স্মার্ট দেশ গড়তে প্রযুক্তির দক্ষতা কাজে লাগাতে হবে: স্পিকার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে প্রযুক্তির দক্ষতাকে কাজে লাগাতে হবে। ইন্টারনেট ও স্মার্ট ফোন এখন সবার হাতে হাতে। বিশ্বের প্রতিটি খবর মুহুর্তের মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে ব্যাপক কার্যক্রম গড়ে তুলছে। শুধু রাজধানী বা শহরে নয়, প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানী মিরপুরে মটসের নিজস্ব ক্যাম্পাসে আয়োজিত সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় কারিগরি শিক্ষাকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যে কাজটি কারিতাস ১৯৭২-৭৩ সালে গুরুত্ব বুঝেছে। তারা কৃষি ভিত্তিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার চিন্তা করেছিল। যা এখনো অপরিহার্য। তাই এই সকল কারিগরি শিক্ষার ভিন্ন একটি বিভাগ করা হয়েছে। 

আজকে আমরা দেখছি দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা এমনকি প্রত্যন্ত এলাকায়ও ল্যাপটপ নিয়ে বাড়িতে বসে ফ্রিল্যান্সাররা কাজ করছে। তারা ঘরে বসে আয় করছে। তারা প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষতা অর্জন করেছে। সরকার তাদেরকে প্রশিক্ষিত করেছে। এটা সত্যিই অভাবনীয় ব্যাপার। পাশাপাশি নারী শিক্ষার্থীরা যেন পিছিয়ে না যায় সে দিকেও  খেয়াল রাখা হচ্ছে। তাদেরও সমানভাবে প্রশিক্ষণের অংশ করা হচ্ছে। কারণ একটি বিষয় প্রমাণিত দক্ষ জনশক্তি ও মানবসম্পদ উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই। আমরা বিপুল জনসংখ্যার দেশ। যার অধিকাংশ তরুণ। তাই আমরা ডেমোগ্রাফিক রেমিট্যান্স বিষয়টি উপভোগ করছি। কিন্তু বিশ্বের অন্য দেশে বেশির ভাগ মানুষ বয়স্ক। তারা অন্য সমস্যা মুখোমুখি হচ্ছে। আমাদের এই তরুণ জনশক্তি আমাদের প্রাণ শক্তি। তাদের দক্ষ করে গড়ে তুললে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।

জানা গেছে, কারিতাস বাংলাদেশের ট্রাস্টের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান 'মটস'। এতে দেশ বিদেশ থেকে  প্রায় তিন হাজার প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী, প্রশিক্ষক এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিতিত ছিলেন। অনুষ্ঠান উদ্বোধন ঘোষনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর ড. আতিউর রহমান।

স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে মটসের অবদানের কথা স্মরণ করে বক্তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, মটসের কার্যক্রম আরো সম্প্রসারণ করে জনশক্তি তৈরিতে ভূমিকা রাখুক। দিনব্যাপি এই অনুষ্ঠানে ডকুমেন্টারী প্রর্দশন, ক্রেস্ট বিতরণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন করা হয়।  

 

