মৃত্যুও আলাদা করতে পারেনি বন্ধুত্বকে, সঙ্গী হলেন একে অপরের
বন্ধুর হাতে বন্ধু খুনের ঘটনা প্রায় শোনা যায়। তবে এবার মৃত বন্ধুর শেষ গোসল দিতে গিয়ে স্ট্রোক করে মৃত্যু হয়েছে আরেক বন্ধুর। যেটি কিনা নজিরবিহীন ঘটনা।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রামের হাটহাজারী পৌরসভার আজিম পাড়া এলাকায়।
নিহত দুজন হলেন হাটহাজারী পৌরসভার আজিম পাড়া এলাকার মূসা সওদাগরের ছেলে মোহাম্মদ আরাফাত ও তার বন্ধু একই এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে মোঃ আলী আজম। তাদের মধ্যে আজম সিএনজি অটোরিকশা চালক ও আরাফাত কাঠমিস্ত্রী ছিলেন।
স্থানীয় কামাল নামের একজন বলেন, সকালে নাস্তার জন্য দোকান থেকে রুটি এনেছিল আরাফাত। তারপর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে স্বজনরা তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। সকাল ৯ টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পরে তাকে গোসল দেওয়ার জন্য তার বন্ধু আজম এসে গোসলের পানি নিষ্কাশনের জন্য কুদাল দিয়ে গর্ত কুঁড়তে লাগলেন। এসম কাঁদতে কাঁদতে হঠাৎ বুকে ব্যথার কথা জানান তিনি। পরে তাকে দ্রুত হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে চমেক হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মোঃ শাহজাহান জানান, আজম বিবাহিত হলেও আরাফাত অবিবাহিত ছিল। কয়েকদিন ধরে তার বিয়ের কথা চলছিল। আজ ফর্দের (চূড়ান্ত কথা) তারিখ ছিল। তারা ছোটবেলা থেকেই একসঙ্গে বড় হয়েছে, বয়সও কাছাকাছি। ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল দুজন।
স্থানীয় কাউন্সিলর মোঃ আজম বলেন, তারা দুজন একসঙ্গে বড় হয়েছে, একই বাড়ির ছেলে। আরাফাতকে গোসল দেওয়ার সময় আজম দেখতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে হাসপাতাল নিয়ে গেলে সেও মারা যায়। দুজনের মৃত্যুই স্ট্রোকের কারণে হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
একসঙ্গে দুই বন্ধুর এমন মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পুরো এলাকায়। স্থানীয় সমাজপতি আইয়ুব খান লিটন বলেন, হঠাৎ তাদের এমন মৃত্যুতে পুরো এলাকায় শোকের মাতাম বইছে। সোমবার আসর নামাযের পর স্থানীয় মসজিদ মাঠে তাদের জানাজার নামায অনুষ্ঠিত হয়।