ঢাকায় এফএও আঞ্চলিক সম্মেলন শুরু মঙ্গলবার



সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কৃষি মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এর যৌথ উদ্যোগে প্রথমবারের মতো ঢাকায় শুরু হচ্ছে এফএওএর ৩৬তম এশিয়া ও প্যাসিফিক আঞ্চলিক সম্মেলন। যা আগামী ০৮ মার্চ থেকে ১১ মার্চ ২০২২ পর্যন্ত (সকাল ০৯ টা থেকে সন্ধ্যা ০৬টা পর্যন্ত)চলবে।

সোমবার (৭ মার্চ) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মলনে এ তথ্য জানান কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক।

তিনি বলেন, সম্মেলনে ৪৩টি দেশ, প্রধানমন্ত্রী/মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী পর্যায়ের ৪২ জন প্রতিনিধি। এছাড়া, সদস্য রাষ্ট্র, এফএও’র মহাপরিচালক, জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের প্রতিনিধি, উন্নয়ন সহযোগী, এনজিও ও সিভিল সোসাইটির প্রায় ৯০০ জন নিবন্ধন করেছেন, যা এপিআরসি সম্মেলনে রেকর্ড।

কর্মসূচি প্রসঙ্গে বলেন, সম্মেলনের প্রথম দুই দিন (৮-৯ মার্চ) সিনিয়র অফিসিয়াল/কৃষি সচিব ও উর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের মিটিং, শেষ দুই দিন (১০-১১ মার্চ) মন্ত্রিপর্যায়ের/কৃষিমন্ত্রীদের মিটিং।

>মন্ত্রিপর্যায়ের মিটিং বা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ১০ মার্চ বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার সম্মতি জানিয়েছেন। ০৯ মার্চ সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

>কান্ট্রি শোকেসিং ০৮-১১ মার্চ, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ও বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে, ১৭টি স্টল থাকবে, অংশগ্রহণে কৃষি মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়; FAO’র মহাপরিচালক ০৯ মার্চ মহামান্য রাষ্ট্রপতির সাথে এবং ১৩ মার্চ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।

সংবাদ সম্মলনে আরো জানানো হয়েছে, সম্মেলনের মূল অধিবেশনের (Plenary Session) জন্য ভেন্যু হিসেবে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালকে নির্ধারণ করা হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং কান্ট্রি শোকেসিং এর ভেন্যু হিসেবে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রকে (বিআইসিসি) নির্ধারণ করা হয়েছে। সম্মেলন সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও দপ্তর/সংস্থার প্রতিনিধিগণের সমন্বয়ে ১ টি স্টিয়ারিং কমিটি এবং ১৪ টি উপকমিটি গঠন করা হয়েছে।

বিশ্বব্যাপী কোভিড পরিস্থিতির কারণে সম্মেলনটি হাইব্রিড (সরাসরি ও ভার্চুয়াল) ফর্ম্যাটে আয়োজন করা হয়েছে। সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য ইতোমধ্যে ৪৩টি সদস্য রাষ্ট্র, এফএও’র মহাপরিচালক, জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের প্রতিনিধি, উন্নয়ন সহযোগী, এনজিও ও সিভিল সোসাইটির প্রায় ৯০০ জন প্রতিনিধি রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছেন। সম্মেলনে সদস্য দেশের প্রধানমন্ত্রী/মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী পর্যায়ের ৪২ জন সম্মানিত সদস্য অংশগ্রহণ করবেন।

আলোচনার বিষয় প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলে খাদ্য ও কৃষির বর্তমান অবস্থা, এ অঞ্চলে জলবায়ু সহনশীল কৃষি ও খাদ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে করণীয়, এগ্রিকালচার ভ্যালু চেইন ডিজিটালাইজেশন ত্বরান্বিতকরণ, ওয়ান হেলথ অ্যাপ্রোচে গড়ে তুলতে অগ্রাধিকার চিহ্নিতকরণ।

জুনোটিক বা প্রাণিবাহিত রোগের প্রকোপ দিনদিন বেড়ে চলেছে। চলমান কোভিড এর অন্যতম উদাহরণ। এ অবস্থায় ওয়ান হেলথ অ্যাপ্রোচ গড়ে তুলতে করণীয়,খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতে জীববৈচিত্র্য রক্ষা, অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও সম্মিলিত বিনিয়োগ।

