মওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকী আজ
আজ ১৭ নভেম্বর আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৭৬ সালের এইদিনে ঢাকার পিজি হাসপাতালে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। পরে টাঙ্গাইলের সন্তোষে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।
এ উপলক্ষে ঢাকা ও টাঙ্গাইলের সন্তোষে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন, মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এ উপলক্ষে পৃথক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে টাঙ্গাইলের সন্তোষে তার মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনা সভা এবং দোয়া মাহফিল।
১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের ধানগড়া গ্রামে মওলানা ভাসানীর জন্ম। সিরাজগঞ্জে জন্ম হলেও মওলানা ভাসানী তার জীবনের বড় অংশ কেটেছে টাঙ্গাইলের সন্তোষে। তিনি কৈশোর-যৌবন থেকে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। দীর্ঘদিন তিনি তৎকালীন বাংলা-আসাম প্রদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি ছিলেন।
মওলানা ভাসানী অধিকার বঞ্চিত অবহেলিত মেহনতি মানুষের অধিকার ও স্বার্থর ক্ষায় আজীবন নিরবচ্ছিন্নভাবে সংগ্রাম করে গেছেন। জাতীয় সংকটে জনগণের পাশে থেকে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতেন তিনি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে তার আদর্শিক ঐক্য ও রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠতা ছিল তার। বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন মওলানা ভাসানী।
মওলানা ভাসানী ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট গঠনকারী প্রধান নেতাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। তিনি ১৯৬৪, ১৯৬৫, ১৯৬৮ সালের আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে মওলানা ভাসানী ভারতে চলে যান এবং প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টামণ্ডলীর সভাপতি হন। ১৯৭২ সালের ২ এপ্রিল ঢাকায় পল্টনের জনসভায় চোরাচালানের বিরুদ্ধে আপসহীন মনোভাব ব্যক্ত করেন। ১৯৭৬ সালের জানুয়ারিতে ভারত গঙ্গার পানি একতরফাভাবে প্রত্যাহার এবং মরণফাঁদ ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের প্রতিবাদে সে বছরের ১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা মিছিলের নেতৃত্ব দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেন।