নোয়াখালীর সুবর্ণচরে বেপরোয়া গতির ট্রাক্টর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আরো এক যুবক গুরুত্বর আহত হয়েছেন।
রোববার (২ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার চর আমান উল্যাহ ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ডের সেলিম ওয়েলকাম পোল্ট্রি ফার্মের সামনের সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
নিহত মো.রুবেল মিয়া (১৯) উপজেলার চর আমান উল্যাহ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাতাইশডোন এলাকার আজিমুর রহামনের ছেলে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেন চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেব প্রিয় দাশ। তিনি বলেন, বেলা সাড়ে ১০টার দিকে বেপরোয়া গতির একটি ট্রাক্টর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উপজেলার চর আমান উল্যাহ ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ডের সেলিম ওয়েলকাম পোল্ট্রি ফার্মের সামনের সড়ক সংলগ্ন খালে পড়ে যায়। এতে ট্রাক্টর চাপায় রুবেল নামে এক যুবক মারা যায়। এতে অপর এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়। তাৎক্ষণিকভাবে আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা সুবর্ণচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ রয়েছে। পরবর্তীতে এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজধানীর সড়কে বিশৃঙ্খলা, যত্রতত্র পার্কিং ও যাত্রী ওঠা-নামাসহ বিভিন্ন কারণে সৃষ্ট দীর্ঘ দিনের যানজটে অতিষ্ঠ নগরবাসী। ফলে যানজটের নিরসন ঘটিয়ে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ’র সদস্যরা।
এরই ধারাবহিকতায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গত এক দিনে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে ২০০৪টি মামলা করেছে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ। এসব মামলায় আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে ৭১টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৩৫টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে রাত-দিন কাজ করছে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা। সোমবার (২০ জানুয়ারি) এক দিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ডিএমপির আটটি ট্রাফিক বিভাগ কর্তৃক অভিযান পরিচালনা করে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ২০০৪টি মামলা করেছে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ। এ সংক্রান্ত মামলায় ৭১টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৩৫টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান ডিএমপির এই কর্মকর্তা।
এদিকে রাজধানী ঢাকার যানজট নিরসনের সমাধান খুঁজতে পুলিশ ও দেশের অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরই ধারাবাহিকতায় যারা সড়কে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে এবং আইন অমান্য করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ।
এর আগে ২০২৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) শীর্ষ কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ট্রাফিক সিস্টেম বিশেষজ্ঞের সঙ্গে বৈঠক করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৈঠকে রাজধানী ঢাকার যানজট নিরসনের সমাধান খুঁজতে পুলিশ ও দেশের অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের নির্দেশ দেন তিনি।
সিলেটের কানাইঘাটে এক যুবককে হত্যা করে সুরমা নদীতে লাশ ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা। সোমবার (২০ জানুয়ারি) রাত ১১টার দিকে জেলার কানাইঘাটের সাতবাক ইউনিয়নের লুপারমুক বাজারের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সালিক আহমদ (৪৮) উপজেলার পূর্ব লক্ষীপাশা ইউনিয়নের মনিপুর গ্রামের আজিজুর রহমান ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আউয়াল।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সোমবার রাতে লুপারমুক বাজার থেকে কেনাকাটা করে বাড়িতে ফিরছিলেন সালিক আহমদ। সুরমা নদীর পাশে আসামাত্র ওৎপেতে থাকা ৮-৯ জন দুর্বৃত্ত তার উপর হামলা চালায়। দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে সালিককে কুপিয়ে খুন করে লাশ সুরমা নদীর পাড়ে ফেলে দেয়।
