ধর্মীয় অপপ্রচার মোকাবিলায় ওলামা লীগকে পাশে চায় আ.লীগ



রুহুল আমিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দলের বিরুদ্ধে ওঠা যেকোনো ধর্মীয় অপবাদ ও অপপ্রচার মোকাবিলায় ওলামা লীগকে পাশে রাখতে চায় আওয়ামী লীগ। তবে কাছে টানলেও বিতর্কিত মন্তব্যের ব্যাপারে সজাগ দলটি। আগের মতো যেন কোন বিতর্কিত কাণ্ডে না জড়ায় বা কোন বেফাঁস মন্তব্য না করে, সে জন্য বার বার সতর্ক করা হয়েছে সংগঠনটির নতুন কমিটিকে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখেই মূলত ওলামা লীগকে সক্রিয় করে আওয়ামী লীগ। আগের বিতর্কিত নেতৃত্ব বাদ দিয়ে নতুন নেতাদের মাধ্যমে সম্মেলন করে কমিটি দেয় ক্ষমতাসীন দলটি। গত বছর ২০ মে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সংগঠনটির প্রথম ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের উপস্থিত হয়ে তাদের এ স্বীকৃতি প্রদান করেন। তখন ওলামা লীগকে সংগঠিত করতে কাজ করেন দলটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ।

সম্মেলনের প্রায় এক মাস পর ১৫ জুন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের স্বাক্ষরে কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। যেখানে সভাপতি করা হয় মাওলানা কে এম আব্দুল মমিন সিরাজীকে, আর সাধারণ সম্পাদক করা হয় মো. আমিনুল হককে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত সে কমিটির মেয়াদ শেষ হবে ২০২৬ সালে।

আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, ওলামা লীগকে সমর্থন দেওয়ার পিছনে একটাই কারণ, ধর্মীয় কোন বিদ্বেষ যেন কেউ আওয়ামী লীগের বিপক্ষে ছড়াতে না পারে। ক্ষমতাসীন দলটি চায়, তাদের পাশেও আলেম-ওলামাদের একটি অংশ থাকুক। যারা কেউ বিদ্বেষ ছড়াতে চাইলে তার বিপক্ষে দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষে কথা বলবে।

সূত্রটি জানায়, আওয়ামী লীগকে বিরোধী দলগুলো সবসময় মুসলিম বিদ্বেষী বলে তুলে ধরতে চায়। যার অতীত উদাহরণ অনেক আছে। বলা হয়েছে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে মসজিদগুলো সব মন্দির হয়ে যাবে, মসজিদে আযানের পরিবর্তে উলুধ্বনি হবে। আরও নানান ধর্মীয় অপপ্রচার চালানো হয়েছে। যদি ওলামা লীগের ছায়াতলে আলেম-ওলামারা থাকেন, তাহলে তার উত্তর দেওয়া সহজ হবে।

নতুন প্রত্যাশায়, আওয়ামী লীগের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে কমিটি গঠন হলেও বিতর্ক পিছু ছাড়েনি দলটির। নতুন কমিটি গঠন হওয়ার পরপরই আবারও বিভক্তির মুখে পড়ে সংগঠনটি। চলে অভিযোগ পালটা অভিযোগ।

সেসময় নতুন কমিটির ১৬ জনসহ মোট ৭১ জন নেতা বিবৃতি দিয়ে ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন না করার অভিযোগ তুলেন। বিবৃতিতে নেতারা দাবি করেন, কমিটিতে বিতর্কিতদের পদায়ন করা হয়েছে, পুরাতন নেতাদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। তবে এসব অভিযোগ আমলে নেয়নি আওয়ামী লীগ। ঘোষিত কমিটির প্রতিই সমর্থন বজায় রাখে দলটি। ফলে বিদ্রোহীরা চেষ্টা করলেও এগোতে পারেনি বেশিদূর।

এরইমধ্যে ওলামা লীগ প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয় গত ২০ মে। গুলিস্তানের ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এছাড়াও প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ ও ধর্ম সম্পাদক সিরাজুল মোস্তফা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সতর্ক করেন নেতাকর্মীদের। তিনি বলেন, 'ওলামা লীগে চাঁদাবাজের স্থান নেই। ধর্মের নামে ব্যবসা চলবে না। আওয়ামী লীগের সাথে কাজ করতে হলে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতার আদর্শ মেনে চলতে হবে। শেখ হাসিনার সৎ রাজনীতিকে অনুসরণ করতে হবে।'

