'শুধু শিক্ষার্থী নয়, অনেক শিক্ষকও আর ফিরবেন না স্কুলে'
শিক্ষার্থীদের বেতনের মাধ্যমেই মেটাতে হয় কিন্ডারগার্টেনের বাড়িভাড়া, শিক্ষকদের বেতনসহ নানা খরচ। কিন্তু করোনাকালে বাড়িভাড়া দিতে না পারায় অনেক কিন্ডারগার্টেন এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। শুধু স্কুলই নয়, খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না শিক্ষার্থীদেরও। অনেক শিক্ষার্থীকে আগের বাসার ঠিকানায় পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের অভিভাবকরাও করছেন না যোগাযোগ।
কিন্ডারগার্টেনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ স্কুল খুললেও তাঁদের শিক্ষার্থীদের খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে। কারণ বছরের শেষ সময়ে কেউ স্কুলে আসবে না। অনেক অভিভাবকই মনে করবেন, স্কুলে আসতে হলে হয়তো ভর্তি ফিসহ পুরো বছরেরই বেতন দিতে হবে। এ কথা চিন্তা করে তাঁরা তাঁদের বাচ্চাদের কিন্ডারগার্টেনে পাঠাবেন না।
রাজধানীর মাটিকাটায় স্কাইলার্ক মডেল স্কুলের অধ্যক্ষ মো. সাফায়েত হোসেন বলেন, শুধু শিক্ষার্থী নয়, অনেক শিক্ষকও আর ফিরবেন না স্কুলে। আমার দুজন শিক্ষক ঝালকাঠির রুমানা বেগম ও দিনাজপুরের শরীফুল ইসলাম বাড়ি চলে গেছেন। তাঁদের আর শিক্ষকতায় ফেরার ইচ্ছা নেই। আমরা কোনোমতে ধারদেনা করে স্কুলটি টিকিয়ে রেখেছি। বাড়িভাড়া দিতে গিয়ে যে পরিমাণ ঋণের বোঝা মাথায় নিয়েছি, তা কত বছরে শোধ হবে জানি না। কিন্তু শিক্ষকতা পেশা ছাড়া অন্য কোনো কাজ তো করিনি। তাই এই পেশা ছাড়তে পারছি না।
ওই স্কুলের শিক্ষক মামুনুর রশীদ বলেন, পরিবার গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছি। দেড় বছর ধরে দোকানের কর্মচারীসহ নানা ধরনের কাজ করছি। আর রাতের বেলায় আমাদের স্কুলে থাকার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তাই থাকতে পারছি। যদি স্কুল খোলে, তাহলে আবার শিক্ষকতায় ফিরে আসব।
জানা যায়, ছোটখাটো কিন্ডারগার্টেনে নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তানরাই বেশি পড়ে। করোনার এই দুঃসময়ে দারিদ্র্য বেড়ে যাওয়ায় অনেক অভিভাবকই রাজধানী ছেড়েছেন। এ পরিস্থিতি বিবেচনা করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে টিসি (ট্রান্সফার সার্টিফিকেট) ছাড়াই ভর্তির সার্কুলার জারি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।