টর্পেডো সদৃশ বস্তু ভেসে এলো পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী খালে
পানির তলদেশ থেকে ব্যবহৃত অস্ত্র ‘টর্পেডো’ সদৃশ একটি বস্তু ভেসে এসেছে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর একটি খালে। এটির দৈর্ঘ্য প্রায় ২০ থেকে ২৫ ফুট।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকালে উপজেলার মৌডুবি ইউনিয়নের মীরকান্দা গ্রাম সংলগ্ন ভাঙা খালে বস্তুটিকে দেখতে পায় গ্রামবাসী। ভাসমান বস্তুটি দেখতে স্থানীয়রা ভিড় করতে থাকেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বস্তুটি দেখে ভারী কোনো অস্ত্র ভেবে এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে খবর পেয়ে রোববার দুপুরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তারা বস্তুটির কাছ থেকে লোকজনকে সরিয়ে দেয়। বস্তুটি যাতে ভেসে না যায়, সে জন্য দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে।
মৌডুবি ইউনিয়নের আরাফাত হোসেন বলেন, বস্তুটি দেখতে ভারী কোনো অস্ত্রের মতো। গ্রামবাসীর ধারণা, পাশের রাবনাবাদ চ্যানেল হয়ে হয়ত এটি ভাসতে ভাসতে এই খালে এসেছে। এটির দৈর্ঘ্য প্রায় ২০ থেকে ২৫ ফুট।
এ বিষয়ে রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, কোস্টগার্ডকে বিষয়টি জানানো হলে ছবি দেখে তারা প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে, বস্তুটি টর্পেডো হতে পারে। টর্পেডো ডুবন্ত অবস্থায় থাকে। যেহেতু এটি ভেসে এসেছে, সে কারণে ধারণা করা হচ্ছে, এটি সম্ভবত ব্যবহৃত। কোস্টগার্ড ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করার পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
এ ব্যাপারে কোস্টগার্ড রাঙ্গাবালী আউটপোস্টের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমাদের আন্ধারমানিক নদীতে যে টিমটি আছে, সেটি ঘটনাস্থলে যাচ্ছে। যতটুকু আমি দেখলাম, ওটা টর্পেডো হতে পারে, মিসাইল নয়।
তিনি বলেন, টর্পেডোর মাঝখানে যেভাবে জোড়া থাকে, ওটারও সেভাবেই আছে। যেকোনো বড় জাহাজ ধ্বংস করে দেওয়ার কাজে টর্পেডো ব্যবহার হয়। এটা নৌবাহিনীর কাছে থাকে।
আবুল কালাম আজাদ আরো বলেন, টর্পেডো অনেক ভারী থাকে। সাধারণত, এটা পানির নিচে থাকে। যেহেতু, এটি ভেসে এসেছে, সুতরাং এটি ব্যবহার করা হয়েছে কিংবা ড্যামেজ হয়েছে বলে ধারণা করছি।
তবে ভেতরে যদি কোনো বাতাস থাকে, তাহলে বিস্ফোরণ ঘটার সম্ভাবনা থাকে। এজন্য ‘বোম ডিসপোজাল’ (বোমা নিষ্ক্রিয়করণ) ইউনিট গিয়ে ওটা পরীক্ষা করে দেখতে পারে। আমাদের যে টিম ঘটনাস্থলে গেছে, তাদের রিপোর্টের প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, টর্পেডো হচ্ছে, এক ধরনের স্বচালিত অস্ত্র, যা পানির নিচে বিস্ফোরক ওয়ারহেড বহন করে এবং লক্ষ্যবস্তুর সংষ্পর্শে বা কাছাকাছি আসার পর বিস্ফোরিত হতে পারে। এটি পানির নিচে বা উপরে উভয় স্থান থেকেই নিক্ষেপ করা যায়। এগুলোকে বিভিন্ন ধরনের উৎক্ষেপক দিয়ে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে নিক্ষেপ করা সম্ভব।