এসময় তিনি দলটির নেতাদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, 'ওলামা লীগের ইতিহাস আমাদের জন্য খুব সুখকর। অতীতে যা দেখেছি কারও সঙ্গে কারো মিল নাই। নেতায়-নেতায় বিভেদ। দলের আদর্শ পরিপন্থী সাম্প্রদায়িক বক্তব্য দিতে দেখছি অনেককে। আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের কেউ এমন উচ্চারণ করবে এটা আমি আশা করি না। নেতায়-নেতায় বিভেদ আর চাই না। সত্যিকারের আলেম-ওলামা দিয়ে সংগঠন করতে হবে। কোন টাউট বাটপার যেন অনুপ্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।'

ওলামা লীগ নিয়ে যত বিতর্ক

ওলামা লীগ নিজেদের ১৯৬৯ সালে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠন বলে দাবি করলেও আওয়ামী লীগ কখনো সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম বা সমমনা দল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। বরং নানা সময়ে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়ানোর ফলে বরাবরই তাদের অস্বীকার করে আসছে। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ২১ জানুয়ারি বিপিএল নিষিদ্ধ করা, সংখ্যালঘু আইন না করা ও দেশের সব এনজিও বন্ধসহ ১৩ দফা দাবি নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে। পরে একইদিন তখনকার আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দলটি জানায়, ওলামা লীগের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোন সম্পর্ক নেই।

এর আগে ২০১৭ সালের ২২ মে ওলামা লীগের কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় আওয়ামী লীগ। দলটির সভাপতির ধানমন্ডি রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্পাদকমণ্ডলীর এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তৎকালীন ধর্মবিষয়ক সম্পাদক প্রয়াত শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ জানিয়েছিলেন, দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা ওলামা লীগের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন। ইসলামি ব্যক্তিত্বদের নিয়ে একটি নতুন সংগঠন গঠনের বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। তবে আলোচনা হলেও নতুন সংগঠনের উদ্যোগ সে সময় আর বেশি দূর এগোয়নি।

এছাড়াও দলটি বিভিন্ন সময় মেয়েদের বিয়ের বয়স নির্ধারণ, ধর্ম অবমাননার জন্য মৃত্যুদণ্ডের আইন প্রণয়নসহ শিক্ষা আইন বাতিলের মতো দাবি তুলে। যা নানা সমালোচনার জন্ম দেয়। বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয় আওয়ামী লীগকেও। ফলে বরাবরই ওলামা লীগকে নিজেদের সহযোগী বা সমমনা দল হিসেবেও স্বীকৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানায় আওয়ামী লীগ।

শুধু এটুকুতেই থেমে থাকেনি ওলামা লীগ বরং আরও একধাপ এগিয়ে গিয়ে ২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল সংগঠনটির পক্ষে থেকে পহেলা বৈশাখ পালন বন্ধ করার দাবি করা হয়। সেই সাথে পহেলা বৈশাখকে অপসংস্কৃতি আখ্যা দিয়ে দিবসটিতে রাষ্ট্রীয় সব রকম পৃষ্ঠপোষকতা ও আর্থিক সহযোগিতা বন্ধ করারও দাবি জানিয়েছিল।

ওলামা লীগের আওয়ামী লীগে প্রবেশ

আওয়ামী লীগ ২০১৯ সালে ওলামা লীগকে নিজেদের সহযোগী সংগঠন বলে অস্বীকৃতি জানালেও এরপর থেকেই দলটির নতুন নেতৃত্ব ও কিছু উচ্চাবিলাসী নেতা যোগাযোগ বাড়ায় তখনকার দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপের সাথে। সেই অস্বীকৃতিই যেন পাথেয় হয় প্রায় ৫০ বছরের অস্বীকৃতির বঞ্চনা গোছানোর। পায় হাই কমান্ডের সবুজ ইঙ্গিত। তবে শর্ত একটাই, কোন বিভক্তি রাখা যাবে না দলে, অনুসরণ করতে হবে আওয়ামী লীগের মূল নীতিকে।

সেই শর্ত মেনে নিয়ে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে ওলামা লীগ। সেই সব বৈঠকে মূল সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেন প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ। বিভক্তি থেকে বের হয়ে সংগঠিত হওয়া ও আওয়ামী লীগের মূল নীতি মেনে চলা সাপেক্ষে ওলামা লীগের ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত দেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাও। ফলে বিতর্কিত নেতৃত্বের বিপরীতে নতুন নেতৃত্বের খোঁজে নামে আওয়ামী লীগ।

