সুরমায় কমলেও কুশিয়ারায় বাড়ছে পানি
সিলেটের সুরমা, ধলাই, পিয়াইন, লোভা ও সারি নদীর পানি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করলেও বাড়ছে কুশিয়ারা নদীর পানি। যার ফলে কুশিয়ারার তীরবর্তী ৬ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। এতে বন্যা কবলিত এলাকায় মানুষের দুর্ভোগ দীর্ঘায়িত হয়েছে।
জেলার এখনও অসংখ্য মানুষ পানিবন্দী রয়েছেন। সেনা, নৌ, বিমানবাহিনী, কোস্টগার্ড, পুলিশ ও বিজিবির উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। এখনও জেলার দুর্গম অনেক এলাকায় ত্রাণ পৌঁছেনি। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় দুর্গম এলাকার দুর্গত মানুষদের কাছে ত্রাণ পৌঁছানো দু:সাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ জুন) সিলেটের যেসব উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর, দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার। আগের দিন থেকে কিছুটা উন্নতি হয়েছে সিলেট সদর, জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানিগঞ্জ উপজেলায়। আর পরিস্থিতি অপরবর্তিত রয়েছে জকিগঞ্জ ও বিশ্বনাথের।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী, কুশিয়ারা নদীর পানি মঙ্গলবার (২১ জুন) সন্ধ্যা ৬টায় সকল পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। কুশিয়ারায় পানি বৃদ্ধির ফলে বিয়ানীবাজার উপজেলার কুড়ারবাজার, মুড়িয়া, লাউতা, শেওলা, মাথিউরা, মোল্লাপুর ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
উপজেলার প্রায় ৯০ ভাগ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন লাখো মানুষ। উপজেলা প্রশাসনের হিসেব মতে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে ২৩ হাজার পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। মঙ্গলবার পর্যন্ত সরকারিভাবে সাড়ে ৩০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বালাগঞ্জ উপজেলায়ও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। উপজেলার প্রায় ৮০ ভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। কুশিয়ারার পানি বৃদ্ধির ফলে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় বন্যা আক্রান্ত এলাকায় অন্তত ৬ ইঞ্চি পানি বেড়েছে। ফেঞ্চুগঞ্জের ইলাশপুর এলাকায় সিলেট-মৌলভীবাজার আঞ্চলিক মহাসড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। উপজেলার অন্তত ৬০ ভাগ মানুষ বর্তমানে পানিবন্দি রয়েছেন।
বন্যা আক্রান্ত উপজেলাগুলোতে তীব্র খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। রাস্তাঘাট ও হাটবাজার তলিয়ে যাওয়ায় বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। এছাড়া খাদ্যসামগ্রীর দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে। এসব এলাকায় টাকা দিয়েও খাদ্যসামগ্রী মিলছে না।