কড়া নিরাপত্তায় প্রস্তুত জাতীয় স্মৃতিসৌধ

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

মহান স্বাধীনতা দিবসে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে পুরোপুরি প্রস্তুত সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ। তিন বাহিনীর সশস্ত্র কুচকাওয়াজসহ পুষ্পস্তবক অর্পণের প্রস্তুতিও সম্পন্ন। সৌধ মিনারসহ পুরো চত্বরের হাঁটার পথ, বেদি, স্থাপনা সেজেছে রঙ-তুলির আঁচড়ে। বাগানগুলোতে শোভা পাচ্ছে রং-বেরঙের বাহারি ফুল। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভুটানের রাজার শ্রদ্ধা নিবেদন উপলক্ষে সৌধ এলাকায় জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা।

মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) ৫৪তম মহান স্বাধীনতা দিবসে জাতির বীর সন্তানদের শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন পুরো জাতি। দিবসটিতে মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ পরিবেশন করবেন তিন বাহিনীর সদস্যরা। শেষ মুহূর্তে তাই কুচকাওয়াজ অনুশীলন ঝালিয়ে নিচ্ছেন তারা।

বিজ্ঞাপন

এক মাসেরও বেশি সময় ধরে সৌধ চত্বরে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ করেছে গণপূর্ত বিভাগ। হেরিংবন্ড, ইটের পথ, শহীদ বেদি ও গণকবরে ধোয়ামোছার পর সাদা রঙের শুভ্র আভায় সাজিয়ে তোলা হয়েছে পুরো সৌধ এলাকা। বৃক্ষরাজি প্রাঙ্গণ আর সবুজ ঘাসের গালিচা কেটে-ছেঁটে নান্দনিক করে তোলার কাজও শেষ করেছেন গণপূর্তের কর্মচারীরা।

কড়া নিরাপত্তায় প্রস্তুত জাতীয় স্মৃতিসৌধ

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য স্বাধীনতার মাসের শুরু থেকেই জাতীয় স্মৃতিসৌধে দর্শনার্থীদের প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত করা হয়। পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও ভুটানের রাজা আসা উপলক্ষে সৌধ এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

গণপূর্ত বিভাগ জানিয়েছে, রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে একই প্রটোকলে স্মৃতিসৌধে প্রবেশ করবেন ভুটানের রাজা। বরাবরের মতই প্রথমে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন রাষ্ট্রপতি এবং এরপরে প্রধানমন্ত্রী। সবশেষে ফুল দিবেন ভুটানের রাজা। এরপরে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গনে তিনি নাগেশ্বর চাপা ফুল গাছ রোপণ করবেন। এবং ভুটানের রাজা ওয়াংচুক সবার আগে সৌধ প্রাঙ্গন ত্যাগ করবেন, তারপর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও সবশেষে রাষ্ট্রপতি। তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে জনসাধারণের জন্য সৌধ উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।

গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও ভুটানের রাজার আগমন উপলক্ষে স্মৃতিসৌধ পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে।

ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস) মো. আবদুল্লাহিল কাফী বলেন, ২৬ মার্চ, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এদিন প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি এবং ভুটানের রাজা জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এই মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ঢাকা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি, সড়ক-মহাসড়কে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনসহ আমাদের বড় একটি টিম কাজ করবে। স্মৃতিসৌধ এলাকায় আমাদের কন্ট্রোলরুম স্থাপন করা হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে তিন হাজার পুলিশ সদস্য এই মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে নিরাপত্তায় কাজ করবে। এর বাইরে এ বছর ড্রোন দ্বারা পুরো এলাকার পরিস্থিতি মনিটরিং করা হবে।

স্মৃতিসৌধ এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে ঢাকা-১৯ আসনের সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে স্মৃতিসৌধ সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত করে ফেলেছি । এখন শেষ মুহূর্তে টুকিটাকি যে কোনো সমস্যা থাকে এখন সেগুলো দেখা হচ্ছে টুকিটাকি সমস্যাগুলোর কাজ চলছে। ২৬ মার্চের আগেই সম্পূর্ণ কাজ একেবারে সমাপ্ত হয়ে যাবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মিটিং হয়েছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। আশা করছি এবার খুব শান্তিপূর্ণভাবে মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হবে।

সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন জানাতে আগত জাতীয় নেতৃবৃন্দদের বরণ করে নিতে নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। এ বিষয়ে সাইফুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সারা সাভারসহ সড়কের পাশে যেগুলো বহুতল সরকারি ভবন আছে আমরা আলোকসজ্জা করিয়েছি। পর্যায়ক্রমে আলোকসজ্জার কাজ চলছে। জাতীয় নেতৃবৃন্দকে বরণ করে নেওয়ার জন্য রাস্তার পাশে ব্যানার ফেস্টুন দেওয়ার কার্যক্রম চলছে। ২৫শে মার্চ রাত পর্যন্ত ব্যানার ফেস্টুন লাগিয়ে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের আমরা স্বাগত জানাবো।

মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে গত ১২মার্চ থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে জনসাধারণের প্রবেশাধিকার বন্ধ রেখেছে গণপূর্ত বিভাগ।

১৯৭২ সালে সাভারের নবীনগরে ১০৮ একর সবুজে ঘেরা ভূমির ওপর স্বাধীনতার স্মারক জাতীয় স্মৃতিসৌধ নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হয়।