মূলত আজকের ওলামা লীগের স্বীকৃতি পাওয়ার পিছনে নির্ণায়কের ভূমিকা পালন করেন দলটির তখনকার দপ্তর সম্পাদক ও বর্তমান প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ। সংগঠনকে বিভক্তি থেকে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করেন। বের করে আনেন নতুন নেতৃত্ব। আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগাযোগের সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করেন তিনি। ফলে দ্বাদশ নির্বাচনের আগে ২০২৩ সালের ২০ মে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নিজে উপস্থিত থেকে দলটির সম্মেলন করেন। বেছে নেন নতুন নেতৃত্ব। মৌখিকভাবে স্বীকৃতি দেন সমমনা দল হিসেবে।

মৌখিকভাবে স্বীকৃতি পেলেও সহযোগী না ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন হিসেবে স্বীকৃতি পাবে সে ব্যাপারে এখনো চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি আওয়ামী লীগ। তাই বর্তমানে মৌখিক স্বীকৃতিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে ওলামা লীগকে। এনিয়ে সংগঠনের সভাপতি বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমাদের এখনো কোন লেভেল দেওয়া হয়নি, আমাদের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে কাজ করে যাওয়ার জন্য। আমাদের নতুন কমিটি হয়েছে মাত্র, আমাদের সহযোগী না ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন করবেন এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভালো জানেন।

নতুন করে কমিটি গঠন করতে না করতেই বিভক্তি দেখা দিয়েছে, নতুন করে আরেকটি পক্ষ কমিটি গঠন করেছে, এ-নিয়ে জানতে চাইলে ওলামা লীগ সভাপতি বলেন, আমাদের অন্য কোন কমিটি নেই। আমাদের কমিটিকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুমোদন দিয়ে দিছেন।

নতুন কমিটির একবছর পূর্তি পালন করলেও এখনো কোন নির্দিষ্ট অফিস নেই ক্ষমতাসীনদের সহযোগী এই সংগঠনটির। এক বছরেও কেন কোন অফিস নেই জানতে চাইলে ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক বার্তা২৪.কমকে বলেন, অফিস নিলে তো অনেক অফিসই নেওয়া যায়, কিন্তু আমরা চাচ্ছি ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউর (২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়) সামনে অফিস নিতে।

ইতিহাসে ওলামা লীগ

ওলামা লীগকে আওয়ামী লীগ নানান সময়ে অস্বীকার করলেও ১৯৬৯ সাল থেকেই দলটি আওয়ামী লীগের সহযোগী শক্তি হিসেবে কাজ করে আসছে। মূলত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় দফা ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গঠন হয় সংগঠনটি। বঙ্গবন্ধু ছয় দফা ঘোষণা করলে পাকিস্তানি আলেমরা এর বিরোধিতা করেন। সে সময় মাওলানা শেখ মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ বিন সায়ীদ জালালাবাদী (জালালাবাদী হুজুর) পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) অংশে এই ছয় দফাকে সমর্থন জানান। পরে বঙ্গবন্ধু তাকে ছয় দফার পক্ষে জনমত গঠনের কথা বললে তিনি মাওলানা ওলিউর রহমান, মাওলানা বেলায়েত হোসেনসহ কয়েকজনকে নিয়ে ‘শরিয়তের দৃষ্টিতে ছয় দফা’ নামে প্রচারণায় নামেন। এরপর ১৯৬৯ সালে তারা আওয়ামী ওলামা পার্টি গঠন করেন।

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর থমকে যায় সংগঠনটির কার্যক্রম। সে সময় নানা বিভক্তিও আসে। ধীরে ধীরে সংগঠনটির সব রকম কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে ১৯৯৬ সাল থেকে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে যুক্ত হতে শুরু করে আওয়ামী ওলামা লীগ। ধীরে ধীরে বাড়াতে থাকে নিজেদের কার্যক্রম। এমনকি ২০০১ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত নানা আন্দোলন কর্মসূচিতে তারা সক্রিয় ছিল। তবে এরপর আবার শুরু হয় বিভক্তি। দুইভাগে বিভক্ত হয়ে যায় তারা।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার পর থেকে ওলামা লীগের সঙ্গে দূরত্ব শুরু হয়। পরে বিভক্তি, নেতায়-নেতায় বিভেদ ও নানা বিতর্কিত কাণ্ডে জড়িয়ে পড়ায় আওয়ামী লীগ তাদের সঙ্গে সম্পর্ক অস্বীকার করে। তবে সে অবস্থা থেকে বের করে এনে এখন আওয়ামী লীগের মতাদর্শে ঐক্যমত পোষণ করার ভিত্তিতে আবারও নিজেদের করে নিয়েছে।

