নার্স সেজে নবজাতক চুরির চেষ্টা, নারী আটক
লক্ষ্মীপুরে নার্স সেজে হাসপাতাল থেকে তিন দিন বয়সী নবজাতক শিশুকে চুরি করে পালানোর সময় রিমা আক্তার (২১) নামের এক নারীকে হাতেনাতে আটক করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে ওই নারীকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
রবিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সাড়ে ১১ টার দিকে লক্ষ্মীপুর শহরস্থ নোভা ট্রমা সেন্টার এন্ড জেনারেল হাসপাতালে ঘটনাটি ঘটে।
দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর থানা পুলিশ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানায় আটককৃত নারীর বাড়ি একই উপজেলার পোদ্দারবাজার এলাকায়। সে ওই এলাকার এক প্রবাসীর স্ত্রী। শিশু চুরি চেষ্টার এ ঘটনায় শিশুটির স্বজনদের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। একই সাথে হাসপাতালের রোগী সাধারনসহ স্থানীয়দের মাঝে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার পশ্চিম লক্ষ্মীপুর গ্রামের ব্যাবসায়ী মোঃ সুমনের সন্তান সম্ভবা স্ত্রী সাবরিনা বেগমকে শুক্রবার হাসপাতালটিতে ভর্তি করা হয়। একইদিন সেখানে সিজারের মাধ্যমে তার একটি পুত্র সন্তান প্রসব হয়। এরপর মা ও শিশুটিকে হাসপাতালের ২১৫ নম্বর কেবিনে পর্যবেক্ষণের জন্য রাখা হয়।
রবিবার ঘটনার সময় কেবিনে তাদের স্বজনদের উপস্থিতিতে রিমা নামের ওই নারী নার্সদের অ্যাপ্রনের মতো একটি অ্যাপ্রন পরে সেখানে প্রবেশ করে। এসময় সে নিজেকে হাসপাতালের কর্মরত নার্স পরিচয় দিয়ে জানায়, শিশুটিকে জরুরী ভিত্তিতে নীচে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাকে ডিউটি ডাক্তার পাঠিয়েছেন। তার কথামত স্বজনরা শিশুটিকে তার কাছে দিয়ে দেয়। পরপরই পেছন দিয়ে শিশুর নানী কেবিন থেকে হাসপাতালের নীচ তলায় রওয়ানা হয়। নীচে এসে দেখতে পায় নার্স রূপী ওই নারী হাসপাতালের সীমানা পেরিয়ে যেতে দ্রুত পায়ে হেঁটে চলছে। তখনই সন্দেহ নিয়ে তিনি চিৎকার দেন। তার চিৎকারে তাৎক্ষনিক হাসপাতালের লোকজন ছুটে গিয়ে শিশুসহ ওই নারীকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যবেক্ষন করে প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পায়। পরে ওই নারীকে থানা হেফাজতে নিয়ে যায় পুলিশ।
নোভা ট্রমা সেন্টার এন্ড জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক আব্দুল আজিজ বাবুল জানান, শিশু চুরি চেষ্টার ঘটনাটি অভিনব কায়দার। হাসপাতালের সারাদিনের কার্যক্রম প্রতিস্থাপিত সিসি ক্যামেরায় রেকর্ড থাকে। যার ফলে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়ে কারও পার পাওয়ার কোন সুযোগ নাই। এ ঘটনাতেও সিসি ক্যামেরায় ধারন হওয়া ফুটেজের সাহায্য নিয়ে অপরাধী নারীকে আটক করা সহজ হয়েছে।
শিশুটির পিতা মোঃ সুমন জানান, বাচ্চা চুরি চেষ্টার এ ঘটনায় আতংকিত হয়ে পড়ি। পরে বাচ্চাকে ফেরত পেয়ে স্বস্তি পাই।
সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ জসিম উদ্দিন জানান, ঠিক কি কারনে শিশুটিকে চুরির চেষ্টা করা হয়েছে তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার প্রকৃত রহস্য জানা যাবে। আটককৃত নারীর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যাবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।