মটস কারিগরি শিক্ষার এক দিকপাল

১৯৭৩ সালে থেকে দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ মানব সম্পদ তৈরি ও মানসম্মত উৎপাদনে মটস দেশে ও দেশের বাইরে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। শুরুতে 'কোর' (কারিতাস বাংলাদেশ)-এর ত্রাণ ও পুনর্বাসন প্রকল্পের কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি, যানবাহন মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা হত। যুগোপযোগী চাহিদা ও দেশের কারিগরি প্রশিক্ষণের প্রয়োজনে মটস বর্তমান সময় পর্যন্ত কারিগরি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। শুরুতে ৩ বছর মেয়াদি লং টার্ম মেকানিক্যাল কোর্স চালু হয়। অটোমোবাইল ও মেশিনিস্ট ট্রেডে এযাবৎ সময়ে ১,৭৪৪ জন শিক্ষার্থী প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করে বিশ্বব্যাপী পেশাগত কাজে কর্মরত রয়েছে। ১৯৮০ থেকে বিভিন্ন এনজিও এবং প্রাইভেট সেক্টরের চাহিদার ভিত্তিতে ৪-১৪ সপ্তাহের সংক্ষিপ্ত কোর্স চালু রয়েছে যা মডুলার কোর্স নামে পরিচিত। প্রায় ৪৮ হাজার ৭৯৪ জন বেকার বা অদক্ষ যুবককে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দেশে দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি করেছে মটস। মটস-এ রয়েছে বিদেশগামী টেকনিশিয়ানদের জন্য স্কিল টেস্ট পরীক্ষার ব্যবস্থা। কারিগরি শিক্ষাকে আরও উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য মটস ২০০৪ থেকে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অনুমোদনে শুরু করে ৪ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স। ইতোমধ্যে ১ হাজার ৭৪৫ জন প্রশিক্ষণার্থী এই কোর্স শেষ করে নিজ নিজ পেশায় নিয়োজিত রয়েছে। অনেকে উচ্চ শিক্ষার জন্য দেশে ও বিদেশে অবস্থান করছে।

   

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতামূলক নেতৃত্বের আহ্বান সায়মা ওয়াজেদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এ অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের মধ্যে সমন্বয়ের ওপর জোর দিয়েছেন সংস্থার দক্ষিণপূর্ব এশিয়া বিভাগের প্রধান সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।

ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লিতে ডব্লিউএইচওর এক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার স্বাস্থ্য খাতে উন্নয়নে সায়মা ওয়াজেদ বলেন, এই অঞ্চলের স্বাস্থ্য খাতে উন্নয়নের জন্য কোন কোন কর্মসূচিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে, সে সম্পর্কিত একটি নতুন রোডম্যাপ তৈরি করা প্রয়োজন। এই ভৌগলিক অঞ্চলের সব দেশের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে যদি তা তৈরি হয়, তাহলে দক্ষিণ এশিয়ার স্বাস্থ্যখাতের মূল সমস্যাগুলো শনাক্ত করা সহজ হবে বলে মনে করেন তিনি।

তিনি বলেন, নারী, শিশু, শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধকতার শিকার এবং প্রান্তিক লোকজনকে অগ্রাধিকার দিয়ে প্রস্তাবিত নতুন কর্ম পরিকল্পনা ও কৌশল প্রণয়ন করা প্রয়োজন এবং যদি তা ঘটে তাহলে একদিকে যেমন ডব্লিউএইচওর কার্যকলাপের সঙ্গে নতুন অংশীদারদের সংযোগ ঘটবে, অন্যদিকে সব দেশের সহযোগিতার ভিত্তিতে একটি সমন্বিত নেতৃত্বও গঠন হবে, যা সংস্থার কর্মসূচিক এগিয়ে নিয়ে যাবে।

নয়াদিল্লির সম্মেলনে ডব্লিউএইচও’র দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার সদস্যরাষ্ট্রগুলোর প্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের বিভিন্ন কর্মসূচির রোডম্যাপ এখন আপনাদের হাতে। আপনারা সবাই এসব কর্মসূচির অংশীদার। এটা আমার একার রোডম্যাপ নয়, বরং আমাদের। তাই ডব্লিউএইচও’র পক্ষ থেকে আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ সদিচ্ছা, অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করুন।

সূত্র : ইউএনবি

;

দুই জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কক্সবাজার এবং সিলেটে সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর সমূহের জন্য দেয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানা গেছে।

এতে বলা হয়, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তরপশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে বুধবার (১ মে) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে, সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

;

পটুয়াখালীতে বালিচাপা দেওয়া অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার 



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, পটুয়াখালী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

পটুয়াখালীতে বালির স্তুপ থেকে এক ৪০ বছর বয়সী অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (১ মে) রাত ৭ টায় সদর উপজেলার শিয়ালি এস এস ফিলিং স্টেশনের পাশে বালির স্তুপ থেকে ওই অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। 

