আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৪২তম সমাবেশ আজ
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আগামী শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ছুটির দিন হওয়ায় এ বছর ৪২তম জাতীয় সমাবেশ প্যারেড অনুষ্ঠিত হবে আজ বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি)। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশনে একযোগে সরাসরি দেখানো হবে।
আনসার ভিডিপির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সমাবেশ প্যারেড অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোঃ আসাদুজ্জামান খান কামাল। আরো উপস্থিত থাকবেন সিনিয়র স্বরাষ্ট্র সচিব মোঃ আখতার হোসেন এবং আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মোঃ মিজানুর রহমান শামীম।
পৃথক বাণীতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধামন্ত্রী বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ৪২তম জাতীয় সমাবেশ উপলক্ষে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আনসার সদস্যদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রায় ৬১ লাখ সদস্য দেশের সার্বিক আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। সারা দেশেই অর্থনীতির চালিকাশক্তি কলকারখানাসহ বিভিন্ন সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা বিধানে আনসার সদগস্যগণ কঠোর পরিশ্রম আর নিষ্ঠার সাথে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে। নিয়মিত প্রশিক্ষণের পাশাপাশি এ বাহিনী যুব ও নারীদেরকে বিভিন্ন পেশায় বিনামূল্যে কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি ও আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে কাজ করে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী দেশের সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও সাফল্যের অন্যতম অংশীদার। জনসম্পৃক্ত সুশৃঙ্খল এ বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, পরিবার পরিকল্পনা, জনস্বাস্থ্য, দুর্যোগ মোকাবিলা, পরিবেশ রক্ষা, বৃক্ষরোপণ, নারী ও শিশুপাচার রোধ এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাসহ বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমে অনবদ্য অবদান রাখছে। নারীর ক্ষমতায়ন, জনকল্যাণ ও উন্নত জাতি গঠনে প্রায় ৬১ লক্ষ সদস্যের এ বাহিনীর বহুমুখী উন্নয়নমূলক কর্মতৎপরতা সত্যিই প্রশংসনীয়। এছাড়াও খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এ বাহিনীর সদস্যরা অসামান্য কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে চলেছে।
১৯৪৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি আনসার বাহিনী প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। ১৯৫২-এর মহান ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ইতিহাসের প্রতিটি বাঁকেই আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। মহান মুক্তিযুদ্ধে এ বাহিনীর অবদান দেশের ইতিহাসকে মহিমান্বিত করেছে।
১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধকালে দেশের সীমান্ত ফাঁড়িগুলোতে আনসারদের প্রতিরক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত করা হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার (মুজিবনগর) এর শপথ গ্রহণ শেষে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতিকে আনসার প্লাটুন কমান্ডার ইয়াদ আলীর নেতৃত্বে ১২ জন আনসার বাহিনীর সদস্য গার্ড অব অনার প্রদান করে।
স্বাধীনতা যুদ্ধকালে আনসার বাহিনীকে বিদ্রোহী আখ্যায়িত করে বিলুপ্ত করা হয়। প্রায় ৪০ হাজার রাইফেল নিয়ে আনসার সদস্যরা স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেয়। যুদ্ধে আনসার বাহিনীর ৯ জন কর্মকর্তা, ৪ জন কর্মচারী ও ৬৫৭ জন আনসারসহ সর্বমোট ৬৭০ জন শহীদ হন। বাহিনীর ১ জন বীর বিক্রম এবং ২ জন বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিত হন।