশের মসজিদের ইমামদের এসব লিফলেট দেওয়া হয়। তাঁরা জুমার দিন পড়ে শোনান। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নিয়ে কাজ করা হয়। আরএনবি এবং জিআরপি পুলিশও কাজ করে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে সভা করা হয়। পাশাপাশি ভিডিওচিত্রের মাধ্যমে এর কুফল সম্পর্কে শিশুদের অবগত করা হয়।

সিলেটে নৌকা থেকে ২৬৫ বস্তা ভারতীয় চিনি উদ্ধার, আটক ১



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
উদ্ধারকৃত ভারতীয় চিনি।

উদ্ধারকৃত ভারতীয় চিনি।

  • Font increase
  • Font Decrease

সিলেটের গোয়াইনঘাটে পুলিশের অভিযানে চিনি বোঝাই ২টি নৌকা থেকে ২৬৫ বস্তা ভারতীয় চিনিসহ এক চোরাকারবারিকে আটক করা হয়েছে।

শুক্রবার (০৫ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে জাফলং ইউনিয়নের অন্তর্গত উত্তর প্রতাপপুর এলাকা থেকে চিনি উদ্ধার ও তাকে আটক করা হয়। 

আটককৃত আবুল হায়াত (৩০) পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের লুনি হাওর গ্রামের আব্দুল ওয়াহিদের ছেলে।

শুক্রবার রাতে গোয়াইনঘাট পুলিশ জানায়, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশনায় একটি আভিযানিক টিম উপজেলার ২নং পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের উত্তর প্রতাপপুর গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে পলাতক আসামিদের ফেলে যাওয়া ২টি নৌকাসহ ২৬৫ বস্তা ভারতীয় চিনি উদ্ধার এবং আবুল হায়াতকে আটক করা হয়। উদ্ধারকৃত ভারতীয় চিনির মূল্য ১৩ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। 

এদিকে এ ঘটনায় গোয়াইনঘাট থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে আটককৃত আবুল হায়াতকে প্রধান আসামি করে ও ৫ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক অজ্ঞাতনামা আরও ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে গোয়াইনঘাট থানায় মামলা রুজু করে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম পিপিএম।

;

নিরাপত্তাকর্মীকে গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যা, আত্মগোপনে ফ্ল্যাট মালিক মফিদুল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার পূর্ব রাজাবাজার এলাকায় গাড়িচাপা দিয়ে নিরাপত্তাকর্মী মো. ফজলুল হককে (২৫) হত্যার পর গাঁ ঢাকা দিয়েছে ঘাতক গাড়ি চালক ও ফ্ল্যাট মালিক ইঞ্জিনিয়ার মফিদুল ইসলাম (৬৯)।

গত বৃহস্পতিবার (০৪ জুলাই) সকালে এ ঘটনার পর রাতে মফিদুলকে আসামি করে মামলা করেছেন নিহতের স্ত্রী। এরপর শুক্রবার (০৫ জুলাই) পর্যন্ত একাধিক অভিযান চালালেও তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।

পুলিশ বলছে, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গেট ভেঙে ফজলুলকে চাপা দেয় মফিদুল। তবে নিহতের পরিবারের দাবি, কোন কারণে জিদ থেকে বা পরিকল্পনা করে এই হত্যার ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

মামলার এজাহারে নিহতের স্ত্রী শরীফা বেগম দাবি করেন, ঢাকায় সেফ ফোর্স সিকিউরিটি কোম্পানি নামের একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন ফজলুল। এক মাস আগেই এই ভবনে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে নিয়োগ পান। গত বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে তার ডিউটি ছিল। এসময় সকাল সোয়া ৮টার দিকে আসামি মফিদুল গ্যারেজ থেকে বের হওয়ার সময় দ্রুত ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে ফজলুলকে ধাক্কা দিলে গেট ভেঙ্গে রাস্তার উপর ছিটকে পড়ে সে। এসময় মফিদুল তার গাড়িটি ফজলুলের শরীরের উপর উঠিয়ে দেয়। এসময় তার কোমর ভেঙ্গে যায়, কপাল, ডান হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কাটাসহ গুরুতর জখম হয়। এরপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত্যু ঘোষণা করেন। এর মধ্যে গাড়ির মালিক মফিদুল তার গাড়িটি রেখেই পালিয়ে যান।

তার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করে শরিফা বেগম বলেন, আমার দুইটা মেয়ে। বড় মেয়ের বয়স ৫ বছর আর ছোট মেয়ের বয়স ১৬ মাস। আমার মেয়ে দুটো এতিম হয়ে গেলো। আমি এখন এদের নিয়ে কীভাবে থাকবো। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই।

নিহতের বোন মিনারা বেগম বলেন, ঘটনার পর পুরো বিষয়টি ম্যানেজের চেষ্টা করছে রাজাবাজারের স্থানীয় বড় ভাই পরিচয় দেওয়া চুন্নু ও শাহজাহান নামে দুই লোক। কয়েক দফায় কাউন্সিলরের অফিসে তাদের বুঝানো হয়েছে মীমাংসার জন্য। 

তিনি বলেন, আমাদের সাথে মীমাংসার কথা বলে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

এদিকে মফিদুল ইসলামের গাড়ির চালক বলছেন, গাড়ির ব্রেকপ্যাড ক্ষয় হয়ে গিয়েছিল। স্যার সেটা চেক করতে গাড়িতে উঠে পা দিয়ে একসেলেটর চাপ দেন, এরপর গাড়ি চলতে শুরু করলে তিনি হয়তো থামাতে গিয়ে ব্রেকে পা না দিয়ে ভুলে একসেলেটরে আরও জোরে চাপ দেন। এতে গাড়ি মুহূর্তের মধ্যে গেট ভেঙে বাইরে গিয়ে ধাক্কা খায়।

এ ঘটনায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গেট ভেঙে ফজলুলকে চাপা দেয় আসামি মফিদুল। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক। আমরা তাকে গ্রেফতারের জন্য কয়েক দফা অভিযান চালিয়েছি। খুব দ্রুতই আসামিকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

;

নরসিংদীতে নিখোঁজের একদিন পর শিশুর মরদেহ উদ্ধার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নরসিংদী
নিহত শিশু আয়েশা/ছবি: সংগৃহীত

নিহত শিশু আয়েশা/ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নরসিংদীর মনোহরদীতে আয়েশা আক্তার নামে দেড় বছরের এক শিশু নিখোঁজের একদিনপর ধান ক্ষেত থেকে তার মরদেহ পাওয়া গেছে। 

শুক্রবার (০৫ জুলাই) বেলা এগারটার দিকে মনোহরদী পৌরসভার হাররদীয়া এলাকায় ধান ক্ষেত থেকে শিশুর মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। শিশু আয়েশা মনোহরদী পৌরসভার হাররদিয়া গ্রামের আসাদ মিয়ার মেয়ে। 

শিশুর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (০৪ জুলাই) সকাল ৯টার পর থেকে নিখোঁজ হয় শিশু আয়েশা। অনেক খোঁজাখুঁজি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবিসহ পোস্ট দেওয়ার পরও নিহত আয়েশাকে না পেয়ে চিন্তায় পড়ে যায় পরিবারের লোকজন। 

পরে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে বাড়ির পাশে বৃষ্টির পানি জমে থাকা ধানের জমিতে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে প্রতিবেশি। পরে শিশুটির পরিবারের লোকজন এসে মরদেহটি শনাক্ত করে এবং মনোহরদী থানায় খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শিশুর মরদেহটি উদ্ধার করে। 

মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূঁইয়া বার্তা২৪.কমকে জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে। শিশুর পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্থান্তর করা হয়েছে।

;

সাপের খামারে রিমালের তাণ্ডব, ২৫০ সাপের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, পটুয়াখালী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে পুরো পটুয়াখালী। বাদ যায়নি বাংলাদেশ স্নেক`স ভেনাম (Bangladesh snakes venom) নামের দেশের প্রথম বিষধর সাপের খামারটিও। রিমালের তাণ্ডবে খামারের প্রায় ২৫০টি বিষধর সাপের মৃত্যু হয়েছে।

তবে খামারটির সরকারি অনুমোদন না থাকায় বনবিভাগ তথা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার সহযোগিতার সুযোগ নেই। আব্দুল রাজ্জাক বিশ্বাস নামের এক তরুণ দেশসেরা উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ২০০০ সালে পটুয়াখালী জেলার সদর উপজেলার মাদারবুনিয়া ইউনিয়নের নন্দিপাড়া গ্রামে তার নিজ বাড়ির পাশে একটি কিং কোবরা সাপ এবং ২৪টি ডিম নিয়ে গড়ে তোলেন দেশের প্রথম বিষধর সাপের খামার। পরিকল্পনা ছিল সরকারি অনুমোদন পেলে সাপের বিষ সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে হবেন দেশ সেরা উদ্যোক্তা। কিন্তু সেই রাজ্জাক বিশ্বাসের স্বপ্ন এখন অধরাই রয়ে গেল।

বর্তমানে দেশীয় নামে পরিচিত কিংকোবরা, পাইথন, পঙ্খীরাজ, কালকুলিন, সাদা গোমা, কেউটে, দাঁড়াশ, বাসুয়া, পদ্ম গোমা, বিষঝুড়ি ও গোঁড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় দের শতাধিক বিষধর সাপ রয়েছে রাজ্জাক বিশ্বাসের খামারে।

নন্দিপাড়া গ্রামের মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, রাজ্জাক বিশ্বাস ভাই ২৩ থেকে ২৪ বছর পর্যন্ত এর সাপের খামার লইয়া কষ্ট করতে আছে। এই বইন্নায় আমাগো এলাকায় কোমর পর্যন্ত পানি উঠছিল, আর এই পানিতে ভাইর কয়েক'শ সাপ মারা গেছে। ভাই তার বাপ মায় মরণেও এতো কষ্ট পায় নাই, এই সাপগুলা মরণের কারণে যে কষ্ট পাইছে।

একই এলাকার হায়দার বিশ্বাস বলেন, রাজ্জাক ভাই এই সাপের খামার কইরা কইরা নিজের আর বাপের টাহা পয়সা সব শেষ করছে। এহন বাপের থুইয়া যাওয়া জমি বন্ধক আর বেইচা চলতেছে। সরকার যদি এই মুহূর্তে তারে একটু সাহায্য করতো তাহলে হয়তো রাজ্জাক বিশ্বাস আবারও ঘুইরা দাড়াইতে পারতো।

এ বিষয়ে রাজ্জাক বিশ্বাস বলেন, অনেক স্বপ্ন নিয়ে এই সাপের খামারটি এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছি৷ সাপের খামারটি টিকিয়ে রাখতে গিয়ে আজ আমি নিঃস্ব। কিছুদিন আগে আমার একমাত্র ছেলেটা মারা যায়, ছেলের মৃত্যু কথা শুনে আমার আব্বাও মৃত্যুবরণ করলেন। ছেলে আর বাবার মৃত্যুর এক মাস পর আমার মা মারা গেলেন! স্বজনদের হারানো শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই রিমালের কারণে পানি উঠে আমার খামারের প্রায় আড়াইশ সাপ মরে যায়। আমি শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছি, কিছুই করতে পারি নাই! 

সাপের খামারের ২৫০ সাপের মৃত্যুর বিষয়ে পটুয়াখালী উপকূলীয় বনবিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, 'যেহেতু রাজ্জাক বিশ্বাস অবৈধ ভাবে সাপের খামারটি পরিচালনা করছে, তাই তাকে সরকারি সহযোগিতার কোনো সুযোগ নেই। গত বছরের ১১ এপ্রিল বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট ও উপকূলীয় বন বিভাগের কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত হয়ে খামারটি বন্ধ করে সাপ বনে ছেড়ে দেওয়ার জন্য একটি নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। যেহেতু খামারটি এখনও চলমান আছে তাই এটিকে বন্ধের জন্য আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো৷

;