   

মেহেরপুরের হীরক দ্যুতি ‘শারমিন আক্তার সুমি’



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
বাবা-মার সঙ্গে সুমি

বাবা-মার সঙ্গে সুমি

  • Font increase
  • Font Decrease

মেহেরপুরের যারা আর্থ সামাজিক উন্নয়নসহ দেশ ও জাতি গঠনে উজ্জ্বল ভূমিকা রেখেছেন এবার তাদের সারিতে নাম লিখেছেন শারমিন আক্তার সুমি।

বিশ্বের পরাশক্তি আমেরিকার নর্থ ক্যারোলাইনা স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রফেসর Stefan franzen এর তত্ত্বাবধানে ৫ বছর ধরে গবেষণার পর তিনি সফল ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। সামুদ্রিক জীব থেকে প্রোট্রিন নিয়ে এসে পরিবেশ দূষণ রোধে কিভাবে কাজে লাগানো যায় এ বিষয়ে তিনি গবেষণা করেন।

শারমিন আক্তার সুমি মেহেরপুরের গাংনীর ডিগ্রী কলেজ পাড়ার আব্দুর বারির মেয়ে। বর্তমানে তিনি আমেরিকায় অবস্থান করছেন। অতিশীঘ্রই তিনি একটি প্রতিষ্ঠানে সিনিয়র সাইন্টিস্ট হিসেবে কাজ শুরু করবেন। তবে এদেশ ও জাতীর জন্য কিছু করতে চান বলে জানিয়েছেন তিনি।

সহপাঠীদের সঙ্গে সুমি 

জানা গেছে, শারমিন আক্তার সুমি বাল্যকাল থেকেই মেধাবী। ২০০৪ সপ্তম শ্রেণিতে থাকা অবস্থায় বাংলাদেশ কিন্ডার গার্ন্টেন এসোসিয়েশনের বৃত্তিতে সারা দেশের মধ্যে তৃতীয় স্থান অর্জন করেন। প্রিক্যাডেটে ৫ ও অষ্টম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি লাভ ও জেলায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। ২০০৮ গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন এক প্লাস পেয়ে উর্ত্তীর্ণ হন। ২০১০ সালে ঢাকা রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ থেকে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে এইচএসসি পাশ করেন। পরে স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ থেকে ফার্মেসিতে বিফার্ম এবং এমফার্ম ডিগ্রি অর্জন করে। উভয় পরীক্ষায় ফোর আউট অব ফোর এবং ডবল গোল্ড মেডেলিস্ট হন সুমি।

পরবর্তীতে সুমি ঢাকায় রেনাটা লিমিটেডে আরএনডি (রিসার্চ এন্ড ডেভলপমেন্ট) সিনিয়র সাইন্টিটিস্ট হিসেবে যোগদান করেন। ২০১৯ সালে আমেরিকার নর্থ ক্যারোলাইনা স্টেইট ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি লাভের সুযোগ পান। এস এ বাংলাদেশি হিসেবে কেমিস্ট্রিতে এই ইউনিভার্সিটিতে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে সুযোগ পান এবং প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।

শিক্ষকের সঙ্গে সুমি 

নর্থ ক্যারোলাইনা স্টেইট ইউনিভার্সিটিতে তার গবেষণার বিষয় ছিল, সামুদ্রিক জীব থেকে প্রোট্রিন নিয়ে এসে পরিবেশ দূষণ রোধে কাজে কিভাবে লাগানো যায়। প্রিজারভেটিভ ফারটিলাইজার, কৃষি কাজে ব্যবহৃত কীটনাশক ও রং তৈরির কারখানাতে যে বর্জ্য উৎপাদন হয় তা খুবই বিষাক্ত হয়। এগুলোকে সামূদ্রীক জীবের প্রোট্রিন দিয়ে দূষণ দূর করা ও একইসাথে হসপিটাল বর্জ্যও মারতে পারে। ৫ বছর ধরে গবেষণার পর চলতি বছরের ১৯ মার্চ তিনি সফল হন এবং প্রফেসর Stefan franzen ডিফেন্স কমিটির ৫ সদস্য সুমিকে পিএইচডি উপাধিতে ভূষিত করেন। তারা গবেষণা প্রেজেনটেশন ও প্রশ্ন উত্তরে শতভাগ নম্বর দেন।

সুমি আমেরিকার একটি প্রতিষ্ঠানে সিনিয়র সাইন্টিস হিসেবে শুরু করবেন পাশাপাশি দেশের জন্য কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

;

২০১৯ সালের তুলনায় ২৩-এ ঢাকায় ডেঙ্গু রোগী কম ছিল: তাপস



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

২০১৯ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে ঢাকা শহরে ডেঙ্গু রোগী ৪২ হাজার কম ছিল বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

বুধবার (১৫ মে) সকালে রাজধানীর মালিবাগ মোড় সংলগ্ন উড়ালসেতুর নিচে ১২ নম্বর ওয়ার্ডের গণশৌচাগার উদ্বোধন শেষে গণমাধ্যমের সাথে মতবিনিময়কালে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এ তথ্য জানান।

মেয়র বলেন, ২০১৯ সালে ঢাকা শহরে ১ লাখ ৫৫ হাজার ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত হয়েছিল। গতবছর পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল যে, ডেঙ্গু পরিস্থিতি ২০১৯ সালকেও ছাড়িয়ে যাবে। আমরা যথাযথ প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। আমাদের মশককর্মী, যান-যন্ত্রপাতি, মানসম্পন্ন কীটনাশক মজুদ ও কাউন্সিলরবৃন্দের সহযোগিতায় আমরা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছি। রোগীদের ঠিকানার ৪০০ গজের মধ্যে বিশেষ মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনাসহ বিভিন্ন জায়গা ও স্থাপনায় আমাদের মশককর্মীরা কাজ করেছে। ফলে সফলতার সাথে এডিস মশার বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি বলেই ২০২৩ সালে উত্তর ও দক্ষিণ মিলিয়ে ঢাকা শহরে ডেঙ্গু রোগী ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার। সুতরাং, ২০১৯ এর তুলনায় ২০২৩ সালে ঢাকা শহরে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৪২ হাজার কম ছিল। এ বছরও সকলের সহযোগিতায় ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারব, ইনশাআল্লাহ।

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সকলের দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রয়োজন জানিয়ে মেয়র বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আগামী ২১ মে আমরা সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের সাথে মতবিনিময় করব। ইতোমধ্যে তাদেরকে পত্র দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও আমরা বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়, থানা ও পুলিশ ফাঁড়িসহ সকল সরকারি, আধা-সরকারি স্থাপনা ও আবাসনে চিরুনি অভিযান করব। প্রাথমিক পর্যায়ে সেগুলো আমরা একবার পরিচ্ছন্ন করব এবং যে সকল স্থাপনায় লার্ভা পাওয়া যাবে আমরা সেগুলো নিধন করব। পরবর্তীতে সেসব স্থাপনা ও আবাসনে যাতে এডিসের প্রজননস্থল সৃষ্টি না হয়, সেজন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরকে ডেঙ্গু রোগীর নির্ভুল তথ্য দেওয়ার আহবান জানিয়ে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, এক মাস আগে আমরা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করেছি। সেই বৈঠকে আমরা বলেছি যে, আমাদেরকে ডেঙ্গু রোগীর যে তথ্য দেওয়া হয় তা পরিপূর্ণ সঠিক নয়, অসম্পূর্ণ। ফলে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার রোগীদের তথ্য পেতে আমাদের বেশ বেগ পেতে হয়। ঢাকার বাইরে থেকে যে রোগী আসে তাদেরকে পৃথক করা কঠিন কোন কাজ নয়। কারণ তাদের বেশিরভাগই রেফারেল হয়ে আসে। তাদেরকে পৃথকভাবে লিপিবদ্ধ করলে ঢাকার প্রকৃত রোগী সনাক্ত করা সহজ হয়। যদি রোগী হয় ১০ জন সেখানে যদি আমাদেরকে (ঢাকার বাইরের রোগীসহ) ১০০টা ঠিকানা দেওয়া হয়, তাহলে বাকি ৯০টা ঠিকানা খুঁজতে খুঁজতে আমাদের সময়ক্ষেপণ হয়। যদি বিভ্রান্তিকর তথ্য দেওয়া হয় তাহলে আমাদের পক্ষে সঠিকভাবে (এডিসের প্রজননস্থল ধ্বংসের) কাজটা করা কষ্টসাধ্য হয়। সঠিক তথ্য দিলে আমরা সঠিকভাবে কাজটা করতে পারি। ঢাকাবাসীকে আমরা আরও বেশি ফলপ্রসূ সেবা দিতে পারব।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান, অঞ্চল-২ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সোয়ে মেন জো, কাউন্সিলরদের মধ্যে ১২ নম্বর ওয়ার্ডের খ ম মামুন রশিদ শুভ্র, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মো. সুলতান মিয়া, সংরক্ষিত আসনের ফারহানা ইসলাম ডলি ও মিনু রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

