নেত্রকোনার হাওরে ৮৫ ভাগ ধান কাটা শেষ, খুশি কৃষক
নেত্রকোনা জেলার হাওর এলাকায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। পুরো দমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ে রাত দিন ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। এর মধ্যে হাওর এলাকায় প্রায় ৮৫ ভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে। বোরো ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় খুশি কৃষক।
উজান থেকে নেমে আসা বন্যার শঙ্কায় বাকি ধানগুলো দুই এক দিনের মধ্যে কেটে ফেলার নির্দেশনা দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।
নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ৮৫ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। জেলা চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ লক্ষ ২ হাজার ৪ শত ৪৫ মেট্রিক টন চাল। কিন্তু ফলন ভালো হওয়ায় সম্ভাব্য ১২ লক্ষ ৩৭ হাজার ২২৩ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে। এর মধ্যে হাওর এলাকায় ৪১ হাজার ৭০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। হাওরে চাল উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লক্ষ ৮১ হাজার ৭৭ টন চাল। কিন্তু ফলন ভালো হওয়ায় ২ লক্ষ ৮২ হাজার ৩১৫ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে। বেশিরভাগ জমিতে বি ২৮, বি -৮৮ হাইব্রিড ধানের চাষ হয়েছে।
জেলার হাওর এলাকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ধান কাটা হয়েছে মদন উপজেলার উচিতপুর হাওর, ফতেহপুর হাওর, খালিয়াজুড়ি উপজেলায় কীর্তনখোলা হাওর, লক্ষীপুর হাওর, চুনাই হাওর, কাটকাইলের হাওর,চৈতারা হাওর, লেপসাই হাওর, চৈতারা হাওর,আশাখালী হাওর, পায়া হাওর ও দৈলং সাপমারা হাওরে। এছাড়া মোহনগঞ্জের ডিঙ্গাপোতা হাওর ও কলমাকান্দা উপজেলার হাওরগুলোর ধান কাটা শেষ পর্যায়ে।
দ্রুত ধান কাটার জন্য নেত্রকোনা কৃষি অধিদফতর অফিস থেকে ৭৩০ টি কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন হাওর এলাকায় পাঠানো হয়েছে।
মদন উপজেলার ফতেহপুর হাওর এলাকার কৃষক আরিফ মিয়া বলেন, আমাদের হাওরে ধান কাটা শেষ পর্যায়ে। কিন্তু প্রচণ্ড গরম থাকার পরও পানি না থাকায় নিরাপদে ধান উঠাতে পেরেছি।
কৃষক ফয়েজ আহমেদ বলেন, শুনছি বৃষ্টি ও বন্যার সম্ভাবনা আছে এজন্য কৃষি অফিসের পরামর্শে দ্রুত ধান কেটে ফেলছি।
নেত্রকোনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বার্তা২৪.কমকে বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সঠিকভাবে চাষাবাদ করায় প্রয়োজনীয় সার, বীজ ও কীটনাশক সঠিকভাবে প্রয়োগ করায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। হাওর এলাকায় প্রায় ৮৫ ভাগ ধান কেটে মাড়াই হয়েছে। বাকি ধানগুলো দুই-এক দিনের মধ্যে কাটা ও মাড়াই সম্পন্ন হবে। খুব কম সময়ে কম্বাইন হারভেস্টার মেশিনে ধান কাটা ও মাড়াই করা হয় বলে কৃষকরা তাদের বোরো আবাদ সহজেই ঘরে তুলতে পারছেন।