একমাত্র অবলম্বন ছিলেন শান্তিরক্ষায় নিহত সেনা সদস্য শরিফ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিরাজগঞ্জ
একমাত্র অবলম্বন ছিলেন শান্তিরক্ষায় নিহত সেনা সদস্য শরিফ

একমাত্র অবলম্বন ছিলেন শান্তিরক্ষায় নিহত সেনা সদস্য শরিফ

  • Font increase
  • Font Decrease

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের মাধ্যমে আফ্রিকায় পেশাগত দায়িত্ব পালনে টহলরত গাড়িতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় অকালে প্রাণ হারিয়েছেন সিরাজগঞ্জের বেলকুচির সৈনিক শরীফ হোসেন (২৬)। চাকরি পাওয়ায় পর পরিবারের একমাত্র অবলম্বন ছিলেন শরীফ। নিহতের খবর শুনে বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।

মিশন থেকে ফিরে ছোট বোনকে বিয়ে দিবেন। কিন্তু সে আশা আর পূরণ হলো না শান্তিরক্ষায় অংশ নেওয়া সেনা সদস্য শরীফ হোসেনের। নিহতের খবর পেয়ে স্তব্ধ শরীফের পরিবার। কাঁদতে কাঁদতে যেন চোখের পানি শুকিয়ে গেছে তার বাবা-মা, ভাইবোন ও স্ত্রীসহ স্বজনদের। এখন তারা শরীফের লাশের অপেক্ষায় রয়েছেন।

মিশনে নিহত শরীফ হোসেনের বাড়ি উপজেলা সদরের বেড়াখাড়ুয়া গ্রামের লেবু তালুকদারের ছেলে। মা-বাবা, দুই ভাই এক বোন ও শরীফের স্ত্রীসহ পাঁচজনের সদস্য।

বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) সকালে নিহত শরীফের ছোট ভাই কাউসার তালুকার এতথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, গত মঙ্গলবার মোবাইলের মাধ্যমে শরীফের মৃত্যুর খবর পরিবারকে জানানো হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ছেলের মৃত্যুতে শোকে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তার মা পাঞ্জু আরা বেগম। কথাবলার ভাষা নেই বাবা লেবু শেখের। কাঁদতে কাঁদতে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন ভাই, বোন ও স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যরা। ছেলের ছবি বুকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছেন শরীফের বাবা-মা। মাঝে মাঝে অস্পষ্ট কণ্ঠে বলেছেন, তোমরা শুধু আমার ছেলেকে এনে দাও। এভাবে আমাদের আগে শরীফ চলে যেতে পারে না। এই বয়সে ছেলে এভাবে আমাদের ছেড়ে চলে যাবে কোন দিন ভাবি নাই।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অন্যের বাড়িতে সুতার কারিগর হিসেবে কাজ করে এবং দর্জির কাজ করে শরিফকে বড় করেছিলেন তার মা। শরিফ চাকরি পাওয়ায় পর পরিবারের একমাত্র অবলম্বন ছিলেন তিনি। বর্তমানে পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন শরীফ। বাবা ছিলেন তাঁত শ্রমিক। ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। মিশনে যাওয়ার ৬ মাস আগে বিয়ে করেছেন শরীফ। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে শরীফ সবার বড়। পরিবারে চলছে বোনের বিয়ের কথা। মিশন থেকে ফিরে একমাত্র ছোট বোন লাকী খাতুনের বিয়ে। কিন্তু মৃত্যুর খবর শুনে শোকে পরিবারটি এখন স্তব্ধ।

নিহত সেনা সদস্য শরীফ হোসেনের ছোট ভাই কাউসার তালুকদার বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় আমার ভাই নিহত হয়েছে এই খবর মঙ্গলবার রাতে ঢাকা সেনানিবাস থেকে আমাদের জানানো হয়। খবরটা শুনে আমার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। খবর শোনার পর থেকে বাড়ির সবাই কান্নাকাটি করছে। আমার ভাই আমাদের একমাত্র উপার্জনের সম্বল ছিল। আমার বোনের বিয়ের কথা চলছে। ভাই বলেছে বোনের বিয়ে দিতে যত টাকা লাগে আমি দেব। পরিবারের কারও চিন্তা করার দরকার নেই। আমি মিশন থেকে ফিরে বিয়ে দেব। সেই ভাই আজ আমাদের মাঝে নেই। এখন আমাদের কী হবে। ভাই আমাদের সংসার চালাতো।


