কোলোরেক্টাল ক্যান্সার সচেতনতা ফোরামের আয়োজন করেছে এভারকেয়ার হসপিটাল



নিউজ ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সম্প্রতি কোলোরেক্টাল ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে একটি বিশেষ পেশেন্ট ফোরামের আয়োজন করেছে বাংলাদেশের প্রথম জেসিআই-স্বীকৃত হাসপাতাল এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা।

প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হলো এই কোলোরেক্টাল ক্যান্সার। আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, হাসপাতালটির পরিচালনা পর্ষদের সদস্যগণ এবং ক্যান্সারের সাথে লড়াকু সাহসী রোগীরা তাদের নিজেদের অনুপ্রেরণামূলক গল্পগুলো সকলের সামনে উপস্থাপন করেন। এছাড়াও, বিশেষজ্ঞরা কোলোরেক্টাল ক্যান্সারের সাথে সম্পর্কিত ঝুঁকির কারণ, স্ক্রীনিং নির্দেশিকা এবং চিকিৎসা পদ্ধতির উপর বিশেষ জোর প্রদান করেন।

গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি এবং হেপাটোলজি বিভাগের কোঅর্ডিনেটর এবং সিনিয়র কনসালটেন্ট ডাঃ লুৎফুল এল. চৌধুরী নিয়মিত স্ক্রিনিংয়ের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইল বজায় রাখার বিষয়ে জোর দেন। তিনি বলেন, “একজন গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট হিসেবে আমরা কোলোরেক্টাল ক্যান্সার প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনা উভয় ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করি। নিয়মিত স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে ক্যান্সার ভয়াবহ আকার ধারণের আগেই তা সনাক্ত ও প্রতিরোধ করা সম্ভব। আমি মনে করি, ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইতে সচেতনতা সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। আমাদের উচিৎ ক্যান্সার নিয়ে উদ্বিগ্ন না হয়ে সচেতন হওয়া এবং নিয়মিত স্ক্রিনিং ও স্বাস্থ্যসম্মত লাইফস্টাইল বজায় রাখা। আমাদের মনে রাখা উচিত যে উপযুক্ত জ্ঞান হলো প্রতিরোধের অন্যতম ভিত্তি।”

মেডিকেল অনকোলজির কোঅর্ডিনেটর ও সিনিয়র কনসালটেন্ট ডাঃ ফেরদৌস শাহরিয়ার সাইদ বলেন, “কোলোরেক্টাল ক্যান্সার মোকাবেলায় রোগীদের সার্বিক সহযোগীতার পাশাপাশি যথাযোগ্য চিকিৎসার ধাপগুলো নিশ্চিত করতে আমরা স্বচেষ্ট। তবে সাধারণ মানুষকেও নিজ নিজ অবস্থান থেকে রোগ সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।”

জেনারেল অ্যান্ড ল্যাপ সার্জারির সিনিয়র কনসালটেন্ট ডাঃ মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন বলেন, “কোলোরেক্টাল ক্যান্সারের স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে রোগীর জীবন বাঁচাতে সময়মত পদক্ষেপ ও উন্নত অস্ত্রোপচারের কৌশলগুলো গ্রহণ করা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। ।”

এভারকেয়ার হসপিটাল, বাংলাদেশের সিইও ও এমডি ডাঃ রত্নদীপ চাষ্কার বলেন, “এভারকেয়ার হসপিটালের মূল লক্ষ্য স্বাস্থ্যজ্ঞান ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের মাধ্যমে সমাজের কল্যাণে ভূমিকা রাখা। আমাদের দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকমন্ডলী গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকিগুলো চিহ্নিতকরণ, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং কোলোরেক্টাল ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে ।”

এভারকেয়ার হসপিটাল, বাংলাদেশের মেডিকেল সার্ভিসেসের পরিচালক ডাঃ আরিফ মাহমুদ বলেন, “কোলোরেক্টাল ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উন্নত স্বাস্থ্যসেবার প্রচার এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি রোগীকে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা প্রদান ও সহায়তায় এভারকেয়ার হসপিটাল সর্বদা স্বচেষ্ট।”

আয়োজিত এই পেশেন্ট ফোরামে বিশেষজ্ঞরা কোলোরেক্টাল ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সাথে প্রতিরোধ ও প্রতিকারের পদ্ধতিগুলো সম্পর্কে মতবিনিময় করেন। দেশের প্রথম জয়েন্ট কমিশন ইন্টারন্যাশনাল (জেসিআই) স্বীকৃতি পাওয়া এভারকেয়ার হসপিটালের জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নে অঙ্গীকারগুলোসহ ক্যান্সার মোকাবেলায় দক্ষতা ও রোগীদের স্বাস্থ্য উন্নতি প্রদর্শনে এই ফোরামটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