ওলামা লীগ একটি সাম্প্রদায়িক দল ও আওয়ামী লীগ অসাম্প্রদায়িক। অসাম্প্রদায়িক আওয়ামী লীগের কেন সাম্প্রদায়িক ওলামা লীগের প্রয়োজন, এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল মোস্তফা বার্তা২৪.কমকে বলেন, এটা আমার ব্যাপার নয়, এটার ব্যাখ্যা দিতে পারবেন একমাত্র আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব। ইনারাই করছেন, ইনারাই জানেন।

তিনি আরও বলেন, আমি আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক। আমি সকল ধর্মের জন্যই সহায়ক হিসেবে কাজ করি। সবাই যেন সঠিকভাবে ধর্ম পালন করতে পারে, সেখানে যদি দলের পক্ষ থেকে কোন সহযোগিতা দিতে হয় সেই কাজটা আমি করি। এর বাইরে কিছু নয়।

   

রাষ্ট্রদূতকে কুয়েতে জনশক্তি রপ্তানিতে কাজ করার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও কুয়েতে বাংলাদেশের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল সৈয়দ তারেক হোসেন

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও কুয়েতে বাংলাদেশের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল সৈয়দ তারেক হোসেন

  • Font increase
  • Font Decrease

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন কুয়েতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের সার্বিক কল্যাণের পাশাপাশি নতুন করে জনশক্তি রপ্তানির বিষয়ে বাংলাদেশের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

বুধবার (২৬ জুন) বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সাথে কুয়েতে বাংলাদেশের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল সৈয়দ তারেক হোসেন সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এই নির্দেশনা দেন।

পরে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন গণমাধ্যমকে জানান, সাক্ষাৎকালে কুয়েতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের সার্বিক কল্যাণের পাশাপাশি নতুন করে জনশক্তি রপ্তানির বিষয়ে রাষ্ট্রদূতকে কাজ করার নির্দেশ দেন রাষ্ট্রপ্রধান।

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, কুয়েতের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিদ্যমান সম্ভাবনাগুলোকেও কাজে লাগাতে হবে।

নতুন রাষ্ট্রদূত দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রপতির দিক নির্দেশনা কামনা করেন। সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিবগণ উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র: বাসস

;

বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কে বাস ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষ, আহত ৬



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
বাস ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ/ছবি: বার্তা২৪.কম

বাস ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ/ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কে বাস ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৬ জন আহত হয়েছেন। বুধবার (২৬ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঝালকাঠির নলছিটিতে খয়রাবাদ সেতুর ঢালে এ ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নলছিটি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শহিদুল আলম।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল থেকে পটুয়াখালীগামী একটি বাসের সাথে পটুয়াখালী থেকে ঢাকাগামী একটি মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মাইক্রোবাসটি দুমড়ে মুচড়ে যায়।

এ সময় চালকসহ ৪ জন যাত্রী আহত হয়। এদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের বরিশালের ফায়ার সার্ভিস, নলছিটি থানা পুলিশ ও স্থানীয়রা উদ্ধার করে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

ঝালকাঠি নলছিটি থানার এসআই শহিদুল আলম বলেন, আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

;

উৎপাদন বাড়লেও রংপুরে মাছের ঘাটতি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
মাছ বাজার/ছবি: বার্তা২৪.কম

মাছ বাজার/ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুর বিভাগে গত ৫ বছরে মাছের উৎপাদন বেড়েছে। তারপরও বিভাগটিতে মাছের চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। এ অঞ্চলে বছরে মাছের চাহিদা ৩ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন। বিপরীতে চলতি বছর উৎপাদন হয়েছে ৩ লাখ ৮ হাজার মেট্রিক টন। সেই হিসেবে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে ৩২ হাজার মেট্রিক টন।

পানি মিঠা ও সুস্বাদ হওয়ায় রংপুর অঞ্চলের নদ-নদী, খাল-বিলে একসময় ২০০ প্রজাতির মাছের নিরাপদ আশ্রয়স্থল ছিল। কালের বিবর্তনে জলবায়ুর পরির্বতন ও পরিবেশগত কারণে প্রায় ৩০ প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির পথে। ফলে এ অঞ্চলের মানুষের মাছের অপর্যাপ্ততায় রয়েছে নানামুখী সমস্যা। বিশেষ করে আমিষ জাতীয় খাদ্যের অভাবে স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।

মৎস্য বিভাগ বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় মাছের ঘাটতি পূরণে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিভাগের ৫৮টি উপজেলায় গড়ে তোলা হয়েছে মাছের একাধিক অভয়াশ্রম। বিশেষ করে দেশি মাছ চাষে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। আগামী দুই এক বছরের মধ্যে এই অঞ্চলে মাছের ঘাটতি থাকবে না বলে মনে করা হচ্ছে। তিস্তার উজানে বাঁধ নির্মিত হওয়ায় এ অঞ্চলে জলশূন্যতা বিরাজ করছে। দিনাজপুর অঞ্চলের কাঁকর ও বালিযুক্ত মাটির পানি ধারণ ক্ষমতা কম। সর্বত্রই প্রতিকূল পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ায় মাছের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