;

রাঙামাটিতে ইউপিডিএফ’র ডাকা অর্ধদিবস অবরোধ পালিত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাঙামাটি
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আদালতের মাধ্যমে ১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি বাতিলসহ রাজা-হেডম্যান-কার্বারি পদবি বিলোপ ও পাহাড়িদের প্রথাগত অধিকার হরণের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আধাবেলা অবরোধ ডেকেছে ইউপিডিএফ।

বুধবার (১৫ মে) ভোর ৫টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত রাঙামাটিতে শান্তিপূর্ণভাবে সড়ক ও নৌপথ অবরোধ কর্মসচি পালিত হয়েছে।

ইউপিডিএফের সহযোগী সংগঠন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম (ডিওয়াইএফ)সহ চার সংগঠনের ডাকে বুধবার ভোর ৫ট থেকে জেলায় অবরোধ সমর্থনকারীরা রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কের সাপছড়ি, কতুকছড়ি, ঘিলাছড়ি, নানিয়ারচরসহ বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছের গুড়ি ফেলে অবরোধ সৃষ্টি করে। এতে ওই রুটে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।

এছাড়া রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের বেতবুনিয়া এলাকায়, বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক-বাঘেইহাট-দীঘিনালা সড়কের অবরোধ সমর্থনকারীরা অবরোধ পালন করছে বলে জানা গেছে। তবে রাঙামাটি শহরে অবরোধের প্রভাব পড়েনি। যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। 

বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) জেলা শাখার সভাপতি তুনময় চাকমা জানান, ১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি বাতিলসহ রাজা-হেডম্যান-কার্বারি পদবি বিলোপ ও পাহাড়িদের প্রথাগত অধিকার হরণের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে রাঙামাটিতে শান্তিপূর্ণভাবে সড়ক ও নৌপথ অবরোধ করেছিলাম। তাদের নেতাকর্মীরা সড়কের বিভিন্ন স্থানে পিকেটিং করেছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) শাহেনেওয়াজ রাজু জানান, রাঙামাটিতে কয়েকটি এলাকায় অবরোধ সমর্থনকারীরা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। তবে পুলিশ তাদের সরিয়ে দিয়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানবাহন স্বাভাবিক হয়েছে। তবে অবরোধে কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

;

হেলিকপ্টার থেকে মুক্তিপণের ডলার ফেলা হয়: ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লক্ষ্মীপুর
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ঈদুল ফিতরের ২-৩ দিন পর হেলিকপ্টার থেকে মুক্তিপণের ডলারের ব্যাগ জাহাজে ফেলা হয়। এরপর ডলার নিয়ে ভাগ হয়ে যায় জলদস্যুরা। তিনভাগে জাহাজ ছাড়ে দস্যুবাহিনী- এভাবেই নিজেদের সোমালিয়ান জলদস্যুদের জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পাওয়ার বিষয়ে বার্তা২৪.কমকে বলছিলেন পণ্যবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খান।

তিনি বলেন, সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মিদশায় থাকার সময় প্রচণ্ড ভয়ে আমাদের দিন কাটাতে হয়েছে। আর সবচেয়ে বেশি ভয় হয়েছে, আমার মা-কে নিয়ে। কারণ, বাবাকে হারানোর একমাস পরেই আমি বিপদে পড়েছি। এটি মা কীভাবে সহ্য করছেন, তা নিয়েই সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তা লাগছিল। এখন আমি মায়ের কোলে ফিরেছি। এ আনন্দ সব কষ্ট, সব ভয় জয় করে নিয়েছে।

