একমাস পর খুলল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দরজা

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ একমাস বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) থেকে পুনরায় মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজা খুলেছে। করোনা সংক্রমণ হ্রাস এবং অধিকাংশ শিক্ষার্থী টিকার আওতায় আসায় স্কুল কলেজ খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষামন্ত্রণালয়। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও মানতে হবে নানা বিধিনিষেধ।

এর জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) এ জন্য ২০টি নির্দেশনা দিয়েছে। তবে করোনার প্রভাব কাটিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মঙ্গলবার থেকে স্কুল-কলেজ খুললেও প্রাথমিক স্তরের ক্লাস শুরু হবে ২ মার্চ থেকে। প্রাক-প্রাথমিকের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।

বিজ্ঞাপন

এ দিকে স্কুল কলেজ খুললেও এখনই সব শিক্ষার্থী সশরীরে ক্লাস করতে পারবেন না। শুধু যারা দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহণ করেছেন তারাই শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত থাকতে পারছেন। বাকিরা অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাসে অংশ নেবেন। প্রথম দফায় মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলো খুলছে। ২ মার্চ থেকে খুলবে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো।

নির্দেশনায় বলা হয়- কোডিড-১৯ টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেয়া শিক্ষার্থীরা সশরীরে শ্রেণী কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রবেশমুখসহ অন্যান্য স্থানে কোডিড-১৯ অতিমারি সম্পর্কিত সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি পালনে করণীয় বিষয়গুলো ব্যানার বা অন্য কোনো উপায়ে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রবেশ পথে শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্রের মাধ্যমে নিয়মিত তাপমাত্রা মাপা ও তা পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি বিবেচনায় অনলাইন/ভার্চুয়াল প্ল্যাটফরমে শিখন-শেখানো কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।

বিজ্ঞাপন

নির্দেশনায় আরো বলা হয়, শিক্ষার্থীদের জন্য বিতরণ করা অ্যাসাইনমেন্টগুলোর কার্যক্রম যথারীতি অব্যাহত থাকবে। শিক্ষার্থীদের ক্লাস রুটিন আগের নির্দেশনা মেনে প্রণয়ন করতে হবে। শিক্ষার্থীদের ভিড় এড়াতে প্রতিষ্ঠানের সব প্রবেশ/প্রস্থান মুখ ব্যবহারের ব্যবস্থা করা। একটি প্রবেশ/প্রস্থান মুখ থাকলে সে ক্ষেত্রে একাধিক প্রবেশ/প্রস্থান মুখের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করতে হবে। প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের আনন্দঘন পরিবেশে শ্রেণী কার্যক্রমে স্বাগত জানানোর ব্যবস্থা করা। প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিন শিক্ষার্থীরা কিভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিষ্ঠানে অবস্থান করবে এবং বাসা থেকে যাওয়া-আসা করবে সে বিষয়ে তাদেরকে শিক্ষণীয় ও উদ্বুদ্ধকারী ব্রিফিং দিতে হবে। প্রতিষ্ঠানের একটি কক্ষ প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ আইসোলেশন কক্ষ হিসেবে প্রস্তুত রাখতে হবে।

প্রতিষ্ঠানের সব ভবনের কক্ষ, বারান্দা, সিঁড়ি, ছাদ ও আঙ্গিনা যথাযথভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে হবে। প্রতিষ্ঠানের সব ওয়াশরুম নিয়মিত সঠিকভাবে পরিষ্কার ও পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা রাখতে হবে। প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী, অভিভাবকসহ অন্য কেউ প্রবেশ/অবস্থান/প্রস্থানের সময় সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে পালন করতে হবে। সব শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারী এবং অন্য কেউ সঠিকভাবে মাস্ক পরিধান করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিষ্ঠানে সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধোয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করতে হবে।

শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের বসার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ এবং পারস্পরিক ৩ ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। খেলার মাঠ, ড্রেন ও বাগান যথাযথভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা এবং কোথাও যেন পানি জমে না থাকে তা নিশ্চিত করা। প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিতির সংখ্যা নিরূপণ করতে হবে। প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে আনন্দঘন শিখন কার্যক্রমের মাধ্যমে শ্রেণী কার্যক্রম পরিচালিত করার ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবকদের সাথে সভা করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

এর আগে ওমিক্রনের প্রভাবে গত ২১ জানুয়ারি স্কুল-কলেজ বন্ধ করা হয়। এ ছাড়া প্রথম ধাপে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।