কটিয়াদীতে বনের বানর এখন শিকলবন্দী
এক সময় কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে বানরের বিচরণ ছিল। কিন্তু এখন একেবারেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে বানর। বনায়ন না থাকা ও অনুকূল পরিবেশ, খাদ্যের অভাবে হারিয়ে গেছে বানর। এখন যাও কিছু রয়েছে তা শুধু পালিত। বিনোদন ও বানর খেলা দেখিয়ে মানুষকে আনন্দ দেওয়া হয়। একসময় যে বানর ছিল গাছগাছালিতে। কালের বিবর্তনে আজ হাতেগোনা কিছু বানর আছে তাও শিকলবন্দী বা খাঁচার মধ্যে।
সম্প্রতি কিছু বানর দেখা যায়, তাও খেলা দেখিয়ে মানুষকে আনন্দ বিনোদন দেওয়ার জন্য। বিভিন্ন মেলা ও অনুষ্ঠানে এসব বানর নিয়ে বানর খেলা দেখানো হয়। ছোট ছেলে মেয়েরা বানর খেলা দেখে অট্টহাসিতে মেতে উঠে। করতালি দিয়ে অভিবাদন জানায়। কেউ কেউ কলা রুটি মুড়ি দেয় বানরকে খাওয়ার জন্য। এভাবেই কিছু টিকে আছে।
জানা যায়, কটিয়াদী বাজারে একসময় প্রচুর বানর দেখতে পাওয়া যেত। বাজারের ভিতর গাছে এবং পাটের গোডাউনের উপরে এসব দেখতে পাওয়া যেত। বাজারে বিশাল মহামায়া বটগাছে ছিল বানরের অভয়ারণ্য।
পাটের বাজারের জন্য বিখ্যাত ছিল কটিয়াদী বাজার। আড়িয়াল খাঁ নদীর পাড়েই বাজরটি। একসময় লঞ্চ, নৌকা, জাহাজ ভীড়ত ঘাটে। এছাড়াও সড়ক পথে ট্রাকে আসত পাট। কথিত আছে, নৌকা, লঞ্চ ও পাটের ট্রাকের উপর বসে বিভিন্ন স্থান থেকে বানর চলে আসত। পরে বাজার থেকে আর ফিরত যেত না। ব্যাবসায়ীরা বিভিন্ন খাবার ছিটিয়ে দিত। এভাবেই প্রচুর বানরের আবাসস্থল হয়ে উঠেছিল।
স্থানীয় প্রবীনদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সংগ্রামের আগে প্রচুর বানর ছিল। বিভিন্ন স্থান থেকে বানর চলে আসত। ধীরে ধীরে বানরের অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছিল। বাজারে ভিতরের গাছপালা কেটে ফেলা। পাকা স্থাপনা বৃদ্ধি, খাবারের অভাব, প্রকৃতি অনুকূলে না থাকার ফলে হারিয়ে গেছে বানর। এখন সবকিছু অতীত হয়ে আছে৷ নতুন প্রজন্মের কাছে কেবলই ইতিহাস।
কটিয়াদীর পাশ্ববর্তী মনোহরদীর রামপুর গ্রামে এখনো বানরের বিচরণ রয়েছে। সেখানে প্রচুর বানর রয়েছে। খাদ্য অভাবে সেখানেও কষ্টে আছে বানর।