রংপুরের পীরগাছায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় আজাদুল ইসলাম(২২) নামে এক তরুণ নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাত সোয়া ১১টার দিকে উপজেলার তাম্বুলপুর বাজার সংলগ্ন এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত আজাদুল ইসলাম একই উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের ভক্তের বাজার এলাকার কাইয়ূম মুন্সীর ছেলে।
বিজ্ঞাপন
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পীরগাছা বাজার থেকে একটি মোটরসাইকেলে করে আজাদুলসহ দুজন বাড়ির দিকে রওনা দেন। পথিমধ্যে তাম্বুলপুর বাজার সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছালে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে মোটরসাইকেলের আরোহী আজাদুল মাথায় আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলে নিহত হন। অপর আরোহী রফিকুল ইসলাম গুরুতর আহত হলে তাকে দ্রুত রংপুুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুশান্ত কুমার সরকার বলেন, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন। অপর জনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ থানাগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি যাত্রাবাড়ী থানা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরই ছাত্রজনতার তীব্র ক্ষোভে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়ে ছয়তলা বিশিষ্ট ভবনটি। দীর্ঘ দেড় মাস ধরে এই থানায় সংস্কার কাজ চলছে। ফলে নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ ঘটছে থানাটির।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) যাত্রাবাড়ী থানা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, যাত্রাবাড়ী থানার লালচে রঙের নতুন মূল গেইট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলে প্রথমেই হাতের দুপাশে আগুনে পুড়ে যাওয়া গাড়ির ধ্বংসস্তূপ চোখে পড়ে। জীর্ণশীর্ণ হয়ে পড়ে আছে গাড়িগুলো। ভবনের দিকে তাকালেই শ্রমিকেরা কাজ করছে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। কেউ ভবনে রঙের কাজ নিয়ে ব্যস্ত। আবার কেউ রডের কাজ করছেন। কেউবা আবার ফ্লোর ও রুমগুলো পরিষ্কার করছেন। কেউ বৈদ্যুতিক কানেকশন ঠিক করছেন।
ছয়তলা বিশিষ্ট এই ভবনে প্রবেশ করলে এখনো পুড়ে যাওয়া বিভিন্ন ফ্লোরের ক্ষতচিহ্ন স্পষ্ট দেখা যায়। পরিষ্কার করার পরেও পোড়া ফ্লোরগুলো স্পষ্ট হয়ে আছে। রুমগুলোর ভেতরের দেয়ালে রঙ করা হয়েছে। নতুন ফ্যান লাগানোসহ জানালার কাচের গ্লাস পুনঃস্থাপন হয়েছে। থানার এরিয়ার মধ্যে পুড়ে যাওয়া ভবনগুলোও সংস্কার করে নতুন রূপ দেওয়া হয়েছে।
শ্রমিকরা জানান, আমরা দেড় মাস ধরে এখানে কাজ করছি। কাজ এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে।
থানায় সংস্কারের কাজ করা পুলিশ ট্রাস্ট কনস্ট্রাকশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. সুজন আলম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ২১ আগস্ট থেকে কাজ শুরু করেছি। কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ চলমান। ফার্নিচারগুলো আসলে আমরা সবকিছু সুন্দর করে সাজিয়ে দেবো। অতিদ্রুত থানার কার্যক্রম শুরু হয়ে জনদুর্ভোগ কমবে বলে আশা করছি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সংস্কারের কাজ চলমান থাকার কারণে যাত্রাবাড়ী থানার কার্যক্রম স্বল্প পরিসরে ডেমরা থানা থেকে পরিচালিত হচ্ছে। ফলে অনেকে যাত্রাবাড়ী থানায় বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে আসলেও পুলিশ প্রশাসনকে না পেয়ে খালি হাতে ফেরত যেতে হচ্ছে। এমনই একজন ভুক্তভোগী যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা মো. সারোয়ার মিয়া। তিনি বলেন, আজকে আমার একটি স্মার্টফোন হারিয়ে গেছে। সেজন্য হন্তদন্ত হয়ে জিডি করতে থানায় ছুটে এসেছি। কিন্তু এখানে এসে দেখি কেউ নেই। শুধু শ্রমিকরা কাজ করছে। এই মুহূর্তে আমার জিডি করা খুবই প্রয়োজন। কিন্তু, ডেমরা থানা থেকে যে এ থানার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে এ বিষয়ে আমি জানি না।
জোনায়েদ নামের একজন শ্রমিক বলেন, প্রত্যেকদিন অনেক মানুষ বিভিন্ন রকমের অভিযোগ নিয়ে আসে। কিন্তু, কাউকে না পেয়ে আবার ফিরে যায়।
যাত্রাবাড়ী থানার কার্যক্রম ডেমরা থানা থেকে স্থানান্তরিত হয়ে কবে নব্য সংস্কারকৃত যাত্রাবাড়ী থানায় শুরু হবে সে ব্যাপারে যাত্রাবাড়ী থানার ওসি ফারুক আহম্মেদকে বেশ কয়েকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি বারবার কল কেটে দেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের দুই নেতাকে গ্রেফতার করেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজধানীর চকবাজারে নিহত মো. রাকিব হাওলাদার হত্যা মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হয়।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) ভোরে রাজধানীর চকবাজার মডেল থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের পর তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতাররা হলেন- চকবাজার মডেল থানা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক মো. আরিফ ও আওয়ামী লীগের চকবাজার থানার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. ওবায়দুল ইসলাম মিলন।