নিহত সেনা সদস্য শরীফ হোসেনের বাবা লেবু শেখ তালুকদার বলেন, আমি তাঁত শ্রমিকের কাজ করতাম। আমার স্ত্রী অন্যের বাড়ি থেকে সুতার কাজ করতো। ছেলের চাকরি হওয়ার পর থেকে আমাদের কোনো কাজ করতে দিতো না। ছেলেই সংসার চালাতো। তার চাকরির টাকা দিয়ে সংসারের সব খরচ চলছিল। কিন্তু মিশনে যাওয়ার ৬ মাস আগে ছেলেকে বিয়ে করাই। আমার সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেল। এত অল্প বয়সে ছেলে এভাবে চলে যাবে কোনো দিন ভাবিনি।

নিহত শরীফের প্রতিবেশী পারভেজ ও হাসান শেখ বলেন, শরীফ মৃধাবী ও ভালো একজন ছেলে ছিল। সবার সঙ্গে হাসি মুখে কথা বলত। অল্প বয়সে তার মৃত্যুতে আমরা গভীর শোকাহত। আমরা ভালো একজন ছেলে হারালাম। শরীফ শুধু বেলকুচির না সারা দেশের হয়ে জীবন দিয়েছে। এটা এলাকার মানুষ হিসেবে আমাদের গর্ব।

বেলকুচি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সাজেদুল বলেন, শরীফ নিহত হওয়ার খবর শুনে আমি তাদের পরিবারের খোঁজ খবর নেই। শরীফ অত্যন্ত ভালো একটি পরিবারের ছেলে ছিল। সে আমাদের বেলকুচির গর্ব।

বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আনিছুর রহমান বলেন, শান্তিরক্ষা মিশনে শরীফের মৃত্যুতে আমরা গভীর শোকাহত। মৃত্যুর খবর পেয়ে নিহত শরীফের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারকে শান্তা দেওয়া চেষ্টা করেছি। কিন্তু একমাত্র উপার্জনের ছেলেকে হারিয়ে পরিবারটি শোকে স্তব্ধ। লাশ দেশে আনাসহ সব বিষয়ে নিহতের পরিবারকে সহযোগিতা করা হবে।

প্রসঙ্গত, গত (৩ অক্টোবর) সোমবার রাত ৮টার পর মধ্য আফ্রিকায় শান্তিরক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার সময় ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইসের (আইইডি) বিস্ফোরণে শরীফ হোসেনসহ (২৬) তিন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হন। নিহত শান্তিরক্ষীরা হলেন- সৈনিক শরিফ হোসেন, সৈনিক জসিম উদ্দিন (৩১, সেনিক জাহাঙ্গীর আলম (২৬)।

   

কালীগঞ্জে হিট স্ট্রোকে অটোচালকের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, লালমনিরহাট
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কালীগঞ্জে হিট স্ট্রোকে রাশেদুল ইসলাম (৫৪) নামে এক অটোচালকের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে কালিগঞ্জ উপজেলার উপজেলার মদাতী ইউনিয়নের চামটার হাট বাজারে তার মৃত্যু হয়। 

মৃত রাশেদুল ইসলাম লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নের খোর্দ্দ বিছনদই গ্রামের মৃত বদর উদ্দিনের ছেলে। তিনি আগে পেপার বিক্রেতা ছিলেন। 

স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সকালে অটোরিক্সা নিয়ে ভোটমারী গোলাম মৃর্তজা ক্লিনিকের মাইকিং করতে করতে চামটার হাট বাজারে যান। সেখানে একটি হোটেলে খাবার খেয়ে বের হওয়ার সময় অসুস্থা হয়ে পড়েন। পরে অসুস্থ হওয়ার পর স্থানীয়রা উদ্ধার করার সময় ঘটনাস্থলে তিনি মারা যান। 

ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভেকেট মশিউর রহমান বার্তা ২৪ কমকে জানান, প্রচণ্ড গরমের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। পরে সেখানে তিনি হিট স্ট্রোক করে মারা যান।



;

প্রতিবন্ধীদের মূল ধারায় আনার জন্য সরকারের প্রচেষ্টা আছে: দীপু মনি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি বলেছেন, সকল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মূল ধারায় আনার জন্য একটা বড় প্রচেষ্টা রয়েছে। সেই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে নীতিমালা তৈরি করা ও আইন তৈরি করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিকালে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় প্রথম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী শিল্প উৎসব ঢাকা-২৪ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, যারা প্রতিবন্ধীতায় আক্রান্ত তারা শারীরিক মানসিক নানা ধরনের শিকার হলেও বুদ্ধি ও মননশীলতায় স্বাভাবিক মানু্ষদের মত যে তাই নয়, বরং সৃজনশীলতায় অনেক ক্ষেত্রে বেশিও। তিনি বলেন, আমরা সবসময় কথা বলি বৈষম্য হীনতার সেই স্বপ্নের কথা, সেই সমাজ তৈর করার কথা বলি। আমরা যখন জাতির পিতার কথা বলি তখনো বলি তার বৈষম্যহীনতার জন্য সংগ্রাম করেছিলেন সে কথা।

