অক্টোবরেই দোহাজারী-কক্সবাজার পথে চলবে ট্রেন: রেল সচিব
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন দ্রুত সংস্কার করে অক্টোবরেই দোহাজারী-কক্সবাজার রেল যোগাযোগ চালু হবে বলে জানিয়েছেন রেল সচিব হুমায়ুন কবির।
শুক্রবার (১৮ আগস্ট) সকালে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় কেঁওচিয়া অংশে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রেলপথ পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
রেল সচিব বলেন, টেকনিক্যাল টিমের সঙ্গে বসে দ্রুত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন সারিয়ে তোলা হবে। সেপ্টেম্বরের দিকে সব কাজ শেষ করে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে ট্রায়াল রানের পর অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ চালু হবে।
রেললাইন প্রকল্পে পানির প্রবাহ ঠিক রাখতে পর্যাপ্ত সংখ্যক ব্রিজ-কালভার্ট না রাখায় রেল ট্র্যাকের ক্ষতি হয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগের জবাবে জানান অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা করেই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
প্রকল্প শুরুর আগে যে পরিমাণ কালভার্ট রাখার কথা ছিল তার চেয়ে বেশি কালভার্ট রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে আরও কালভার্ট দেওয়া হবে।
পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান, দোহাজারী-কক্সবাজার রেল-পরিচালক মো. মফিজুর রহমানসহ সংশ্লিষ্টরা।
সম্প্রতি দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নির্মাণাধীন দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন। রেললাইনের নিচ থেকে মাটি-পাথর সরে লাইন একে-বেঁকে গেছে সাতকানিয়ার বিভিন্ন অংশে।
এদিকে তমা কন্সট্রাকশন কর্তৃপক্ষ বলেছে, মন্ত্রালয়ের সিদ্ধান্ত পেলে রেললাইনের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ অল্প সময়ের মধ্যে সংস্কার করা সম্ভব। এজন্য প্রকল্পের কাজ শেষ করতে বাড়তি সময় লাগবে না।
চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেলপথের ৮৮ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। বাকি ১২ কিলোমিটার আগামী দেড় মাসের মধ্যে নির্মাণ শেষ করে অক্টোবর মাসেই বিশেষ এই প্রকল্প উদ্বোধন করার কথা ছিল।
জানা গেছে, দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প ২০১০ সালের ৬ জুলাই একনেকে অনুমোদন পায়। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। পরে এক দফা বাড়িয়ে প্রকল্পের মেয়াদ করা হয় ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। প্রকল্পে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। প্রকল্পের মেয়াদ বাড়লেও ব্যয় বাড়েনি।
২০১৬ সালের ২৭ এপ্রিল প্রকল্পটি ‘ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। রেলপথটি নির্মিত হলে মিয়ানমার, চীনসহ ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের করিডোরে যুক্ত হবে বাংলাদেশ।
প্রথম পর্যায়ে দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত নির্মাণ করা হচ্ছে ১০০ কিলোমিটার রেলপথ। যার প্রায় ৮০ ভাগের বেশি কাজ শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে রামু থেকে মিয়ানমারের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত ২৮.৭২৫ কিলোমিটার নতুন সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ ট্র্যাক নির্মিত হবে।