বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস আজ
আজ ১০ অক্টোবর বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হচ্ছে। এবারে দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে 'অসম বিশ্বে মানসিক স্বাস্থ্য'। ১৯৯২ সাল থেকে পৃথিবীব্যাপী বিশ্বি মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন হয়ে আসছে।
'বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস ২০২১' উদযাপনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে দিবসটি উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেছেন রাষ্ট্রপতি উপলক্ষে মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দিবসটি উপলক্ষে দেওয়া পৃথক বাণীতে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর আহ্বান জানান দুইজনই।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেছেন, স্বাস্থ্যসেবা প্রতিটি মানুষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক অধিকার। মানসিক স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়ন ছাড়া সামগ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পূর্ণাঙ্গ উন্নয়ন কল্পনা করা যায় না। তাই মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি যথাযথ গুরুত্ব দেয়া এখন সময়ের দাবি।
তিনি বলেন, মানসিক রোগ নিয়ে এদেশের মানুষের মধ্যে অনেক অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কার ও ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। তাই চিকিৎসার পাশাপাশি মানসিক রোগীকে পারিবারিক ও সামাজিক সমর্থন প্রদান খুবই জরুরি। একই সাথে ঝাড়ফুঁক বা অবৈজ্ঞানিক চিকিৎসা পদ্ধতি পরিহারে জনগণের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, মানসিক স্বাস্থ্যসেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সরকারের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমানে করোনা মহামারির এই বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে জনসাধারণের মানসিক স্বাস্থ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আক্রান্ত ব্যক্তি ছাড়াও পরিবারের সদস্য, সমাজের নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের মানসিক স্বাস্থ্য হুমকির সম্মুখীন। এই পরিস্থিতিতে মানসিক স্বাস্থ্যসেবার পরিধি আরও বিস্তৃত করতে হবে।
তিনি বলেন, বিশ্ব সভ্যতা বিকশিত হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিস্তর বৈষম্য ও নানাবিধ অসমতা রয়ে গেছে দেশে দেশে। এ অসমতা অর্থনৈতিক, সামাজিক এমনকি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও। স্বাস্থ্যের দিকে যদি তাকাই তাহলে মানসিক স্বাস্থ্য আরও বেশি উপেক্ষিত। অথচ সুখী, সমৃদ্ধ, বৈষম্যহীন মানবিক বিশ্ব গঠনে শারীরিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও নজর দেওয়া প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার মানসিক স্বাস্থ্যের এই প্রয়োজনীয়তা যথাযথভাবে অনুধাবন করে। এজন্য আমাদের সরকার ২০০১ সালে ঢাকার শেরে বাংলা নগরে প্রতিষ্ঠা করে ‘জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট’। সবার জন্য মানসিক স্বাস্থ্য বাস্তবায়নে এটি একটি মাইলফলক।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০৪১ সালের আগেই উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে- এ লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।
বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে পালন করা হবে নানা কর্মসূচি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ নানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও নানা কর্মসূচি পালন করা হবে। রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
বিশেষ ওয়েবিনার আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ওয়েবিনারটি ২৯ ও ৩০ অক্টোবর এবং ৫ নভেম্বরসহ মোট চারদিন সময়ে আয়োজন করা হচ্ছে এবার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগ, বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটি এবং ন্যাশনাল ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টার, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে এ দিবসটি পালন করা হবে।
এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতাল ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান আলোচনা সভাসহ নানা সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করবে।