রমজানে সুলভ মূল্যে বিক্রি করা হবে দুধ, ডিম, মাংস ও মাছ
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান বলেছেন, রমজানের শুরু থেকে মাসব্যাপী সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম, মাংস ও মাছ বিপণন করার ভ্রাম্যমাণ ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে।
তিনি জানান, তার মন্ত্রণালয় আসন্ন রমজান মাসে জনসাধারণের জন্য প্রাণিজ আমিষের চাহিদা মেটাতে এ কর্মসূচী হাতে নিয়েছে।
এ কর্মসূচির আওতায় তরল দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা, গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬০০ টাকা, খাসির মাংস প্রতি কেজি ৯০০ টাকা, ড্রেসড ব্রয়লার প্রতি কেজি ২৫০ টাকা এবং ডিম প্রতিটি ৯.১৭ টাকা (১ ডজন ১১০ টাকা) দরে বিক্রয় করা হবে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে রবিবার (১০ মার্চ) পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষ্যে ভ্রাম্যমান বাজারে সুলভমূল্যে দুধ, ডিম, মাংস ও মাছ বিপণন কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদানকালে মন্ত্রী এ সব কথা জানান।
মন্ত্রী জানান, ২৮ রমজান পর্যন্ত দুধ, ডিম ও মাংস বিপণন ব্যবস্থা রাজধানী ঢাকার ২৫টি স্থানে পরিচালিত হবে। তাছাড়া স্থায়ী বাজারে আরও ৫টি স্থানসহ মোট ৩০টি পয়েন্টে এই বিক্রয় ব্যবস্থা চালু থাকবে।
ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্রগুলো হলো: নতুনবাজার (বাড্ডা), কড়াইল বস্তি (বনানী), খামারবাড়ী (ফার্মগেট), আজিমপুর মাতৃসদন (আজিমপুর), গাবতলী, দিয়াবাড়ী (উত্তরা), জাপান গার্ডেন সিটি (মোহাম্মদপুর), ষাটফুট রোড (মিরপুর), খিলগাঁও (রেল ক্রসিংয়ের দক্ষিণে), সচিবালয়ের পাশে (আব্দুল গনি রোড), সেগুন বাগিচা (কাঁচা বাজার), আরামবাগ (মতিঝিল), রামপুরা, কালসী (মিরপুর), যাত্রাবাড়ী (মানিকনগর গলির মুখে), বসিলা (মোহাম্মদপুর), হাজারীবাগ (শিকশন), লুকাস (নাখালপাড়া), আরামবাগ (মতিঝিল), কামরাঙ্গীর চর, মিরপুর ১০, কল্যাণপুর (ঝিলপাড়া), তেজগাঁও, পুরান ঢাকা (বঙ্গবাজার), কাকরাইল।
স্থায়ী বাজারগুলো হলো-মিরপুর শাহ আলি বাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, নতুন বাজার (১০০ ফুট), কমলাপুর, কাজি আলাউদ্দিন রোড (আনন্দবাজার)।
পণ্যগুলো বিক্রয়ের জন্য সুসজ্জিত পিকআপ কুলভ্যান ব্যবহার করা হবে। প্রতিটি বিক্রয় কেন্দ্রে সকাল ৯ টার মধ্যে পণ্যগুলো নিয়ে কুলভ্যানগুলো পৌঁছে যাবে এবং সকাল ১০ টা থেকে বিপনন শুরু হবে বলে মন্ত্রী জানান।
এ ছাড়া রমজান মাসে বাজারে মাছের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে এবং মূল্য ক্রেতাদের নিকট সহনীয় রাখতে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ক্রেতাদের নিকট মৎস্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৪টি ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৪টি নির্ধারিত স্থানে মাছ বিক্রয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন বঙ্গবন্ধু চত্বর, খামারবাড়ি, ফার্মগেট, মিরপুর-১ (ঈদগাহ মাঠ), সেগুন বাগিচা বাজার, মেরুল বাড্ডা বাজার এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন মুগদাপাড়া (মদিনাবাগ বাজার), যাত্রাবাড়ী (দয়াল ভরসা মার্কেট), মতিঝিল (বাংলাদেশ ব্যাংকের দক্ষিণ-পূর্ব কর্ণার) ও পলাশী মোড়ে এ কর্মসূচি পরিচালিত হবে।
রুই-মাছ প্রতি কেজি ২৪০ টাকা, পাঙ্গাস প্রতি কেজি ১৩০ টাকা, তেলাপিয়া মাছ প্রতি কেজি ১৩০ টাকা এবং পাবদা মাছ প্রতি কেজি ৩৩০ টাকা দরে বিক্রয় করা হবে। প্রতিদিন বেলা ১০.০০ ঘটিকা হতে বিকাল ৩.০০ ঘটিকা পর্যন্ত মাছ বিক্রয় কার্যক্রম চলমান থাকবে বলে মন্ত্রী জানান।
আগামীকাল ১১ মার্চ থেকে শুরু হয়ে রমজান মাসের ১৫ দিন পর্যন্ত প্রতিদিন এসব স্পটে মাছ বিক্রয় করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, কার্যক্রমটি তদারকি ও মনিটরিং করার জন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি সার্বক্ষণিক মাঠে থাকবে।
পাশাপাশি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প, বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস এসোসিয়েশনের এবং দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাত প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও প্রতিনিধিবৃন্দ মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর বাস্তবায়নাধীন প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল এবং দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাত প্রতিষ্ঠানগুলো এ কাজে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করছে।
উল্লেখ্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় চতুর্থবারের মতো রমজান মাসে সুলভমূল্যে ভ্রাম্যমাণ দুধ, ডিম ও মাংস বিপণনের এ কার্যক্রম গ্রহণ করছে।
অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন, অতিরিক্ত সচিব এটিএম মোস্তফা কামাল, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মো. আলমগীর বক্তব্য প্রদান করেন।