বুধবার (১৫ মে) সকালে জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার পর জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খান এভাবেই বার্তা২৪.কমের কাছে নিজের আবেগের কথা জানিয়েছেন।

আইয়ুব খান লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের রাখালিয়া গ্রামের বিনন বেপারী বাড়ির মৃত আজহার মিয়ার ছোট ছেলে।

মুক্তি পাওয়ার পর এমভি আব্দুল্লাহর ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খান লক্ষ্মীপুরে মায়ের সঙ্গে, ছবি- বার্তা২৪.কম

আইয়ুব বলেন, সোমালিয়ান জলদস্যুরা আমাদের জাহাজ দখল নেওয়ার পর ইঞ্জিন বন্ধ করতে বলে। এরপর তারা আমাদের সোমালিয়ার দিকে নিয়ে যায়। প্রায় আড়াই দিন লেগেছে সোমালিয়ায় যেতে। প্রথম কয়েক দিন আমাদের সবাইকে একটি রুমে আটকে রাখে। একই বাথরুম ব্যবহার করতে হয়েছে সবাইকে।

দস্যুরাও আমাদের বাথরুম ব্যবহার করেছে। প্রথম কয়েকদিন তারা আমাদের খাবার খেয়েছেন। সোমালিয়ায় পৌঁছানোর পর তারা নিজেদের খাবার সংগ্রহ করেন।

তিনি বলেন, ঈদের দিন নামাজ পড়তে পারলেও আনন্দ ছিল না! কারণ, বন্দিদশা থেকে কবে মুক্ত হবো, তা নিয়েই দিন গুণতে হয়েছে আমাদের। একজন দোভাষীর মাধ্যমে আমরা জানতে পারি, জলদস্যুরা জাহাজ মালিকের সঙ্গে কথা বলেছে। মুক্তিপণ নিয়ে জাহাজ মালিকদের সঙ্গে দস্যুদের সমঝোতা হয়েছে। মুক্তিপণ দিলেই নাবিকেরা মুক্তি পাবেন।

মুক্তিপণ দেওয়ার বিষয়ে ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খান বলেন, ঈদুল ফিতরের ২-৩ দিন পর হেলিকপ্টারের মাধ্যমে মুক্তিপণ ডলারের ব্যাগ জাহাজে ফেলা হয়। এরপর ডলার নিয়ে ভাগ হয়ে যায় জলদস্যুরা। তিনভাগে জাহাজ ছাড়ে দস্যুবাহিনী।

মঙ্গলবার (১৪ মে) চট্টগ্রাম বন্দরে এসে আত্মীয়-স্বজনদের দেখে মন উৎফুল্ল হয়ে ওঠে। ঈদ আমরা আতঙ্কে কাটিয়েছি। পরিবার-স্বজনদের পেয়ে সেই ঈদ আনন্দ আবার আমাদের মাঝে ফিরে এসেছে।

নিজের বাড়িতে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এমভি আব্দুল্লার ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খান, ছবি- বার্তা২৪.কম

আইয়ুবের বড় ভাই ওমর ফারুক রাজু বলেন, দস্যুদের আক্রমণের প্রায় এক মাস আগেই বাবা মারা যান। সেই শোক না কাটতেই আইয়ুবসহ ২৩ নাবিক সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়েন। এতে পুরো পরিবারের ওপর অমাবশ্যার অন্ধকার নেমে আসে। তার ফিরে আসা আমাদের সবার জন্য আনন্দের বিষয়!

মঙ্গলবার (১৪ মে) বিকেলে বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর মুক্তি পাওয়া ২৩ জন নাবিক চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছান। এরপর সেখান থেকে সবাই নিজের বাড়ি ফিরে যান।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১২ মার্চ বাংলাদেশ সময় দুপুরে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে বাংলাদেশের পতাকাবাহী পণ্যবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। এ সময় শিল্পগ্রুপ কেএসআরএমের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজটি জিম্মি করে নেয় সোমালিয়ান দস্যুরা। এদিন বিকেলে জাহাজটি সোমালিয়ার দিকে নিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া যায়। জাহাজে লক্ষ্মীপুরের আইয়ুব খানসহ মোট ২৩ জন নাবিক ছিলেন।

;