তবে এই অঞ্চলে পানি স্বাদু হওয়ায় খুব দ্রুত মাছের উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব বলে মনে করছে মৎস্য বিভাগ। মৎস বিভাগ তথ্য সূত্রে জানা গেছে, রংপুর বিভাগে শতাধিক নদী, খাল প্রায় ৪ লাখ হেক্টর, ৮৩৭টি বিলে ৪০ হাজার ২৮৮ হেক্টর, ২ লাখ ৪৮ হাজার ৭০২টি পুকুরে ১২ হাজার ২৬৯ হেক্টর জমিতে মাছ চাষ হয়। এছাড়া বর্ষাকালে প্লাবন ভূমিতে মাছ চাষ হয়। রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় দেড় কোটি ওপর মানুষের বসবাস।

শিশু ও প্রাপ্ত বয়স্ক মিলে একজন মানুষের গড়ে প্রতিদিনে মাছের চাহিদা ৬০ গ্রাম। সেই হিসেবে একজন মানুষের প্রতিবছর মাছের চাহিদা প্রায় ২২ কেজি। কিন্তু চাহিদা অনুয়ায়ী মাছ খেতে পারছে না এই অঞ্চলের মানুষ। ফলে সারা বছরই মাছের ঘাটতি থেকে যাচ্ছে।

মৎস্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের সৃষ্টি পরিবেশগত পরিবর্তনের সাথে সাথে প্রকৃতিতে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়ায় জলাশয়গুলোতে পড়েছে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব। দারি, টিলা, কালা বাটা, ঘোড়া, পুঁটি, বোল, চিতল, গজার, রিটা, বট শিং, ঘাউড়া, সালবাইম, কাচকি, ফলি, শিল বাইলা ইত্যাদি দেশি প্রজাতির মাছ হারিয়ে যেতে বসলেও কিছু কিছু দেশি মাছের উৎপাদন আগের চেয়ে বেড়েছে।

রংপুর মৎস্য অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, এই অঞ্চলে মাছের ঘাটতি পূরণে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে দেশি পাবদা, টেংরা, শিং, মাগুর ইত্যাদি মাছের উৎপাদন বাড়াতে সরকারিভাবে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। মৎস্য অভয়াশ্রম সংরক্ষণ ও মেরামত, সম্প্রসারণ কার্যক্রম চলছে।

এছাড়া মৎস্যকে যান্ত্রিকীকরণের প্রক্রিয়া হাতে নেওয়া হয়েছে। এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন হলে এ অঞ্চলে মাছের ঘাটতি থাকবে না।

;

নীলফামারীতে মাইন সদৃশ বোমা উদ্ধার করল পুলিশ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে তিস্তা সেচ ক্যানেলের ধারে পড়ে থাকা একটি মাইন সদৃশ বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে এটি মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের।

বুধবার (২৬ জুন) দুপুরে উপজেলার বাজেডুমরিয়া ক্যানেল বাজার এলাকা থেকে এটি উদ্ধার করা হয়।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, তিস্তা সেচ ক্যানেলের ধারে শিশুরা খেলছিল। এসময় একটি মাইন সদৃশ বোমা পড়ে থাকতে দেখতে পায়। পরে শিশুরা আশেপাশের লোকজনকে জানায়। স্থানীয় লোকজন সেখানে গিয়ে মাইন সদৃশ বোমা দেখে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে সেটি উদ্ধার করে। বর্তমানে ঘটনাস্থলে সেটি নিরাপত্তা বেস্টুনি দিয়ে ঘিরে রেখে পুলিশের পাহারা জোরদার করা হয়েছে।

কিশোরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পলাশ চন্দ্র মন্ডল বার্তা২৪.কমকে বলেন, তিস্তা সেচ ক্যানেল এলাকায় একটি মাইন সদৃশ বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এটি নিষ্ক্রিয় করার জন্য বোম ডিসপোজাল ইউনিটকে খবর দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ২২ এপ্রিল একই জায়গায় ক্যানেলের পাশে পতিত জমি খননের সময়ে একটি থ্রি নট থ্রি রাইফেল, দুইটি মাইন ও একটি মর্টার শেল উদ্ধার করা হয়। পরে সেটি বোম ডিসপোজাল ইউনিট এসে নিষ্ক্রিয় করেন।

;