চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন আমিন কলোনিতে লাগা আগুন আড়াই ঘণ্টা অভিযানে পুরোপুরিভাবে নির্বাপণ করেছে ফায়ার সার্ভিস। এতে শতাধিক ঘরের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে কেউ হতাহত হয়নি।
বুধবার (৪ অক্টোবর) সকাল ৯টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ৬টি ইউিট এই আগুন সম্পূর্ণ নির্বাপণ করে। এর আগে, ভোর ৬টার দিকে আমিন জুম মিল মসজিদের পাশের পুড়া কলোনিতে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই কলোনীতে থাকা বেশিরভাগ মানুষ দিনমজুর ও গার্মেন্টস শ্রমিক। পাশে থাকা কয়েয়কটি ছোট দোকান ও কাপড়ের গুদাম পুড়েছে। তবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ওই কলোনির বসতি ঘর। কারও কোনো কিছু বের করা সম্ভব হয়নি। এতে কলোনিটির আনুমানিক শতাধিক ঘর পুড়ে যায়। তবে কলোনির ভেতরে থাকা রাবেয়া ডিজিটাল কিন্ডারগার্ডেন নামে একটি স্কুল আগুন থেকে রক্ষা পেলেও পাশের ঘরে রাখা শিক্ষার্থীদের সব বই পুড়ে চাই হয়ে গেছে।
আগুন থামার পর নিজ নিজ ঘর থেকে পুড়ে যাওয়া জিনিসপত্র সরাতে শুরু করে ক্ষতিগ্রস্তরা। এসময় অনেককেই কান্নায় ভেঙে পড়তেও দেখা যায়।
এদিকে আগুনের খবর শুনে ঘটনাস্থলে, র্যাব, পুলিশসহ গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিত দেখা গেছে।
মামুনুর রশিদ নামের এক ভুক্তভোগী বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘কিভাবে আগুন লাগছে জানি না। সকালে ফজরের নামায পড়ে শুয়েছি, আগুন আগুন চিৎকার শুনে উঠলাম। উঠে পুলিশকে ফোন করছি। তারা ফায়ার সার্ভিসকে জানায়। সবাই ঘুমে ছিল। চিৎকার শুনে সবাই বেরিয়ে কোনো রকম জানটা বাঁচাইছে। এখানতে প্রায় ৩’শ পরিবার রয়েছে। গুদাম আর দোকান আছে মাত্র কয়েকটি। আগুনটা মূতলত মুজার গুদাম থেকে শুরু হয়েছে। আমার ৭টা ঘর ভাড়া দেওয়া ছিল। প্রত্যেকটিতে ১ লাখ টাকা ধরে হিসেব করলে ৭ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আমার।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের উচ্ছেদ করার জন্য একটি মহল উঠেপড়ে লেগেছে। এসব নিয়ে মামলা মুকদ্দমা চলছে। এর ৫ বছর আগেও এখানে আগুন লেগেছে।’
নুরুন্নবী সুমন নামে আরেক ভুক্তভোগী বলেন, ‘আমি এসে ভাড়াটিদের থেকে শুনলাম তেলের গুদাম থেকে আগুন লাগছে। এখানে আমার ৪টা দোকান ও ৩২টা ভাড়া ঘর ছিল।’
ভুক্তভোগীরা জানান, কলোনীর সাথে লাগোয়া কযেকটি কপড়ের গুদাম রয়েছে৷ সেখানে একটি মুজার গুদাম থেকে প্রথমে এই আগুন দেখা যায়। তবে কিসে থেকে আগুনের সূত্রপাত তা কেউ দেখেনি।
ঘটনাস্থল থেকে ফায়ার সার্ভিস চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-সহকারী পরিবচালক আব্দুর রাজ্জাক বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘আমাদের বায়েজিদ ফায়ার সার্ভিসের টিম সকাল সাড়ে ৬টায় খবর পায়। সাথে সাথে তারা এসে অভিযান শুরু করে এবং আমাদের আগ্রবাদ ফায়ার স্টেশনে সাহায্য চায়। এরপর আগ্রাবাদ, কালুরঘাটসহ তিনটা স্টেশন থেকে আমাদের ৬টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। সোয়া ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ৯ টার দিকে আমরা আগুন পুরোপুরিভাবে নির্বাপণ করতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ধারণা, হয়তো চুলার আগুন, না হয় মশার কয়েলের আগুন অথবা বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুনটার সূত্রপাত ঘটতে পারে। প্রথমে একটি হাতমুজার গুদামে আগুনটা লেগেছে।'
এঘটনায় আনুমানিক ৪০টার ঘর সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। পাশে থাকা মার্কেটকে আগুন থেকে রক্ষা করা গেছে। তবে ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত ছাড়া বলা যাবে না। এসময় কেউ হতাহত হয়নি বলেও জানান তিনি।