অনুষ্ঠানটিতে আরও উপস্থিত ছিলেন এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকার গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি ও হেপাটোলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডাঃ ইকবাল মুর্শেদ কবির ও সিনিয়র কনসালটেন্ট প্রফেসর ডাঃ শায়লা পারভীন, এভারকেয়ার হসপিটাল, বাংলাদেশের সিইও ও এমডি ডাঃ রত্নদীপ চাষ্কার, মেডিকেল সার্ভিসেস বিভাগের ডিরেক্টর ডাঃ আরিফ মাহমুদ, চিফ মার্কেটিং অফিসার ভিনয় কাউল- সহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ। গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি বিভাগের বিশেষজ্ঞ এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কয়েকজন ক্যান্সার-সারভাইভার, যারা তাদের অভিজ্ঞতা ও অনুপ্রেরণামূলক গল্পগুলো সবার সাথে শেয়ার করেন।

   

যাত্রাবাড়ীতে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ২



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে বাসের ধাক্কায় পিকআপ ভ্যানের চালকসহ ২ জন নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন- বাবুল চিশতা (৪৫) ও অপরজনের নাম কবির হোসেন। তার বয়স আনুমানিক (৫০) বছর।

রোববার (৫ মে) দিবাগত রাত পৌনে তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। যাত্রাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু সায়েম জানান, মাতুয়াইল মা ও শিশু হাসপাতালের সামনের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে রাত পৌনে ২টার দিকে একটি পিকআপ ভ্যান ইউটার্ন নিচ্ছিল। তুহিন পরিবহনের একটি বাস তখন পিকআপ ভ্যানটিকে ধাক্কা দেয়। এতে পিকআপ ভ্যানটি দুমড়েমুচড়ে যায় এবং বাসটি পাশে খাদের পানিতে পড়ে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয়রা পিকআপ ভ্যানের ভেতর থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় দুজনকে বের করে রাস্তায় রাখেন। তখন তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

এসআই আারও জানান, দুর্ঘটনার সময় ওই বাসটিতেও কয়েকজন যাত্রী ছিলেন। তবে তারা সামান্য আহত হওয়ায় স্থানীয় হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে যে যার বাসায় চলে গেছেন। নিহত বাবুল চিশতি পিকআপ ভ্যানটির চালক। মরদেহ দুটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে রাখা হয়েছে।

নিহত বাবুল চিশতির স্ত্রী নার্গিস আক্তার জানান, শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার সামন্তশা গ্রামে বাবুলের বাড়ি। বাবার নাম আব্দুর রশিদ আকন। পরিবার নিয়ে যাত্রাবাড়ীর মৃধাবাড়ি এলাকায় থাকেন। ভাড়ায় পিকআপ ভ্যান চালাতেন তিনি। সোমরাত রাত ১টার দিকে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন। বের হওয়ার সময় জানিয়েছিলেন, যাত্রাবাড়ী মাছের আড়তে যাবেন। সেখান থেকে পিকআপ ভ্যানে করে মাছ নিয়ে কোথাও যাওয়ার কথা ছিল তার।

;

দুপুরের মধ্যে ৮০ কিমি. বেগে বৃষ্টির আভাস



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে তীব্র বেগে ঝড় বয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অফিস। সেই সঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টিও হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সোমবার (৬ মে) সকালে দেশের নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহ এবং সিলেট অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে পশ্চিম/উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০-৮০ কি.মি. বেগে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এছাড়া রংপুর এবং কক্সবাজার অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে পশ্চিম/উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কি.মি. বেগে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে, আবহাওয়া অফিসের অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টিও হতে পারে। আগামী ৬ এবং ৭ মে এই বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।

;

কৌশলে অপহরণকারীদের হাত থেকে বেঁচে ফিরল ১২ বছরের সাজিদ



স্পেশাল ককরেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অপহরণের ১৩ ঘণ্টা পর উদ্ধার হয়েছে স্কুলছাত্র মো.সাজিদুল ইসলাম সাজিদ (১২)। রোববার (৫ মে) দুপুরে স্কুল শেষে বাড়ি ফেরার পথে চট্টগ্রামের রাউজানের পাহাড়তলী চৌমুহনী থেকে তাকে অপহরণ করে সংঘবদ্ধ একটি চত্রু। ঘটনাস্থল থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে রাউজান মুন্সির ঘাটা এলাকা থেকে একইদিন রাত ২টায় তাকে উদ্ধার করা হয়েছে। সাজিদ রাউজানের চুয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।

