ছাদে সৌর বিদ্যুতের সম্ভাবনা বিপুল

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

চ্যালেঞ্জ থাকলেও বাংলাদেশে ছাদে সৌর বিদ্যুতের সম্ভাবনা বিপুল। সচেতনতার অভাব ও সোলার প্যানেল আমদানিতে ডিউটির উচ্চহার প্রধান অন্তরায় হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।

বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিস (আইইইএফএ) ও এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ারের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ভার্চুয়াল সেমিনারে এমন মতামত উঠে আসে।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ারের এডিটর মোল্লাহ আমজাদ হোসেন।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, বাংলাদেশ সঠিক পথেই রয়েছে। আমাদের গ্রিডের সীমাবদ্ধতা রয়েছে এ কথা সত্য; তবে আমরা পরমাণুর মতো জটিল সিস্টেমের জন্য প্রস্তুত হচ্ছি। তার তুলনায় এগুলো কিছুই না।

তিনি বলেন, ছাদে সৌর বিদ্যুতের বিষয়ে সরকার খুবই সিরিয়াস। আমাদের জমির সীমাবদ্ধ রয়েছে। তবে ছাদে সৌর বিদ্যুতের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। রেলওয়ে, পাবলিক সেক্টরের ভবনসহ অনেক জায়গায় কাজ সৌর বিদ্যুৎ নিয়ে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। কোরিয়ান ইপিজেড ৪০ মেগাওয়াটের রেকর্ড করেছে বাংলাদেশে।

গ্রিড বিদ্যুতের দাম বেড়ে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ছাদে সৌর বিদ্যুতের দিকে জনগণ ঝুঁকবে বলে মনে করেন মোহাম্মদ হোসাইন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সোলার হোমস সিস্টেমে বিশ্বের কাছে মডেল। ইডকলের  (ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড) বিজনেস মডেল বিশ্বের অনেক দেশ অনুসরণ করছে। তাদের মডেল কেরোসিন ল্যাম্পকে রিপ্লেস করেছে বাংলাদেশে। এখন গ্রিড লাইন চলে যাওয়ায় হয়ত ওই মডেলটি গুরুত্ব হারিয়েছে। আমরা ছাদে সোলারের ওপর ৭০ শতাংশ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কথা ভাবছি।

মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন- আইইইএফএ লিড এনার্জি এনালিস্ট শফিকুল আলম। তিনি বলেন, বর্তমানে ছাদে সৌর বিদ্যুতের উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে ১৬৬ মেগাওয়াট (নেটমিটার ও ননমিটারসহ)। গত দেড় বছরে কয়েক দফায় বিদ্যুতের দাম বেড়ে যাওয়ায় ছাদে সোলার প্যানেল আগের চেয়ে এখন আরো অনেক বেশি অর্থনৈতিকভাবে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে।

এ সময় তিনি ছাদে সৌর বিদ্যুতের বেশকিছু চ্যালেঞ্জও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, অর্থায়ন, ভবন মালিকদের আস্থা, নিয়মকানুন এবং সুদের হার পরিবর্তন, তথ্যের অসামঞ্জস্য, ছাদে সোলার প্যানেলের যন্ত্রপাতির উচ্চ আমদানি শুল্ক, সোলার প্যানেলে ১ শতাংশ ট্যাক্স, সেইসঙ্গে কাস্টমস ডিউটি আরো ১ শতাংশ। নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ট্যাক্স ওয়েভার দিয়ে দেখা যেতে পারে। এছাড়া এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) খোলার জটিলতা দূর করতে স্রেডা (টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে কাজ করতে পারে।

বিজ্ঞাপন

শফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশে এমন একটি বাজার ডিজাইন করতে হবে যা, বাস্তবায়নের গতি বাড়াতে এবং ছাদের সোলার বিদ্যুৎ বিনিয়োগকে উৎসাহিত ও ঝুঁকিমুক্ত করবে। বাংলাদেশে নতুন করে উদ্ভাবনের প্রয়োজন নেই তবে বিদ্যমান ব্যবস্থার কার্যকারিতা বাড়াতে হবে এবং সফল পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে।

তিনি বলেন, স্রেডার সার্ভিস সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। স্রেডার মাধ্যমে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন বিল্ডিং মালিকদের সচেতনতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা নিতে হবে।

বাংলাদেশ সোলার অ্যান্ড রিনিউয়েবল এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসআরইএ) সভাপতি নুরুল আক্তার বলেন, কার্বন নির্গমণ কমাতে ছাদে সোলার প্যানেল স্থাপন অন্যতম ভূমিকা রাখতে পারে। বড় ইস্যু হচ্ছে, ফায়ার সেফটি, উচ্চ আমদানি শুল্ক এ প্রচেষ্টাকে প্রভাবিত করে। 

ইডকলের সিইও আলমগীর মোর্শেদ বলেন, ইডকলের মূল অর্থায়নের ক্ষেত্রগুলির মধ্যে রুফটপ অন্যতম। কিছু বাণিজ্যিক ও শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে সোলার প্যানেল স্থাপন করা হয়েছে। বিষয়টি এখনও চ্যালেঞ্জিং! আস্থার সংকট বিদ্যমান তবে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামে অনেক বড় সফলতা রয়েছে। অর্থায়ন বড় ইস্যু, তবে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

বুয়েটের সাবেক ডিন অধ্যাপক ইজাজ বলেন, আমরা কার্বন নির্গমণ জিরোতে নামিয়ে আনার কথা বলেছি। কার্বন নির্গমণ কমাতে ব্যর্থ হলে নানা রকম সমস্যা হবে। আমাদের গার্মেন্টস শিল্প ইইউতে (ইউরোপীয় ইউনিয়ন) ঢুকতে সমস্যায় পড়তে পারে। শিল্পে আমাদের বিশাল স্পেস রয়েছে। বড় সমস্যা হচ্ছে, গ্রিড ব্যবস্থাপনা।