স্থানীয়রা জানান, বুধবার বিকেলে দোকান খোলার পরে পচা দূর গন্ধে বসা যাচ্ছিলো না। পরে চৌকিদারকে কল দিলে চৌকিদার খোঁজ করতে করতে বালির স্তুপের ভিতরে থেকে একটি হাত দেখতে পায়। পরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে এক অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে। 

পটুয়াখালী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম সজল বলেন, বালির স্তুপ সরিয়ে অজ্ঞাত এক পুরুষের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতের পরিচয় শনাক্তে কাজ চলছে। ধারণা করা হচ্ছে দুই দিন আগে ওই ব্যক্তিকে হত্যা করে বালিচাপা দেওয়া হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতার অভিযান শুরু হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

;

শুধু মে দিবসই নয়, ঈদেও ছুটি মেলে না চাতাল শ্রমিকদের



আল মামুন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মহান মে দিবস বা আন্তর্জাতিক শ্রম দিবস কি জানে না জেলার চাতাল শ্রমিকরা। মে দিবসে সরকারিভাবে বন্ধ থাকলেও কাজ চালিয়ে যেতে হয় তাদের। জীবনের সাথে যুদ্ধ ও হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে কোনোরকমে বেঁচে আছেন তারা। চাতাল শ্রমিকরা দিন রাত বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে ধান থেকে চাল উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের কোটি কোটি মানুষের চালের দাহিদার যোগান দেন। সেই চাতালের নারী ও পুরুষ শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে যুগের পর যুগ বঞ্চিত হয়ে আসছেন। শুধু মে দিবসই নয় ঈদেও মেলেনা ছুটি।

সরেজমিনে জেলার চাতাল কলগুলোতে গিয়ে জানা যায়, ১৯৮০ সালের প্রথম দিকে জেলার আশুগঞ্জে চাতাল কলের গোড়াপত্তন শুরু হয়। ধীরে ধীরে সড়কপথ, রেলপথ ও নৌপথে যোগাযোগ সহজ ও অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার কারণে এখানে এ শিল্পের দ্রুত প্রসার ঘটে। এছাড়াও এখানে দেশের অন্যতম বৃহত্তম আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র ও গ্যাসের সহজলভ্যতার কারনে চাতাল কল স্থাপন দিনে দিনে বৃদ্ধি পেতে থাকে।

দেশের পূর্বাঞ্চলীয় বৃহত্তর ধান ও চাউলের মোকাম ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রয়েছে প্রায় ৩’শতাধিক চাতালকল। আর এখানে নিয়োজিত আছে প্রায় ১০ সহস্রাধিক নারী ও পুরুষ শ্রমিক। যারা দিনে রাতে কাজ করছেন ধান থেকে চাল উৎপাদন কাজে। এ চাতাল কলগুলো থেকে প্রতিদিন ৩০/৩৫ হাজার টন চাল দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে। আর এই চাতাল কলগুলোতে ধান সিদ্ধ করা থেকে শুরু করে চাউল বস্তাবন্দী করা পর্যন্ত সকল কাজ করতে হয় নারী ও পুরুষ শ্রমিকদের। তাদের বাড়ি কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, বরিশাল, সাতক্ষীরা, নওগাঁ ও ময়মনসিংহ সহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায়। আন্তর্জাতিক শ্রম দিবস বা মে দিবস কি তারা জানেন না। এই দিনে সরকারিভাবে ছুটির কথা থাকলেও কাজ করতে হয় চাতাল শ্রমিকদের।

শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে যুগের পর যুগ বঞ্চিত হয়ে আসছেন

ভাই ভাই অটো রাইস মিলের শ্রমিক কালা মিয়া বলেন, প্রায় ৮ বছর যাবত চাতাল মিলে কাজ করে যাচ্ছি। এখন পর্যন্ত কোনদিন মে দিবসের ছুটি আমাদের মালিকরা দেন নাই। সরকারিভাবেও এমন নির্দেশনা আছে কিনা আমার জানা নাই।

