‘হেপাটাইটিস বি-সি প্রতিরোধে স্বেচ্ছা রক্তদানকে শক্তিশালী করতে হবে’

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

হেপাটাইটিস বি-সি প্রতিরোধে স্বেচ্ছা রক্তদানকে শক্তিশালী করতে হবে

হেপাটাইটিস বি-সি প্রতিরোধে স্বেচ্ছা রক্তদানকে শক্তিশালী করতে হবে

হেপাটাইটিস বি ও সি মারাত্মক ব্যাধি। এটি নির্মূলে টিকাদান কর্মসূচির পাশাপাশি স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালীকরণ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বক্তারা।

বুধবার (১২ জুন) সন্ধ্যায় ঢাকার আইডিইবি ভবনে ‘হেপাটাইটিস বি ও সি প্রতিরোধে নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালনের গুরুত্ব ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের ১৪ জুন বিশ্ব রক্তদাতা দিবস উপলক্ষে সেমিনারে এ মন্তব্য করেন বক্তারা। 

বিজ্ঞাপন

বক্তারা বলেন, দেশের জনসংখ্যার প্রায় ৫ দশমিক ১ শতাংশ হেপাটাইটিস বি আক্রান্ত। অর্থাৎ এ রোগে প্রায় ৮৫ লাখ মানুষ আক্রান্ত। আর সি আক্রান্ত জনসংখ্যা প্রায় ০.৫ শতাংশ। সাধারণত রক্তের মাধ্যমে হেপাটাইটিস বি এবং সি ভাইরাস ছড়ায়। এর মধ্যে রয়েছে অনিরাপদ রক্ত সঞ্চালন, অনিরাপদ সুঁচ বা সিরিঞ্জের ব্যবহার ইত্যাদি। একই সুঁচের মাধ্যমে বিভিন্নজনে ইনজেকশন, ড্রাগ ব্যবহারের মাধ্যমেও এটি ছড়াতে পারে। অনিরাপদ ও পেশাদার রক্তদাতার রক্ত এ কারণেই ঝুঁকিপূর্ণ। এজন্যেই নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালনকে গুরুত্ব দিতে হবে। হেপাটাইটিস প্রতিরোধে স্বেচ্ছা রক্তদানের ভূমিকা খুবই গুরুত্ব বহন করে। নিরাপদ রক্তের জন্যে তাই স্বেচ্ছা রক্তদানকে শক্তিশালীকরণ করা প্রয়োজন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে কথাসাহিত্যিক ও মনোচিকিৎসক অধ্যাপক ডা. আনোয়ারা সৈয়দ হক বলেছেন, করোনার সময় কোয়ান্টাম যে কাজ করেছে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয় কাজ করেছে। করোনায় আমার বোন মারা গেলে তাকেও কোয়ান্টাম গ্রামে নিয়ে যাওয়া ও দাফনের কাজ করে। 

বিজ্ঞাপন

হেপাটোলজি সোসাইটি বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেছেন, আগে রক্তদান ও রক্তগ্রহণের মাধ্যমে সি ভাইরাস বেশি ছড়াতো। তখন স্বেচ্ছারক্তদাতা পাওয়া যেত না। কারণ তখন প্রফেশনাল রক্তদাতার থেকে রক্ত নিতে হতো কিন্তু এখন স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের কারণে সি ভাইরাস অনেক কমে এসেছে। একসময় হয়তো আমাদের ছাত্রদের সি ভাইরাস রোগী দেখাতে মিউজিয়ামে যেতে হবে, এটা আপনাদের কৃতিত্ব।

স্বেচ্ছায় ২৯ বার রক্তদাতা কাউকা আস সাদিয়া বলেন, রক্তদানকে মহৎ কাজ বলে জেনে এসেছি। তবে জানা ও প্রয়োগ করা দুইটি ভিন্ন বিষয়। তিন সন্তানের জন্মের কারণে ৯ বছর রক্ত দিতে পারিনি তারপরও ২৯ বার রক্ত দিয়েছি। এটার মাধ্যমে কিন্তু আমার লাভ হয়েছে। আমি রক্ত দেয়ার কারণে নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন ছিলাম। হিমোগ্লোবিন বাড়ানো যায় এমন খাবার খেয়েছি। আবার অন্যদিকে ফ্রি তে প্রতিবার হেপাটাইটিস বি ও সি টেস্টের রিপোর্ট পেয়ে গেছি। এতো ব্যয়বহুল একটি টেস্টের রিপোর্ট আমি কোয়ান্টামের কাছ থেকে ফ্রি তে পেয়ে গেলাম।

অনুষ্ঠানে ৫০ বার ও ২৫ বারের স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের সম্মাননা ও ক্রেস্ট দিয়ে কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।

প্রসঙ্গত, বিশ্ব রক্তদাতা দিবস ঘিরে তিন দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে কোয়ান্টাম। বুধবার (১২ জুন) স্বেচ্ছা রক্তদাতা ও রক্তগ্রহীতার মিলনমেলা ও বিশেষ সেমিনার, বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) রক্তদান কার্যক্রমে স্বেচ্ছাসেবীদের উদ্বুদ্ধকরণ এবং শুক্রবার (১৪ জুন) রক্তদাতা দিবসে কোয়ান্টাম ল্যাবে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলবে বিশেষ রক্তদাতা উৎসব। ল্যাবে গিয়ে রক্তদান করলে এক ব্যাগ রক্তকে একাধিক উপাদানে ভাগ করে রোগীকে সেবা দেয়া যায়। তাই ল্যাবে গিয়ে রক্তদানে উদ্বুদ্ধ করতেই এমন আয়োজন করা হয়।