উদ্ধারের পর পুরো ঘটনা পরিবারের সদস্যদের খুলে বলেছে সাজিদ। সে জানায়, স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পথে একজন নারী তাকে একটি কাগজ দিয়ে সেখানে লেখা ঠিকানাটি কোথায় জানতে চায়। কাগজের লেখাটি ছিল খুবই ছোট অক্ষরে। সাজিদ লেখাটি ভালোভাবে দেখতে কাগজটি চোখের কাছাকাছি নিয়ে আসলে তাৎক্ষণিকভাবে সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরে তার জ্ঞান ফিরলে নিজেকে একটি বেড়ার ঘরে দেখতে পায়। সেখানে তিন যুবক তাকে মায়ের মোবাইল নম্বর দিতে বলে। তবে সাজিদ মোবাইল নম্বর জানে না বললে যুবকেরা তাকে মারধর করে।

এদিকে সাজিদ নিখোঁজ হওয়ার পর পরিবারের সদস্যরাসহ এলাকাবাসী ব্যাপক খোঁজাখুজি শুরু করলে অপহরণকারীরা তাকে সেখান থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা করে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় অটোরিকশাটি মুন্সির ঘাটা এলাকায় পৌঁছলে সাজিদ কৌশলে লাফ দেয়। এরপর ওখানে একটি দোকানে গিয়ে তার মায়ের মোবাইলে ফোন দেয়। পরিবারের লোকজন গিয়ে তাকে রাত দুইটায় বাড়িতে নিয়ে আসে।

সাজিদ চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আলীর ভাগ্নে। সাংবাদিক মোহাম্মদ আলী সাজিদের অপহরণ ও খুঁজে পাওয়ার বিষয়টি বার্তা২৪.কমকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, 'অবশেষে আমাদের উৎকণ্ঠা কমল। ভাগ্নেকে উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নিয়েছেন এলাকার অসংখ্য মানুষ। হাজারো মানুষ ফেসবুকে বিষয়টি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিয়েছেন। এসব কারণে অপহরণকারীরা চাপে পড়ে। পরে অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার সময় ভাগ্নে কৌশলে লাফ দেয়। ভাগ্নে নিঁখোজ হওয়ার পর প্রতিনিয়ত খবরাখবর নিয়েছেন অসংখ্য মানবিক মানুষ। সহযোগিতা দিয়েছেন জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক ও বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ। তাদের কাছে আজীবন ঋণী হয়ে গেলাম।'

;

দেশি পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধির পাঁয়তারা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম ঢাকা
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পরও এক শ্রেণির অসাধু চক্র পণ্যটি নিয়ে কারসাজি করেছে। আমদানির পর সরবরাহ বাড়লে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম কমার কথা।

কিন্তু, দেশির দাম কেজিপ্রতি ১০০ টাকা বিক্রির টার্গেট করা হচ্ছে। যা বর্তমানে কেজিপ্রতি ৬০-৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। মাসখানেক আগে বিক্রি হয়েছে ৪৫-৫০ টাকা।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, পেঁয়াজের দাম যাতে অযৌক্তিকভাবে বাড়াতে না পারে সেজন্য কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হয় পণ্যটি কিনে প্রতারিত হবেন ভোক্তা।

এদিকে আমদানিকারকরা বলছেন, ভারত থেকে প্রতি টন পেঁয়াজের রপ্তানি মূল্য ৫৫০ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। যে কারণে দেশি টাকায় প্রতি কেজির দাম ৭০ টাকা পড়তে পারে। পাইকারিতে ৭৫-৮০ টাকা ও খুচরায় মূল্য কিছুটা বেড়ে ৮৫-৯০ টাকায় বিক্রি হবে। তাই ভারতের পক্ষ থেকে রপ্তানি মূল্য আরও কমানো দরকার ছিল। কারণ ভারতে এবার অনেক পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে।

রবিবার (৫ মে) রাজধানীর কাওরান বাজার, নয়াবাজার, শান্তিনগর কাঁচা বাজারসহ একাধিক খুচরা বাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এদিন প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা। যা ভারত পেঁয়াজ রপ্তানির খবরের আগে আগে (দুদিন আগে) ৬৫-৭৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

আর এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৫৮-৬০ টাকা। যা এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ৪৫-৫০ টাকায়।

নয়াবাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা মো. ইসমাইল বলেন, পাইকারি বাজারে বড় বড় ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের দাম নিয়ে ফের কারসাজি করছে। ভারত থেকে রপ্তানির খবরে দাম কেজিপ্রতি পাঁচ টাকা কমায় খুচরা পর্যায়ে ৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু, তারা যখন হিসাব করে দেখেছে প্রতি কেজি ভারতের পেঁয়াজ আমদানি খরচ ৭০ টাকা।