এব্যাপারে কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আউয়াল জানান, খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ওসমানী মেডিকেল কলেজ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
তিনি জানান, সালিক আহমদের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। শুনেছি পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তাকে খুন করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। মামলা হলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গাজীপুর মহানগরীর চক্রবর্তী এলাকায় ব্যাংকিং সুবিধাসহ বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে অবস্থিত সব কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে গণ সমাবেশ শুরু করেছেন কারখানার প্রায় অর্ধ লাখ শ্রমিক।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুর ২ টায় গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুরের শ্রীপুরে সানসিটির মাঠে এ গণসমাবেশ শুরু করেন কর্মহীন শ্রমিকেরা।
গণ সমাবেশে ৪২ হাজার শ্রমিক অংশগ্রহণ করেন। তারা বলেন, ব্যাংকিং সুবিধাসহ বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে অবস্থিত সব কারখানা খুলে দিতে হবে। একই সাথে বকেয়া বেতন পরিশোধ করতে হবে।
গণ সমাবেশে শ্রমিকরা বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানের সব ফ্যাক্টরি পুনরায় চালু করার এবং নিজেদের কর্মসংস্থান এবং পরিবারের ভবিষ্যৎ রক্ষার লক্ষ্যে আমরা সবাই একত্রিত হয়েছি। কারখানাগুলো চালু না হওয়া পর্যন্ত আমাদের গণসমাবেশ চলমান থাকবে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ কোনাবাড়ী জোনের সহকারী পুলিশ সুপার আবু তালেব জানান, আজ দুপুর ২টা থেকে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকরা কারখানা খোলার দাবিতে ও বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে গণ সমাবেশ শুরু করেছেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ ডিসেম্বর শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে বেক্সিমকোর শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রম ও ব্যবসায় পরিস্থিতি পর্যালোচনা- সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের কমিটির সভার সিদ্ধান্তের পর বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ১৬ টি কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
রাজশাহীর গাছে গাছে আগাম জাতের আমের মুকুল ফুটতে শুরু করেছে। মাঘের শুরুতেই এই মুকুল জানান দিচ্ছে মৌসুমের শুরু। নতুন আমের সম্ভাবনার কথা।
আমচাষিরা বলছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার আগাম আমের ফলন ভালো হতে পারে। রাজশাহীর বাঘা, চারঘাট ও পুঠিয়া উপজেলাগুলোতে এই আগাম মুকুলের আধিক্য দেখা যাচ্ছে। চাষিরা এখন আশায় বুক বাঁধছেন ভালো ফলনের জন্য।
আগাম মুকুল আসায় চাষিদের মাঝে যেমন আনন্দ বইছে, তেমনি ঘনকুয়াশায় মুকুল নষ্টের আশঙ্কাও রয়েছে। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বলছে, আমের মুকুল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা কম। কুয়াশার পরে রৌদ্র উঠায় আমের মুকুল নষ্টের পরিবর্তে মুকুল আরো সতেজ হবে। তবে এ জন্য কিছু ছত্রাক জাতীয় কীটনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এ বছর রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ ও নাটোর এই চার জেলায় ৯৩ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে আনুমানিক প্রায় সাড়ে ১২ লাখ টন। এরমধ্যে জেলায় ১৭ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। গত বছর এ অঞ্চলে মোট ১২ লাখ ৭ হাজার ২৬৩ টন আম উৎপাদন হয়েছিল।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, রাজশাহীর চারঘাট ও বাঘা উপজেলার আগাম আমের মুকুল এসেছে। চারঘাট উপজেলার নিমপাড়া, ভায়ালক্ষিপুর, চারঘাট সদর, সারদা ও শলুয়া এবং বাঘা উপজেলার মনিগ্রাম, বাউসা, গড়গড়িয়া ইউনিয়নের অনেক বাগানেই আগাম মুকুল এসেছে।
