তিস্তার চরে গমের বাম্পার ফলন
চলতি মৌসুমে তিস্তার চরাঞ্চলের চাষিরা তামাকের পরিবর্তে গম চাষ করেছেন। এতে পাল্টে গেছে চরের অতীত চিত্র। খুশি চরাঞ্চলের কয়েক হাজার কৃষক পরিবার।
সরেজমিনে তিস্তার চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় গম চাষে আগ্রহ বাড়ছে তাদের।
দেখা যায়, তিস্তা নদীতে জেগে উঠা চরে গমচাষের সমারোহ, চরজুড়ে শোভা পাচ্ছে সবুজ আর সোনালী গমের শীষ। ইতোমধ্যে গম পাকতেও শুরু করছে। অথচ কালের বিবর্তনে দিন দিন বিলুপ্তির পথে যেতে বসেছিল গম চাষ।
একটা সময় ছিল যখন উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ব্যাপকভাবে গমের চাষ হতো। কিন্তু বর্তমানে কৃষক আলু চাষের দিকে বেশি ঝুঁকেছে। যার ফলে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে গমের চাষ। চলতি বছরে কাউনিয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে গমের চাষ হয়েছে। ফলন বাম্পার, এতে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি বিভাগ জানান, এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণ জমিতে গম চাষ হয়েছে। গমের বাম্পার ফলনের আশা কৃষকদের। অনুকূল আবহাওয়া ও আধুনিক প্রযুক্তিতে কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি হওয়ায় স্বল্প খরচে যথা সময়ে গমের বাম্পার ফলন পাবে আশা করা যায়।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গত বছর ২৩০ হেক্টর জমিতে গম চাষ হলেও এ বছর তা বেড়ে ২৬০ হেক্টর হয়েছে। চলতি মৌসুমে গম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯২২ মেট্রিক টন।
গোন্ডেনের ঘাট এলাকার গমচাষি জলিল, চারুভদ্র গ্রামের সোবহান, পাঞ্জরভাঙ্গা গ্রামের আনারুলসহ আরও অনেকে জানান, গত বছর গমের ভালো ফলন ও দাম পাওয়ায় এবছর বেশি জমিতে গম চাষ করেছেন। এছাড়া গম চাষে খরচ কম, ফলন বেশি দামও ভাল পাওয়ায় আমরা লাভবান।
তারা আরও বলেন, কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা আমাদের গম চাষে উদ্বুদ্ধ করাসহ সঠিক সময়ে প্রণোদনা হিসেবে উন্নত জাতের বিনা মূল্যে গম বীজ ও সার প্রদান করায় আমরা উপযুক্ত সময়ে গম চাষ করতে পেরেছি। প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে বাম্পার ফলনের আশা করছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহানাজ পারভীন জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গমের ফলন চলতি মৌসুমে অত্যন্ত ভাল হয়েছে। সঠিক সময়ে কৃষকদের মাঝে কৃষি প্রণোদনা হিসেবে উন্নত জাতের গম বীজ ও সার সরবরাহ করা হয়েছে।