ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের আওতায় ২০২৪ সালে ফেনীতে ২৪ লাখ ৩৯ হাজার ৫৫০ টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও জেলাপ্রশাসন ফেনী।
অন্যদিকে ২০২৩ সালে শুধুমাত্র ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর কর্তৃক ৯ লাখ ৬১ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। সংশ্লিষ্টরা বলছেন বছরব্যাপী জরিমানা বাড়লেও কমেনি ভেজালের সংখ্যা, এখনও অরক্ষিত ভোক্তার অধিকার।
জেলাপ্রশাসনের দেয়া তথ্যমতে ২০২৪ সাল জুড়ে জেলা ও উপজেলা জুড়ে ভোক্তা অধিকার আইনে ১৭৮টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ৩২৩টি মামলায় ৩২৩ জন ব্যাক্তিকে ১৩ লাখ ১৩ হাজার ৫০ টাকা জরিমানা করা হয়।
অন্যদিকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যনুযায়ী ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭২ দিন অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। যার মধ্যে ১৪০ টি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে ১১ লাখ ২৬ হাজার ৫০০ টাকা। এরমধ্যে জানুয়ারি মাসে ৭ দিন অভিযান পরিচালনা করে ১৩টি প্রতিষ্ঠানকে ১ লাখ ৪৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ফেব্রুয়ারিতে ৫ দিন অভিযান পরিচালনা করে ৭টি প্রতিষ্ঠানকে ১ লাখ ৪৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। মার্চে ৭ দিন অভিযান পরিচালনা করে ১৬টি প্রতিষ্ঠানকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এপ্রিলে ৪ দিন অভিযান পরিচালনা করে ৬টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। মে মাসে ৮ দিন অভিযান পরিচালনা করে ১০টি প্রতিষ্ঠানকে ২ লাখ ১২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
জুন মাসে ৫ দিন অভিযান পরিচালনা করে ৮টি প্রতিষ্ঠানকে ৬১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জুলাই মাসে ৩ দিন অভিযান পরিচালনা করে ৬টি প্রতিষ্ঠানকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। আগস্ট মাসে ১ দিন অভিযান পরিচালনা করে ১টি প্রতিষ্ঠানকে ৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সেপ্টেম্বর মাসে ৭ দিন অভিযান পরিচালনা করে ১০ টি প্রতিষ্ঠানকে ৯৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অক্টোবর মাসে ৯ দিন অভিযান পরিচালনা করে ২৩টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৬ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। নভেম্বর মাসে ৯ দিন অভিযান পরিচালনা করে ২৬টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং ডিসেম্বর মাসে ৭ দিন অভিযান পরিচালনা করে ১৪টি প্রতিষ্ঠানকে ৫৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এসব বিষয়ে কথা হয় শহরের কয়েকজন ব্যবসায়ীর সাথে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, অনেক ব্যবসায়ীরা আছে যারা আইন মেনে চলেনা।জরিমানার পরেও তারা সচেতন হয়না। যার কারনে ভোক্তার আইন অরক্ষিতই থেকে যায়।
সায়েম উল্ল্যাহ নামে এক কলেজ শিক্ষার্থী বলেন, বাজারে গেলে শুনি শুধু অভিযান হয় তবুও কারও মধ্যে সচেতনতা দেখিনা।।সচেতনতা বাড়াতে সবার সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
এ বিষয়ে এ বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ফেনীর সহকারী পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো: কাউসার মিয়া বলেন,ভোক্তা এবং ব্যবসায়ী কেউই সচেতন নয়। ব্যবসায়ীরা নৈতিকতার দিকে নজর দেয় না। তারা তাদের লভ্যাংশ চিন্তা করে। অন্যদিকে ভোক্তারাও প্রতিবাদ করে না। যার কারনে ভোক্তার আইন বাস্তবায়ন হয় না।
তিনি বলেন, আইন বাস্তবায়নে ক্ষমতা দেয়া উচিত। মাঠ পর্যায়ে আইন বাস্তবায়ন না করতে পারলে আইন লঙ্গন হবে। আইনের পূর্ন ক্ষমতা প্রতিষ্ঠানকে দিতে হবে। ভোক্তা অধিকারকে সম্পূর্ণ ক্ষমতা দেয়না পাশাপাশি আইন বাস্তবায়নে লোকবল ও কম যা ভোক্তা অধিকারের নেই। এটি বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে লোক বাড়াতে হবে। নিয়মিত কর্মকর্তা দিতে হবে।
এ কর্মকর্তা বলেন, কয়দিন পর পর জিনিসের দাম বাড়ে।এটার সাথে অনেকগুলো দপ্তরের সম্পর্ক আছে। ভোক্তার কাজ বাজারে আসার পর অধিকার লঙ্গন হয় কিনা তা যাচাই করা। কিন্তু বাজারে আসার আগে এসব দেখার কথা কৃষি বিপনন কর্মকর্তার। এরপর ভোক্তা অধিকার ও জেলাপ্রশাসন দেখবে। সব দফতর একযোগে বাস্তবায়ন করলে ভোক্তার অধিকার বাস্তবায়ন হবে।