আর পাইকারি বাজার হয়ে খুচরা বাজারে আসতে সেই পেঁয়াজের দাম প্রায় ৯০ টাকার মতো হয়, ঠিক তখন থেকে দেশি পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধি করতে উঠে পড়ে লেগেছে। তারা এখন থেকেই বলছে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাবে। তাই মোকাম থেকে এখন থেকেই বেশি করে কিনতে বলছে।

তারা এটাও বলছে, পরে দেশি জাতের দাম পাইকারি পর্যায়ে দাম ৮০-৮৫ টাকার উপরে হয়ে যাবে। যা রোববারও ৫৫-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তিনি জানান, ভারতের পেঁয়াজ আমদানি করতে যদি বেশি টাকা লাগে, তবে সেই পেঁয়াজ পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে বেশি দামে বিক্রি হবে। এটাই হওয়ার কথা। কিন্তু, বর্তমানে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ পাইকারিতে ৫৫-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সেই পেঁয়াজ কী করে পাইকারি বাজারে ৮০-৮৫ টাকা বিক্রি করবে? একই পেঁয়াজের দাম কী করে কেজিপ্রতি ৩০ টাকা বেশি হয়ে যাবে? সব তাদের কারসাজি। আমদানি পেঁয়াজের সঙ্গে মার্কেট প্রাইজ ধরে রেখতে তারা দেশি পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে বাড়তি মুনাফা করতে ছক তৈরি করেছে। পাইকরি পর্যায়ে ৮০-৮৫ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি হলে খুচরা পর্যায়ে দেশি পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকার উপরে বিক্রি হবে। মনে হচ্ছে এটাই তারা টার্গেট করেছে। যা অযৌক্তিক। প্রশাসনের নজর দিতে হবে।

রাজধানীর কাওরান বাজারের পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা জানান, ভারত থেকে এতদিন বৈধ পথে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ছিল। তাই দেশি পেঁয়াজ দিয়ে সরবরাহ ঠিক রাখতে হয়েছে। তবে ভারতের পেঁয়াজের দাম বেশি।

প্রতি টন ৫৫০ ডলার রপ্তানি মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে সেই পেঁয়াজ দেশের পাইকারি বাজারে ৭৫-৮০ ও খুচরা পর্যায়ে ৮০-৯০ টাকা বিক্রি হওয়ার কথা। তাই মনে হচ্ছে ভারতের পেঁয়াজের সঙ্গে দেশি পেঁয়াজের দামও বাড়বে।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, যে পণ্যের যে দাম সেভাবেই বিক্রি হওয়ার কথা। তবে দেশে ভিন্ন চিত্র। কোনো পণ্যের আমদানি মূল্য বেশি থাকলে সঙ্গে সঙ্গে দেশে বাড়তি মুনাফা করতে উৎপাদিত পণ্যের দামও বাড়িয়ে বিক্রি করা হয়। পেঁয়াজের ক্ষেত্রে যেন এমনটা না হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। মনিটরিং জোরদারের পাশাপাশি কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

এদিকে শনিবার (৪ মে) কুমিল্লা নগরীর রাজগঞ্জ বাজারে পরিদর্শন শেষে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, আগামী ঈদুল আজহার আগেই পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৫০ টাকার মধ্যে চলে আসতে পারে। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ায় এ সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, লোকবল বৃদ্ধি ও আইনের সংস্কার হলে ভোক্তা অধিদপ্তর জনগণের উপকারে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করতে পারবে।

প্রসঙ্গত, গত ৮ ডিসেম্বর থেকে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে। সেই সময়ের ঘোষণা অনুযায়ী ৩১ মার্চ পর্যন্ত রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা ছিল। তবে মেয়াদ শেষের আগেই গত ২৩ মার্চ পেঁয়াজ রপ্তানি অনির্দিষ্টকাল বন্ধের ঘোষণা দেয় ভারত। তখন দেশে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ১০০ ছাড়িয়ে বিক্রি হয়।

তবে এই নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও ভারত গত ফেব্র“য়ারিতে বাংলাদেশ, শ্রীলংকা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ কয়েক দেশে সীমিত পরিসরে পেঁয়াজ বিক্রির অনুমোদন দেয়। এছাড়া দেশীয় উৎপাদিত পেঁয়াজ বাজারে আসতে শুরু করলে দাম কেজিপ্রতি ৪০-৫০ টাকায় নেমে যায়। পরে সরবরাহে ঘাটতির অজুহাতে ফের খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে।

;