হাতি দেখতে গিয়ে প্রাণটাই দিল বাবাহারা সিবাগতুল্লাহ
মধ্য রাতে হঠাৎ এলাকায় হাজির হাতির দল। সেটি বুঝতে পেরে আশপাশের মানুষ নিজেদের ক্ষেত রক্ষায় চেচামেচি করে হাতিকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য বের হন। এই সময় উৎসুক হয়ে হাতি দেখতে যায় সিবাগতুল্লাহ রিজবী নামের ১৬ বছরের এক কিশোরও। কিন্তু বের হয়েই সে পড়ে যায় হাতির সামনে। মুহূর্তেই হাতির আক্রমণে গুরুতর আহত হয় সে। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে আনা হলেও বাঁচানো যায়নি এই কিশোরকে।
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার বৈলছড়ী ইউনিয়নের পূর্ব বৈলছড়ীর গোদার পাড় সংলগ্ন লিচু বাগানে এই ঘটনা ঘটে। নিহত সিবাগতুল্লাহ রিজবী বৈলছড়ীর কুলিন পাড়া এলাকার মৃত তৈয়ব উল্লার পুত্র।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীর সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। মৃত সিবাগতুল্লাহ কয়েক মাস ধরে পূর্ব বৈলছড়ীর নুন্না পুকুর পাড় এলাকায় মো. ছগিরের মুদির দোকানে চাকরি করে আসছে করে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে লিচু বাগানে হাতি আসার খবর পেয়ে উৎসুক মানুষের সঙ্গে দেখতে গেলে হাতির আক্রমণে গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করায়। পরে চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সিবাগতুল্লাহর প্রতিবেশী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার তারিক মঈন বলেন, ছেলেটা পরিবারকে সাপোর্ট করার জন্য মুদির দোকানে চাকরি করত। যতটুকু জানি হাতির আক্রমণে মৃত্যু হলে পরিবার ক্ষতিপূরণ পায়। ছেলেটিকে তো ফিরে পাওয়া যাবে না। তার পরিবারকে যেন অর্থনৈতিক সাপোর্ট দেওয়া হয়।
বৈলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কফিল উদ্দিন বলেন, ছেলেটা উৎসুক হয়ে হাতি দেখতে গিয়েছিল। কিন্তু রাতের অন্ধকারে হাতির সহজ শিকার হয়ে মারা গেল। রেঞ্জ অফিসকে বিষয়টি জানিয়েছি।
এমন মৃত্যু শুধু অপ্রত্যাশিত নয় পীড়াদায়কও বটে বলে মন্তব্য করেছেন কালীপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, নিয়মিত প্রচার প্রচারণা চালানোর পরেও হাতির কাছে গিয়ে মৃত্যুর শিকার হচ্ছে মানুষ! কিশোরটির পরিবারের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণের আবেদন করলে আমাদের নিয়ম অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।