পরিবেশ রক্ষায় স্পেশাল গ্রীন গার্ড তৈরির দাবি 

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪. কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

হেরিটেজ, অভয়ারণ্য, নদী, সুন্দরবনসহ পরিবেশ রক্ষায় গ্রীণ গার্ড (সবুজ পুলিশ) তৈরি করার দাবি তুলেছে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)। পরিবেশবাদী এই সংগঠনের দাবি, পুলিশ ফোর্সের ভিতরে বিশেষ 'গ্রীণ গার্ড'(সবুজ পুলিশ) তৈরি করতে হবে।

দেশের হেরিটেজ ও অভয়ারণ্য, নদী, সুন্দরবন সহ বিশেষ বিশেষ জায়গায় থাকবে গ্রীণ গার্ড। কিন্তু এই গ্রীণ গার্ড শুধু পুলিশ বাহিনীকে দিয়ে তৈরি করলে হবে না। নাগরিকদের মধ্যে থেকে সবুজ সৈনিকও তৈরি করতে হবে। তারা যৌথভাবে পরিবেশ রক্ষায় কাজ করবে।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে, ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) কর্তৃক আয়োজিত
'হাতিমারা কৃত্রিম জলাশয় ও চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য' বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে বক্তরা এ দাবি তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে ধরা'র সহ আহ্বায়ক শারমিন মুরশিদ চুনতি হাতিমারা কৃত্রিম হ্রদের বাঁধ কাটার ঘটনাটি উল্লেখ করে বলেন, 'চুনতি অভয়ারণ্য উজাড়ের পেছনে সংসদ থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত সবাই জড়িত রয়েছে। বন বিভাগ সরকারি চাপকে ভয় পায়। তারা উচ্ছৃঙ্খল  ব্যবসায়ীদের ভয় পায়। কিন্তু তারাই বনরক্ষার কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে ব্যবসায়ীদের উচ্ছৃঙ্খলতা বেপরোয়া। তারা বন দখল করে। তাদের সহযোগীতা করে সাধারণ মানুষের একটি অংশ।' 

বিজ্ঞাপন

ধরা'র সদস্য সচিব শরীফ জামিল বলেন, 'পরিবেশ রক্ষায় আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। বন উজাড় করা বন্ধ করতে হবে। আমাদেরকে স্থানীয়ভাবে শক্তিশালী হতে হবে। অক্সিজেনের ভাণ্ডার হলো গাছ। বনগুলোকে আমাদের রক্ষা করতে হবে।' 

চুনতি অভয়ারণ্য রক্ষায় সরকার জোরদার পদক্ষেপ নিয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে শরীফ জামিল বলেন, 'সরকারের যথেষ্ট পদক্ষেপ থাকলে তো চুনতি অভয়ারণ্যের এমন অবস্থা কখনোই হতো না।' 

‘চুনতি রক্ষায় আমরা’ এর সমন্বয়ক সানজিদা রহমান একটি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। সেখানে বলা হয়, চট্টগ্রামের বাঁশখালী, লোহাগাড়া ও সাতকানিয়া উপজেলা এবং কক্সবাজারের চকরিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। প্রয়োজনাতিরিক্ত পাহাড় কেটে রেল লাইন স্থাপন, বনের ভেতর অবৈধ বসতি প্রতিষ্ঠা, হাজার হাজার একর জমি বন্দোবস্ত ও বেআইনি কেনাবেচা, পাহাড় কাটা, প্রাকৃতিক বন ও বন্যপ্রাণী নির্বিচারে নিধন করে অননুমোদিত ইটভাটায় সরবরাহ করা এবং সামাজিক বনায়নসহ বিভিন্ন প্রকল্পের নামে সেখানে নেতিবাচক প্রভাবে প্রাকৃতিক ভারসাম্য হুমকির মুখে ঠেলে দেয়ার ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত।

এমনকি হাতির চলাচলের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা ও হাতি মেরে ফেলার মতো ঘটনা ঘটেছে এবং বনের বিশাল এলাকাজুড়ে বাঁধ দিয়ে কৃত্রিম  জলাশয় তৈরি করার মত গর্হিত কাজ চুনতিতে ঘটেছে।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, সরকারকে জন-সম্পৃক্ত ও বিজ্ঞানভিত্তিক একটি সমন্বিত পরিকল্পনার স্বল্পমেয়াদী, মধ্যমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা এবং স্বচ্ছ বাস্তবায়নের মাধ্যমে চুনতি রক্ষায় দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন। সেইসঙ্গে, ইতিমধ্যে ঘটে যাওয়া সংশ্লিষ্ট ঘটনা ও পদক্ষেপসমূহের ন্যায্য বিশ্লেষণ ও দোষীদের দ্রুত শাস্তির দাবিও জানানো হয়।

ধরা'র সহ আহ্বায়ক শারমিন মুরশিদের সভাপতিত্বে এবং ধরার সদস্য সচিব শরীফ জামিলের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ধরা'র সহ আহ্বায়ক এম এস সিদ্দিকী, সদস্য আব্দুল করিক হিম, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী।