দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল এক হাজার ৯১৬ জনে। এ সময় কারোর মৃত্যু হয়নি। ফলে এ বছর মৃত্যু সংখ্যা ২৩ জনেই থাকল।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আক্রান্তদের মধ্যে ছয়জন ঢাকা মহানগরে এবং বাকি ১১ জন ভর্তি হয়েছে ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে।
কেবল জানুয়ারিতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় ১ হাজার ৫৫ জন, যাদের মধ্যে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে হাসপাতালে ভর্তি হয় ৩৩৯ জন, যাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। মার্চ মাসে আক্রান্ত হয়েছে ৩১১ জন; যাদের মধ্যে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর তথ্য রাখে ২০০০ সাল থেকে। এর মধ্যে ২০২৩ সালে এ রোগ নিয়ে সবচেয়ে বেশি ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যুও হয় ওই বছর।
অনুমোদনহীন নকল বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি, মজুদ ও বিক্রির অভিযোগে যাত্রাবাড়ী ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকায় র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ৪০ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। একই সাথে জরিমানা না দেয়ায় এক প্রতিষ্ঠানের ২ কর্মকর্তাকে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মঙ্গলবার ( ৩০ এপ্রিল ) দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন র্যাব-১০ এর সহকারী পরিচালক ( মিডিয়া ) এম. জে. সোহেল।
র্যাব জানায়, গতকাল (২৯ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে রাত ১১:৫৫ পর্যন্ত র্যাব এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাজহারুল ইসলাম ও র্যাব-১০ এর সমন্বয়ে একটি আভিযানিক দল যাত্রাবাড়ী ও দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত কার্যক্রম পরিচালনা করে।
এ সময় বিএসটিআই এর প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভেজাল খাদ্যদ্রব্য এবং অনুমোদনহীন নকল বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি উৎপাদন, মজুদ ও বিক্রি করার অপরাধে ১০টি প্রতিষ্ঠানকে সর্বমোট ৪০ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
প্রতিষ্ঠানগুলো হলো, আর আর ইলেক্ট্রনিক্স এন্ড ইলেক্ট্রিক ইন্ডাস্ট্রিজ’কে নগদ ২ লক্ষ টাকা, ফাস্ট টেপস এন্ড ক্যামিকেল লিমিটেড’কে নগদ ২ লক্ষ টাকা, প্রিমিয়াম এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড’কে নগদ ৩ লক্ষ টাকা, মেসার্স ইসলাম ক্যামিকেল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’কে নগদ ৫লক্ষ টাকা, শাওন কনজিউমার প্রোডাকশন’কে নগদ ১ লক্ষ টাকা, মীম ক্যামিকেল কোম্পানী’কে নগদ ৫০ হাজার টাকা, ইভানা ফুড এন্ড ক্যামিকেল ইন্ডাস্ট্রিজ’কে নগদ ১ লক্ষ টাকা, এমইপি এনার্জি সেভিং ল্যাম্প ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’কে নগদ ২০ লক্ষ টাকা, রাইজিং স্টার ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড’কে নগদ ১ লক্ষ টাকা এবং এ্যানাজি টের্যা ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড’কে নগদ ৫ লক্ষ টাকা করে জরিমানা করা হয়।
এছাড়া সিরাজ ট্রেডিং এর দুইজন ব্যক্তিকে নগদ ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা প্রদান করলে জরিমানার অর্থ দিতে ব্যর্থ হওয়ায় দুজনকে ১ মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে , বেশ কিছুদিন যাবৎ অভিযুক্ত ব্যবসায়ীরা ভেজাল খাদ্যদ্রব্য এবং অনুমোদনহীন নকল বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি উৎপাদন, মজুদ ও বাজারজাত করে আসছিল।
যশোরে নদী থেকে ইজিবাইক চালকের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার
ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, যশোর
জাতীয়
যশোর সদর উপজেলার বসুন্দিয়ার সদুল্লাপুর ভৈরবের শাখা নদী কাটা খাল থেকে নিখোঁজ ইজিবাইক চালক ইমনের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সকাল ১১টায় পুলিশ এ মরদেহ উদ্ধারের পর পিবিআই নিহতের পরিচয় শনাক্ত করেছে।
ধারণা করা হচ্ছে, ইমনকে হত্যা করে তার ইজিবাইক ছিনতাই করে দুর্বৃত্তরা। পরবর্তীতে ইমনের মরদেহ নদীতে ফেলে চলে যায়। ইমন অভয়নগর উপজেলার প্রেমবাগ ইউনিয়নের আবুল কালামের ছেলে।
ইমনের বাবা আবুল কালাম জানান, গত ২৮ এপ্রিল ভোর ৬টায় ইজিবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় ইমন। এরপর আর বাড়ি ফেরেনি। তার ব্যবহৃত মোবাইলে কল দিলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। বাইক স্ট্যান্ডে খোঁজ নিলে অন্য চালকরা জানায়, সর্বশেষে বসুন্দিয়ার দিকে ভাড়া নিয়ে যেতে দেখেছে তারা। এ ঘটনায় তারা অভয়নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। অবশেষে পুলিশের কাছ থেকে ছেলের মৃত্যুর খবর জানতে পেরেছেন পরিবার।
স্থানীয়রা জানান, সকাল সাড়ে নয়টায় নদীর পাড় থেকে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ আসতে থাকে। খোঁজ নিয়ে পরবর্তীকে তারা একটি বস্তায় ভরা এক যুবকের মরদেহ ভেসে থাকতে দেখেন। পরে পুলিশকে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে। মুহূর্তের মধ্যে পুলিশ, পিবিআই, ডিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক টিম ঘটনাস্থলে আসে। পরবর্তীতে ফিঙ্গার প্রিন্ট ও ইমনের কাছে থাকা মোবাইলের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত করা হয়।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানান, গত ২৮ এপ্রিল নিখোঁজ হয় ইমন। এ ঘটনায় অভয়নগর থানায় জিডি করা হয়। পরবর্তীতে আজ সকালে মরদেহ উদ্ধার হয়। ইমনের পরিবারের সদস্যরা এসে পরিচয় শনাক্ত করে। মরদেহ যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
কক্সবাজারে ২৪ ঘণ্টায় হিট স্ট্রোকে প্রাণ গেল ২ জনের
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার
জাতীয়
কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নে মনির উদ্দিন (৩৫) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে তিনি হিট স্ট্রোকে মারা গেছেন।
৩০ এপ্রিল (মঙ্গলবার) সকাল ১০টায় এ ঘটনাটি ঘটে। মৃত মনির উদ্দিন জালালাবাদ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের পালাকাটা এলাকার মৃত ইলিয়াসের ছেলে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, রাতে সবার সাথে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। সকাল ৭ টার দিকে ঘুম থেকে উঠে বুকের ব্যথা অনুভব করার কথা জানালে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা নিরীক্ষা করলে মনির উদ্দিনের শরীরে হিট স্ট্রোকের লক্ষণ ধরা পড়ে। এ সময় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করার মুহূর্তে তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার আরমান উদ্দিন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মনির উদ্দিন একদম সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষ ছিলেন। আজ সকালে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁর মৃত্যু হয়। তাই তাঁরা ধারণা করছেন, বৈশাখের এই প্রচণ্ড গরমে হিট স্ট্রোকেই তার মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে সোমবার (২৯ এপ্রিল) সকালে পেকুয়া সদর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের উত্তর মেহেরনামা তেলিয়াকাটা এলাকায় হিট স্ট্রোকে মো. কালু (৫০) নামে এক দিনমজুরের মৃত্যু হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে স্থানীয় ইউপি সদস্য নাছির উদ্দিন বলেন, দিনমজুর মো. কালু সকালে প্রতিবেশী গিয়াস উদ্দিনের বাড়িতে খড়ের স্তুপের কাজ করছিলেন। এসময় সে গরমে অসুস্থ হয়ে মাথা ঘুরে পড়ে যায়। তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত ডাক্তার তাকে মৃত্যু ঘোষণা করে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজিবুর রহমান বলেন, ‘দিনমজুর কালুকে হাসপাতালে আনার আগেই তিনি মারা যান। তবে তার স্বজনদের বক্তব্য শুনে এটা হিট স্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।’
স্থানীয় প্রতিবেশী গিয়াসউদ্দিন জানান, সে সবসময় আমার বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করে। আজ সকালে খড়ের স্তূপে কাজ করার সময় গরমে মাথা ঘুরে পড়ে যায়। তাকে পেকুয়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করে। সে সুস্থ মানুষ, গরমের কারণে তার এই অবস্থা হয়েছে।
সারাদেশে তীব্র তাপদাহে বিপর্যস্ত জনজীবন। এর মাঝে বার বার লোডশেডিং যেন অস্বস্তির মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। এমন সময়ে সাধারণ মানুষ স্বস্তি পেতে হাত বাড়ায় হাতপাখার দিকে। হাতপাখার শীতল বাতাস ক্লান্ত শরীরে এনে দেয় প্রশান্তি। একদিন-দুদিন নয়, বাঙালির জীবনের সঙ্গে হাতপাখার তৈরি ও ব্যবহার হাজার বছরের। এখনোও গ্রাম থেকে শুরু করে শহরের প্রতিটি বাড়িতেই দেখা মেলে নানা কারুকাজ আর রঙ-বেরঙের হাতপাখার ব্যবহার।
ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার বলদী, মুখী ও দীঘা গ্রামকে এখন অনেকেই চেনে হাতপাখার গ্রাম নামে। সেই সঙ্গে বদলে গেছে ওই সব গ্রামের মানুষের জীবন। নকশি হাতপাখা তৈরি ও বিক্রি করে নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনে এসেছে সচ্ছলতা।
জানা যায়, এ গ্রামগুলোতে নকশি হাতপাখা তৈরির কাজ শুরু হয় প্রায় ৩০-৩৫ বছর পূর্বে জামু নামে এক মহিলার মাধ্যমে। এখন এ হাতপাখা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছে কয়েক হাজার পরিবার। এই গ্রামগুলোতে প্রতি সপ্তাহে লাখ লাখ হাতপাখা তৈরি হয়।
নানা নকশায় শোভিত হাতপাখাকে বলা হয় নকশি হাত পাখা। নকশি হাতপাখা তৈরিতে লাগে বাঁশের চাক,কাপড়, সুই সুতা, ঝালট, ও হাতল।
প্রতিটি হাতপাখা তৈরিতে ৫ জন কাজ করেন। প্রথম জন বাঁশের চাক তৈরি, দ্বিতীয় জন ফুল তোলা বা প্রিন্ট করা, তৃতীয় জন মুড়ি লাগানো, চতুর্থ জন ঝালট লাগানো এবং পঞ্চম জন হাতল লাগান। এখানকার পাখা কাপড় ও বাঁশ দিয়ে তৈরি হয়। পরিবেশ বান্ধব ও দামে সস্তা হওয়ায় বাজারে এর চাহিদাও অনেক বেশি।
