চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত এক কারাবন্দিকে ছাড়িয়ে নিতে দিনভর অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বৈষম্যহীন কারামুক্তি আন্দোলনের সমন্বয়কসহ ওই বন্দির স্বজনরা।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তারা এই কর্মসূচি পালন করে। এ সময় তারা কারাগারের জেল সুপার ও জেলারের পদত্যাগ দাবি করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে- ২০১৭ সালের ১২ মে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার গুঠইল গ্রামের তাইফুর রহমানের ছেলে হারুন অর রশিদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অভিযানে তার কাছ থেকে সাড়ে ৪কেজি বিস্ফোরক দ্রব্য ও ২২টি জঙ্গী বই উদ্ধারের দাবি করে আইনশৃঙ্খলা বাহীনি। পরবর্তীতে হারুনসহ ৭জনকে আসামি করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে (জঙ্গী মামলা) দেওয়া হয়। চলতি বছরের ১৭ ডিসেম্বর জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন উচ্চ আদালত। গত ৪দিন ধরে হারুন অর রশিদকে কারাগার থেকে মুক্তি না দেওয়ায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।
রোববার সকাল থেকে বৈষম্যবিহীন কারামুক্তি আন্দোলন ও হারুন অর রশিদের স্বজনরা জেলা কারাগারের মুল ফটকের সামনে অবস্থান করেন। এ সময় তারা হারুনুরের মুক্তির দাবি জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন। এছাড়া কারাগারের জেলা সুপারকে আওয়ামীলীগের দোসর উল্লেখ করে স্লোগানের পাশাপাশি তার পদত্যাগের দাবি জানানো হয়। সবশেষ আসরের নামাজ আদায় করে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দিয়ে অবস্থান কর্মসূচি শেষ করেন তারা।
কারাবন্দী হারুন অর রশিদের বোন রহিমা খাতুন রুমা বলেন, আমার ভাইকে অন্যায় করে জেলে ঢুকানো হয়েছে। আইনের সব ফাঁকফোকর বন্ধ করে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে এসেছি। তারপরেও আমার ভাইকে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে আটকে রাখেন কারাগারের জেলার ও জেল সুপার।
বৈষম্যবিহীন কারামুক্তি আন্দোলনের রাজশাহী বিভাগীয় সমন্নয়ক মির ফরহাদ বলেন, আওয়ামীলীগের দোসর হওয়ায় কারা কর্তৃপক্ষ হারুনকে জামিনে মুক্তি দিচ্ছে না। আমরা এসবের প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
ওই সংগঠনটির চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক মুহাম্মদ মামুনুর রশিদ বলেন, যারা ইসলামের পক্ষে থেকে কথা বলে তাদের গ্রেপ্তার করে জেলে ভরা হয়েছে। এদেরই একজন হারুন অর রশিদ। তথাকথিত জঙ্গী মামলা দিয়ে তাকে অন্যায় ভাবে জেলে রাখা হয়েছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে তাকে আটকে রাখা হয়েছে।
রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত হারুন অর রশিদকে জামিনে মুক্ত করা হয়নি। এরই প্রতিবাদ সোমবার সকালে জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপিসহ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দেন বৈষম্যবিহীন কারামুক্তি আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।
আবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিহীন কারামুক্তি আন্দোলনের রাজশাহী জেলার সমন্বয়ক ওমর ফারুক, জহরুল ইসলামসহ অন্যরা।
এবিষয়ে কথা বলতে একাধিকবার জেল সুপার মো. শরিফুল আলম ও জেলার মো. জাকির হোসেনকে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তারা কেউই ফোন রিসিভ করেননি। এমনকি সরাসরি কথা বলতে কারাগার ফটকে গেলেও কথা বলতে রাজি হননি তারা।