খালেদা জিয়া কোথায় মুক্তিযুদ্ধ করছেন? প্রশ্ন মায়ার 

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া

মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা, দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ক্র্যাক প্লাটুনের সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।  

তিনি বলেন,  এ বিষয়টি শোনার আগে তার মৃত্যু হল না কেন? এই ৯ মাসে খালেদা জিয়া কোথায় মুক্তিযুদ্ধ করেছেন? আজকে মুক্তিযোদ্ধারা সেটা জানতে চায়।এসময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে মিথ্যাবাদী বলেও আখ্যায়িত করেন আওয়ামী লীগের এই কেন্দ্রীয় নেতা।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর)  রাজধানীর  মহানগর নাট্যমঞ্চে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আয়োজিত  স্বাধীনতা ও বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে  তিনি এমন মন্তব্য করেন।

অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় বসবাসরত এবং করপোরেশনের আওতাভুক্ত এলাকা থেকে প্রায় পাঁচ শত মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলনকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রায়াত মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্যদের এই সংবর্ধনা প্রদান করা হয় । 

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দক্ষিণ সিটির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। অনুষ্ঠানে প্রধান ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাদের  উদ্দেশ্যে মায়া বলেন, আমরা যে এখানে মুক্তিযোদ্ধারা এসেছি আমাদের জন্ম তারিখ কয়টা। এ সময় খালেদা জিয়ার একাধিক জন্মতারিখ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মায়া।

তিনি বলেন, তিন চারদিন আগে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাহেব দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা খালেদা জিয়া। এখন টিভিতে খবর দেখলাম তখন আল্লাহর কাছে বললাম হায় আল্লাহ, এই কথাটা শোনার আগে আমার মৃত্যু হল না কেন! প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ৫০ বছরে খালেদা জিয়া কোথাও বলছেন যে তিনি মুক্তিযোদ্ধা? বিএনপি নেতারা একেক সময় একেক কথা বলে দেশকে বিভ্রান্ত করে।  

মুক্তিযুদ্ধের সময় ক্র্যাক প্লাটুনের সদস্য মায়া বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় খালেদা জিয়া ছিলেন ক্যান্টনমেন্টে। আমার বক্তৃতায় অনেকবার বলেছি, খালেদা জিয়াকে আমি নিতে এসেছিলাম, আমার বন্ধু শহীদ জুয়েলসহ আরো দুইজন। তখন গভীর রাত ছিল। কথা ছিল, আমাদের সঙ্গে তিনি যাবেন ওইপার (সীমান্তের ওপারে)। পরেরদিন গিয়ে দেখলাম, তিনি চলে গেছেন ক্যান্টনমেন্টে। দীর্ঘ নয় মাস ক্যান্টনমেন্টে ছিলেন।

মির্জা ফখরুলকে মিথ্যাবাদী আখ্যাও দেন  মায়া। বলেন, আমাদের আজকে শপথ নিতে হবে ইতিহাস যারা বিকৃত করে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই করতে হবে।        

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, ঢাকা দক্ষিণ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির। অনুষ্ঠানে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকার সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য এড. কামরুল ইসলাম, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, মনিরুল ইসলাম মনু, কাজী ফিরোজ রশীদ, হাজী মোহাম্মদ সেলিম, রাশেদ খান মেনন এবং সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য জিন্নাতুল বাকিয়া প্রমুখ। 

পবিত্র ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠ,জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং মুক্তিযুদ্ধের  শহীদদের স্বরণে এক মিনিট নিরবতা পালনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুরু হয়। এরপর মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন এবং কবিতা আবৃত্তি করা হয়। সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানের পর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে শিল্পী বৃন্দ, কণ্ঠশিল্পী রফিকুল ইসলাম ও দিনাত জাহান মুন্নী সঙ্গীত পরিবেশনে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।