নরসিংদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান, নরসিংদীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, সদর উপজেলার ইউএনও এবং অধ্যক্ষসহ ১৪ জন কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (৫ জানুয়ারি) দুপুর ১২ টা থেকে তারা অবরুদ্ধ রয়েছেন।
অবরুদ্ধরা হলেন- তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু আহমদ ছিদ্দীকী, (এনডিসি), সদস্য (পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন) (অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, যুগ্ম সচিব ও পরিচালক (প্রশাসন) (অ:দা:) আকরামুজ্জামান, প্রধান হিসাব রক্ষক এবং প্রকল্প পরিচালক (অ:দা:) সুকুমার চন্দ্র সাহা, প্রকল্প পরিচালক (অ:দা:), মো. আইয়ুব আলী, ব্যবস্থাপক (অপারেশন) মো. মনজুরুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক (রক্ষণাবেক্ষণ) মো. সাইফুল হক, নরসিংদীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ফারজানা আলম,নরসিংদী সদর উপজেলা নির্বাহী করমকর্তা আসমা জাহান সরকার, নরসিংদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ মাহবুবুল হকসহ ১৪ জন।
শিক্ষার্থীদের দাবি তাঁত বোর্ডের অধীন থেকে বস্ত্র অধিদফতরের আওতায় তাদেরকে কলেজ স্থানান্তরিত করার জন্য দীর্ঘদিন যাবৎ আন্দোলন করে আসছে। এরই অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা বেশ কয়েকবার ঢাকায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে সভা সমাবেশ ও মানববন্ধন করে। ফলশ্রুতিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাদের দাবি বাস্তবায়ন করার জন্য একাধিকবার আশ্বাস দিয়েও তা পূরণ না হযওয়ায় আজ তারা এই কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে।
অবরুদ্ধ হওয়া কর্মকর্তারা জানান, শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ ও কলেজের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানকল্পে একটি সভা করতে কলেজে আসে। সভা করার লক্ষ্যে সবাই একটি রুমে মিটিং করা অবস্থায় শিক্ষার্থীরা এক দফা দাবিতে অবরুদ্ধ করে রাখে।
শিক্ষার্থীরা জানান, এখানে ভর্তি হওয়ার পর টেক্সটাইল কলেজের নিয়ম অনুযায়ী যেসব শিক্ষককে দিয়ে ক্লাস করানো করার কথা তা না করে ডিপ্লোমা শিক্ষকদের দিয়ে ক্লাস পরিচালনা করছেন। এছাড়া বিভিন্ন অজুহাতে দফায় দফায় তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে যাচ্ছে।
তারা আরও জানায়, এই কলেজটি দেশের আরও ৯ টি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ন্যায় পরিচালনা করতে হবে। কিন্তু অদৃশ্য কারণে তা করছে না কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে জানায়, এখানে বিএসসি কোর্সে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং শাখায় ৩২৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি রয়েছে। এই শিক্ষার্থীরা এখানে এসে কিছুই শিখতে পারছেনা। এখানকার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের অধ্যক্ষ মাহবুবুল হক অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক বিশেষ সুবিধা পাওয়ায় তার অধিনস্ত জুনিয়র শিক্ষকদের দিয়ে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের পাঠদান পরিচালনা করছেন।
এই সুবিধা পাওয়ায় তিনি এখানকার শিক্ষার্থীদের দাবি সত্ত্বেও অধ্যক্ষ কলেজটিকে বস্র অধিদফতরে দিতে নারাজ।
যার কারনে সর্বশেষ এক দফা দাবিতে এসব কর্মকর্তাদের অবরোদ্ধ করে রাখা হয়। শিক্ষার্থীদের দাবি পুরন না হওয়া পর্যন্ত তাদের অবরোদ্ধ করে রাখা হবে।
তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু আহমদ ছিদ্দীকী (এনডিসি) বলেন, শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধান করতে কলেজের হলরুম সভায় মিলিত হলে শিক্ষার্থীদের এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে অবরুদ্ধ করা হয়। ঘটনার খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের দাবি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানোর আশ্বাস দেন। কিন্তু শিক্ষার্থীদের দাবি পুরন না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
বর্তমানে সেনা বাহিনীর উপস্থিততে আলোচনা চলছে।