১ টাকায় মাছ-তেল কিনে খুশি সিলেটের নিম্ন আয়ের মানুষ
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে সিলেটে মাত্র ১ টাকায় মাছ-তেল ক্রয় করে খুশি নিম্ন আয়ের দেড়শতাধিক মানুষ। ১০ টাকার একটি টোকেন দিয়ে এক থেকে দেড় হাজার টাকার নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী সংগ্রহ করেন সুবিধাবঞ্চিত ও নিম্ন আয়ের মানুষরা।
শনিবার (২ মার্চ) আসন্ন রমজানকে সামনে রেখে সিলেট নগরীর তেমুখীস্থ একটি কমিউনিটি সেন্টারে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এ আয়োজন করা হয়।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর মধ্যে ছিলো চাল, ডাল, তেল, ছোলা, আটা, নুডলস, লবণ, চিনি, মাছ, মুরগি, খাতা-কলমসহ নির্দিষ্ট ১৫টি পণ্যের মধ্যে ১০টি পণ্য ক্রয় করেন সুবিধাবঞ্চিত লোকজন। এরমধ্যে প্রতিটি পণ্যের মূল ধরা হয়েছে ১টাকা। তাই ১০টাকায় ১০টি পণ্য দুস্থ ও অসহায় মানুষরা চাহিদা মতো বাজার করে মহাখুশি।
বর্তমান বাজারে যখন এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৮০ টাকা এখানে মাত্র ১ টাকায় তেলে বিক্রি করা হয়। এক ডজন ডিম, বড় একটি নুডলস পাওয়া যায় মাত্র ১ টাকা করে। এছাড়াও ২৫০ টাকার ব্রয়লার মুরগি এখানে পাওয়া যায় পাঁচ টাকায়। মূলত দুস্থদের পাশে দাঁড়ানোর উদ্দেশ্যে সারা বছর জুড়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে এই ধরনের বাজারের আয়োজন করা হয়। এবছর ২০ হাজার পরিবারের মধ্যে এসব পণ্যসামগ্রী ১০টাকার বিনিময়ে বিতরণ করা হবে।
বাজার করতে আসা রহিমা বেগম নামে একজন বলেন, ১০ টাকার বাজারে এসে খুব ভালো লাগছে। এত কম দাম জিনিস পাওয়ার কথা চিন্তা করতে পারি নাই। এই বাজারের ব্যবস্থা করায় সত্যি খুব খুশি হয়েছি। কেনাকাটা করে মন ভরে খেতে পারবো। এবারের রমজানে এই বাজার খুব কাজে দিব।
টুকেরবাজার এলাকার বৃদ্ধ মহিলা আমেনা খাতুন বলেন, পাইছিরে বাবা আল্লাহ তোমরারে হায়াত দেউক্কা।আল্লাহ গেছে দোয়া করি। ১০ টাকায় চাল, তেল, মাছ, ডিম, ছোলা কিনতে পেরে।’
এসময় তিনি অশ্রুশিক্ত হয়ে আল্লাহ কাছে দোয়া করেন এবং স্বেচ্ছাসেবকে জড়িয়ে ধরে দোয়া করেন।
আব্দুল হামিদ নামে আরেকজন বলেন, সামনে রমজান মাস। দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাচ্ছে। যাদের সামর্থ্য আছে শুধু তারা বাজার করছে। আসলে খুব আনন্দিত আমরা। আল্লাহ কাছে দোয়া করবো।
এবিষয়ে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবক রানা আহমেদ বলেন, সিলেটে ১৬০টি পরিবার মাত্র ১০ টাকায় যে পণ্যগুলো কিনেছেন তার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা। সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পণ্য বাছাই করে নিজের ক্রয় করার স্বাধীনতা তৈরি করতে এ ধরনের আয়োজন করা হয়েছে। আর তারা যেন কোনোভাবেই মনে না করেন যে এটি কোনও দান, এজন্য নামমাত্র মূল্য নেওয়া হয়েছে।