তাদের গ্রেফরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজধানীর চাঁনখারপুল মোড় এলাকায় ভুক্তভোগী মো. রাকিব হাওলাদার হত্যার ঘটনায় গত ২৩ সেপ্টেস্বর চকবাজার মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়। মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট সকালে চাঁনখারপুল মোড়ে আন্দোলনরত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ওপর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ ও এলোপাতাড়ি ককটেল বিস্ফোরণ করে। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ছোড়া গুলিতে মো. রাকিব হাওলাদার পেটে গুলিবিদ্ধ হন। গুরুতর আহত রাকিবকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল নেওয়ার চেষ্টা করলে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা বাধা দেন। পরে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালে নিয়ে গেলে বিকেল পৌনে ৩টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশ পুলিশের উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) পদমর্যাদার ছয় কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ শাখার উপসচিব আবু সাঈদের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এ বদলি করা হয়।
বদলি হওয়া কর্মকর্তারা হলেন, পুলিশ সদর দপ্তরের মো. আলী হোসেন ফকিরকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে, পুলিশ সদর দপ্তরের মো. জিল্লুর রহমানকে রাজশাহী সারদা পুলিশ একাডেমিতে, পুলিশ সদর দপ্তরের ড. মো. নাজমুল করিম খানকে ঢাকা পুলিশ স্টাফ কলেজে বদলি করা হয়েছে।
এছাড়া এসবির মীর আশরাফ আলীকে রাজশাহী সারদা পুলিশ একাডেমিতে, রেলওয়ে পুলিশের মো. আবদুল মালেককে ঢাকা টিডিএসের কমান্ড্যান্ট এবং রাজশাহী সারদা পুলিশ একাডেমির মো. গোলাম রউফ খানকে বদলি করা হয়েছে রেলওয়ে পুলিশে।
চুয়াডাঙ্গায় ওয়ার্ড বিএনপির নেতাসহ ৭ জনকে কুপিয়ে জখমের ঘটনা ঘটেছে। পরিবারের সদস্যরা আহতদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের ভাণ্ডারদহ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- ওই এলাকার মৃত সুবারদ্দী শেখের ছেলে ইমাতউল্লাহ শেখ (৪৫), আমির হোসেনের ছেলে মুক্তার আলী (৬০), তার স্ত্রী মিস্রি খাতুন (৪৭), ছেলে মারুফ হোসেন (৩০), আবুল মণ্ডলের ছেলে বসির আলী (৩৫), আইয়ুব আলীর ছেলে এশার আলী (৪৫) ও তোফাজ্জেলের ছেলে আকালে মণ্ডর (৫৫)।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আহতদের স্বজন মৃত লাণ্টুর ছেলে তেঁতুল শেখ কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র তানজিল হোসেন গত ১৮ জুলাই সরোজগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিলেন। তার প্রতিবেশী ও ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার সুজন মিয়া বিষয়টি নিয়ে তানজিলের ওপর ক্ষুদ্ধ ছিলেন। ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়ায় গত ২০ জুলাই রাতে তানজিলকে মারধরের চেষ্টা করেন মেম্বার সুজন মিয়া।
কলেজছাত্র তানজিল হোসেন জানান, ‘আমার পরিবারের সবাই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সুজন মিয়া আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে ২০ জুলাই আমাকে মারধরের চেষ্টা করে। ওনার ভয়ে আমি এক সপ্তাহ পালিয়ে থাকতেও বাধ্য হয়েছি। ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়ায় সে আমাকে ভয়-ভীতি দেখাতো। মঙ্গলবার রাতে তার সাথে আমার দেখা হলে তিনি আমার সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ান। প্রতিবাদ করলে আমাকে আঘাত করেন। পরে আমার পরিবারের সদস্যরা মেম্বারের কাছে আমাকে মারধরের কারণ জানতে গেলে মেম্বার সুজনসহ তার পরিবারের ৮-১০ জন আমাদের ওপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। আমরা সম্পূর্ণ নিরস্ত্র ছিলাম। ওরা দা, চাইনিজ কুড়ালসহ বিভিন্ন অস্ত্র দিয়ে আমার পরিবারের ৭ জনকে কুপিয়ে জখম করে। পরে স্থানীয়রা আমাদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।’
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মোরশেদ আলম বলেন, ‘রাত সাড়ে ১০টার পরে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় নারীসহ ৭ জন জরুরি বিভাগে আসেন। প্রত্যেকের শরীরে রক্তাক্ত ও ধাতব অস্ত্রের জখমের চিহ্ন পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্যে এনাতউল্লাহর মাথার জখম গুরুতর। অন্যরা শঙ্কামুক্ত। জরুরি বিভাগ থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের ভর্তি রাখা হয়েছে।’
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী বলেন, সদর থানাধীন ভাণ্ডারদহে একটি মারামারির ঘটনায় সাতজন আহত হয়েছে বলে জেনেছি। আহদের পক্ষে থানায় অভিযোগের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছে এবং সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক। অভিযোগ প্রাপ্তির পর তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।