খান মোহাম্মদ অটো রাইস মিলের চাতাল শ্রমিক মো. হানিফ মিয়া বলেন, মে দিবস বা আন্তর্জাতিক শ্রম দিবসের কথা কখনো শুনি নাই। এই দিনে আমরা কখনও কোনদিন কাজ বন্ধ রাখি নাই। কাজ না করলেতো পেটে খাবার মিলবে না। তাই কাজ করে যাই; ছুটির চিন্তা করি না।

চাতাল কন্যা মরিয়ম বেগম আক্ষেপ করে বলেন, মানুষের ঘুরাঘুড়ি করার অনেক ইচ্ছা থাকে। তারা তা করতেও পারে। আমাদেরও ইচ্ছা করে অন্য মানুষদের মত বিভিন্ন উৎসবে একটু বেড়ানোর। কিন্তু আমাদের দ্বারা তা আর সম্ভব হয় না।

আরেক চাতাল কন্যা রুমা বেগম  বার্তা২৪.কমকে বলেন, মানুষ যখন বিভিন্ন দিবসে ঘোরাঘুড়ি করে তখন আমার অনেক খারাপ লাগে। কারন প্রায় ৭ বছর যাবত আমি কাজের কারনে স্বশুর বাড়িতে যেতে পারি না। কোন ভাবেই কয়েকটা দিন বন্ধ করতে পারি না। ছুটি চাইলেও আমাদের ছুটি দেওয়া হয়না। আর আমাদের বেতন হয় উৎপাদন অনুযায়ী। তাই ইচ্ছা করলেই পেটের খাবার জোগার করার কথা চিন্তা করে যেতে পারি না।

এদিকে ভাই ভাই অটো রাইস মিলের মো. অলিউল্লাহ বার্তা২৪.কমকে বলেন, আসলে মালিকের সাথে চুক্তি অনুযায়ী ও উৎপাদন অনুসারে তাদের কাজ হয়। তাই বন্ধ করা না করা এটা তাদের ব্যাপার। আর চাতাল শ্রমিকরা অনেককেই শিক্ষিত নয়। তাই তারা মে দিবস সম্পর্কে তেমন কিছু জানেন না। তবে তারা যদি এই দিন কাজ না করতে চান এই ক্ষেত্রে মালিকের পক্ষ থেকে কোন বাধা নিষেধ নেই।

বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ এর আশুগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক তানশেন আহমেদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, অনেক চেষ্টা করেছি মালিক ও শ্রমিকদের বুঝানোর জন্য। রাইস মিল মালিক ও সরদারের জন্য আমরা পারি না। শ্রমিকদের সাথে কথা বলেছি কিন্তু সরদার এই জিনিসটা তারা বুঝাতে দেয় না। মালিকরা তাদের দিয়ে কাজ করায়।

কাজ করে যান; ছুটির চিন্তা করেন না

বিভিন্ন সময়ে এসব দাবি নিয়ে আমরা মালিকেদের সাথে আলোচনা করলেও এখন পর্যন্ত কোনো দাবিই তারা মানেনি। তাই মে দিবসে সরকারি বন্ধ পালনসহ চাতাল শ্রমিকদের নূন্যতম মাসিক মজুরি প্রদানের জন্য চাতাল মালিকদের সমন্বয়ে একটি নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান জানাচ্ছি।

জেলা রাইস মিল মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি মো. বাবুল আহমেদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, দেশে বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান থাকলেও এ অবহেলিত ও বঞ্চিত শ্রমিকদের পাশে তাদের কাউকেই দেখা যায়নি। জেলার রাইস মিল গুলোতে শ্রমিক দিবসে কোন বন্ধ থাকে না। সরকারিভাবে কোন উদ্যোগ নিলে আমরা সেভাবে ব্যবস্থা নেব। অবশ্যই এই দিনে শ্রমিকদের বন্ধ থাকা দরকার।

এই বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, জেলার চাতালকলগুলোতে শ্রমিকদের মে দিবসে কোন বন্ধ থাকে না বিষয়টি আমার জানা নাই। যেহেতু জেনেছি তাদের যেন মে দিবসে কাজ বন্ধ থাকে সেই বিষয়ে চাতাল মালিকদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

;