বাঁশ কেটে পাখার চাক ও হাতল বানিয়ে দেন পুরুষরা। এর পর অন্য কাজ করেন নারীরা।
এক এক জন নারী নিজের সংসার সামলিয়ে প্রতিদিন ২৫-৩০ টি পাখা বুনন করতে পারে। বুন শেষে তারা প্রতিটি হাতপাখা ৩০-৩৫ টাকায় পাইকারদের কাছে বিক্রি করে। পাইকার তাদের কাছ থেকে কিনে আবার ঝালট ও হাতল লাগিয়ে বাজারে প্রতিটি পাখা বিক্রি করে ৫০-৭০ টাকা ।
উপজেলার মশাখালী ইউনিয়নের বলদি গ্রাম, মুখী গ্রাম ও রাওনা ইউনিয়নের দীঘা গ্রামের ঘরে ঘরে তৈরি এই হাতপাখা শিল্পের সঙ্গে জড়িত কয়েক হাজার নারী কেবল পরিবারের সচ্ছলতাই আনছে না, অনেকে সমাজ ও পরিবারের বোঝা নামের অপবাদ দূর করে হয়েছেন স্বাবলম্বী। অনেক পরিবারের স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া মেয়েরা বাড়তি আয়ের উৎস তৈরি করছে হাতপাখা। গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ বাড়ির উঠানে নারীরা বসে সুইয়ের ফোঁড়ে বাহারি সুতায় হাতপাখার জমিনে তৈরি হচ্ছে নানা নকশা খচিত ফুল, পাখি, লাভ, কদম ফুল, তিনতার, আয়না বসানো, ডালিম, মানুষের নামের ইংরেজি অক্ষর।
নারী-পুরুষ মিলে হাতপাখার কাজ করে আর্থিক অবস্থার উন্নয়ন হচ্ছে গ্রামের বাসিন্দাদের। নকশি হাত পাখার কাজ করেই কেউ কিনেছেন জমিজমা, কেউ করেছে পাকা বাড়ি কিংবা ছেলেকে পাঠিয়েছেন বিদেশে।
দেশের নানা প্রান্ত থেকে পাইকার এসে তিন গ্রাম থেকে হাতপাখা কিনে নিয়ে যায়। পরে ফেরি করে হাত পাখা বিক্রি করেন দেশের নানা জায়গায়। আবার এই হাতপাখা যাচ্ছে পাশের দেশ ভারতে। বিশেষ করে ট্রেন, বাস ও লঞ্চে গরমের সময়ে হাতপাখার কদর অনেক বেশি। দামও তুলনামূলক অনেক সস্তা।
রাওনা ইউনিয়নের দীঘা গ্রামে গৃহবধূ কুসুম আক্তার বলেন, আমি প্রায় ৩০ বছর ধরে হাতপাখা তৈরি করি । হাতপাখা বিক্রির টাকা সংসারের কাজ লাগাই, ছেলে-মেয়ের হাতখরচ দেই। এর ফলে স্বামীর কাছে হাত বাড়াতে হয় না। আমাদেরকে যদি সরকার একটু সহযোগীতা করতো এবং সহজ শর্তে ঋণ দিতো তাহলে আমাদের আরও ভালো হতো।
দিঘা গ্রামের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী মিম বলেন আমি লেখা পড়ার পাশাপাশি অবসর সময়ে দাদু ও মায়ের কাছ থেকে শিখে আমি ও হাতপাখা তৈরি করি এতে আমার লেখা পড়ার খরচ নিজেই মেটাতে পারছি।
একই এলাকার রীনা বেগম বলেন, সংসার কাজকর্ম শেষে যে সময় টুকু পাই হাতপাখা বানাই। দৈনিক ১০-১২ টা বানাতে পারি। এতে যে টাকা আয় হয় সেটা দিয়ে নিজের বিভিন্ন খরচ ও সংসারে কৃষি কাজসহ বিভিন্ন কাজে লাগাই। স্বামীর কাছে হাত পাততে হয় না উল্টো আমরা প্রয়োজনে টাকা দেই।
মুখী গ্রামের বৃদ্ধা হেলেনা খাতুন বলেন, আমি ৩০ বছর ধরে হাতপাখা তৈরি করি। হাতপাখা বানানোর আয় থেকে ছেলে- মেয়েদের লেখা পড়া করিয়েছি জমি কিনছি এবং পাকা বাড়ি করছি। হাতপাখার বিক্রেতা আজিজুল হক বলেন, আমি ১৫-২০ লোক দিয়ে আমি নিজে হাতপাখা তৈরি করাই। আমি পাইকারী ও খুচরা হাতপাখা বিক্রি করে থাকি। এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পাইকারদের কাছে বিক্রি করে থাকি। আমাদের এলাকা হাতপাখা দেশের চাহিদা মিটিয়ে পাশ্ববর্তী দেশ ভারতেও রপ্তানি করা হচ্ছে।
হাতপাখা বিক্রেতা শমসের আলী আকন্দ বলেন, আমি ২৬-২৭ বছর ধরে এই হাতপাখার ব্যবসা করি। দেশের বিভিন্ন স্থানে হাতপাখা নিয়ে যাই। হাতপাখার ব্যবসা করে আমি জায়গায় জমিসহ অনেক কিছু করেছি।