আমচাষিরা জানান, গাছে আসতে শুরু করেছে আগাম মুকুল। আগাম মুকুলে কৃষকরা বেশ খুশি। মাঘ মাস শীতল পরশ দিয়ে ফাগুনকে ডেকে নেয়ার মতো সবুজ পাতার ফাঁকে দুলছে মুকুল। এবার মধ্য জানুয়ারিতেই কিছু কিছু গাছে আমের মুকুল এসেছে। এ পরিস্থিতিতে কৃষক ঘন কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া চান না। তাতে করে মুকুলের বেশ ক্ষতি হয় বলে তারা জানান। মুকুল আসার আগে থেকেই তারা গাছের প্রাথমিক পরিচর্যা করেছেন। মুকুল রোগবালাইয়ের আক্রমন থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ স্প্রে করা হয়েছে বলে কৃষকরা জানান।
চারঘাট উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়নের কালুহাটি গ্রামের আম চাষি বাহাদুর রহমান বলেন, গত দুই বছর বাগানে মুকুল আসেনি। এবার বাগানে আগে ভাগেই এবার মুকুল এসেছে। তবে কুয়াশায় মুকুল নষ্ট না হলে এবার ব্যাপক আমে ফলন হবে।
আম চাষি ও ব্যবসায়ী শামসুল হক বলেন, কিছু কিছু আম গাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে। আর ১০ দিন গেলে পুরো বাগানের গাছেই মুকুল ফুটে উঠবে। তাই ছোট-বড় আম বাগান পরিচর্যায় সময় ব্যয় করতে হয়। এছাড়াও বাগানের আগাছা পরিষ্কারসহ পোকা দমনে স্প্রে করা হচ্ছে কীটনাশক। এতে পোকা যেমন দূর হবে, তেমনি গাছে দেখা দেবে স্বাস্থ্যকর মুকুল।
রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, এবার বেশ আগাম মুকুল এসেছে। কিছু কিছু গাছে এখনই মুকুল আসতে শুরু করেছে। তবে কী পরিমান মুকুল আসবে সেটা বুঝে উঠতে আরো সময় লাগবে। আশা করছি গতবছর যেহেতু কম মুকুল এসেছে এবার বেশি মুকুল হবে।
রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক উম্মে সালমা বলেন, রাজশাহী কিছু কিছু গাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে। তবে মুকুল আসতে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত সময় লেগে যাবে। যে সব মুকুল আসছে এগুলো আগাম জাতের।
তিনি আরো বলেন, চাষিদের বাগান পরিচর্যা ওষুধ স্প্রে করার নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। আর চাষিরাও অধিক ফলনের আশায় সে অনুযায়ী কাজ করছেন। গতবছরের তুলনায় এবার মুকুল দেখে বেশি আসবে বলে মনে হচ্ছে। ফলনও বেশি হবে। কুয়াশায়ও তেমন ক্ষতি হবে না। ফলে এবার যে লক্ষমাত্র আমার নির্ধারণ করেছি সেটি পুরণ হবে।
কৃষি সম্প্র্রসারণ অধিদপ্তরের রাজশাহী অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক ড. মোতালেব হোসেন বলেছেন, গত বছর ২০২৪ ছিল আমের অফ ইয়ার। গত বছর যেসব আম গাছে প্রচুর ফল ছিল, সেসব গাছে এ বছর কম ফল ধরতে পারে। এই পরিস্থিতি আবহাওয়া, পরাগায়নের সমস্যা ও রোগবালাই বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। সাধারণত ২০ শতাংশ গাছে এক বছর পর পর ফল আসে। তবে এ কারণে ফলনের তারতম্য কমই ঘটে থাকে।
তিনি আরও জানান, রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ জেলায় আম বাগান বিগত পাঁচ বছরে অনেক বেশি সম্প্রসারিত হয়েছে যা চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রায় সমান। তবে উৎপাদনের মাত্রায় নওগাঁর উৎপাদন হার বেশি হওয়ার কারণ হলো, বাগানগুলো নতুন। রাজশাহী জেলার কথা প্রসঙ্গে তিনি জানান, রাজশাহীর দুর্গাপুর, বাঘা-চারঘাটসহ বিভিন্ন উপজেলার আবাদি জমি পুকুরে রূপান্তর করাতে ফসলি জমির সংকট হয়। এ কারণে অনেক কৃষক তাদের আম বাগান কেটে ফসলি জমি করেছে। এটি ভবিষ্যৎ খাদ্য শৃঙ্খলের জন্য হুমকি হিসেবে তিনি দেখছেন।