আমরা অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের নীতি অনুসরণ করছি উল্লেখ করে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, আইসিটি, অর্থনীতি থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ে আমরা অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের নীতি অনুসরণ করছি। আমাদের অনেক কিছু আছে আবার অনেক কিছু নেই সেটাও সত্যি। তবে যেটা সবচেয়ে বেশি যেটা দরকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা সেটা আছে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে। সেটা অনেক জায়গায় থাকে না। আমার সর্বস্তরে সচেতনতা তৈরি করাটা এখন প্রয়োজন। আমাদের সরকারি ভবন, কর্মস্থল, পাবলিক স্পেস সব পর্যায়ে আমরা যেন অভিগমনতা নিশ্চিত করতে পারি এটা করা আমাদের জন্য জরুরি।

দীপু মনি বলেন, আমরা চাই বিভিন্নভাবে প্রতিবন্ধকতার শিকার যে শিশুরা রয়েছে তারা যেন সাধারণ সবার সাথে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে সে ব্যবস্থা তৈরি করা। আর যাদের পক্ষে একেবারেই সম্ভব নয় তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করার চেষ্টা করবো। সবার মতই তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য ক্রীড়া চর্চা, সাংস্কৃতিক চর্চা ব্যবস্থা করা। এটা সবার মতই তাদের জন্যও অপরিহার্য। 

;

মানিকগঞ্জে সেলফি তুলতে গিয়ে আগুনে পুড়ে নারীর মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মানিকগঞ্জ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মানিকগঞ্জে বাসন্তী দেবীর কপালে সিদুর দেওয়ার সময় সেলফি তুলতে গিয়ে শাড়িতে আগুন লেগে দগ্ধ হয় মলি রানী (৪৬) নামের এক নারী। এক সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা যান তিনি।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান মলি রানী। মানিকগঞ্জ জেলা শহরের গঙ্গাধর পট্টি এলাকার অশোক্নসাহার স্ত্রী মলি রানী।

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, বাসন্তী পূজার দশমীর দিন গত ১৮ এপ্রিল শহরের কালীবাড়ী মন্দিরে বাসন্তী দেবীর কপালে সিদুর দেয়ার সময় দেবীর সাথে সেলফি তুলছিলেন মলি। এ সময় পাশে থাকা প্রদীপের আগুন শাড়িতে লেগে দেহের ৩০ ভাগেরও বেশি পুড়ে যায়।

পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করা হয়। প্রায় ১ সপ্তাহ চিকিৎসা শেষে শুক্রবার সকাল ১০টায় চিকিৎসাধীন মারা যান তিনি।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অনির্বাণ পাল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বাসন্তি পূজার সময় অগ্নিদগ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি ছিলো মলি। এরপর সেখানেই চিকিৎসাদীন তার মৃত্যু হয়।

;

মানিকগঞ্জে ছাদ থেকে পড়ে মাদরাসা ছাত্রীর মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মানিকগঞ্জ
মানিকগঞ্জে ছাদ থেকে পড়ে মাদরাসা ছাত্রীর মৃত্যু

মানিকগঞ্জে ছাদ থেকে পড়ে মাদরাসা ছাত্রীর মৃত্যু

  • Font increase
  • Font Decrease

মানিকগঞ্জে ছাদে খেলার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাটিতে পড়ে মাহিয়া আক্তার (১৭) নামের এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকালে সদর উপজেলার বাসস্ট্যান্ডের আয়েশা সিদ্দিকা মহিলা মাদ্রাসায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত মাহিয়া আক্তার মানিকগঞ্জের সিংগাইরের বড় কালিয়াকৈর এলাকার আল মামুনের মেয়ে। সে আয়েশা সিদ্দিকা মহিলা মাদরাসার হেফজ বিভাগের ছাত্রী ছিল।

মাদরাসার শিক্ষিকা শারমিন আক্তার জানান, সকালে ক্লাসের ফাঁকে মাদরাসার ছাদে খেলাধুলা করার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাদরাসার ভবনের চার তলা থেকে নিচে পড়ে যায় মাহিয়া। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার অবস্থার অবনতি হলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজে রেফার্ড করা হয়। পরে ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিল হোসেন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এঘটনায় কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

;