রংপুর থেকে বগুড়া পৌঁছতে ৮ ঘণ্টা

  • সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

রংপুর-ঢাকা মহাসড়ক থেকে রাত ১০টার বাসটি ভোরে ঢাকায় পৌঁছার কথা। ভোর গড়িয়ে গেছে বগুড়া পার হতেই। পাক্কা ৮ ঘণ্টা সময় লেগেছে রংপুর-বগুড়ার ১০০ কিলোমিটার রাস্তায়।

মহাসড়কে মহাজ্যামের দুর্বিষহ রাত পেরিয়ে ভোরের আলো যাত্রীদের মনে আশার আলো সঞ্চার করার অনেক নজীর রয়েছে। ভোরের আলোর সঙ্গে সঙ্গে ট্রাফিক বিভাগের তৎপরতা বেড়ে যায়, ধীরে ধীরে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসে। কিন্তু আজকে তার লেশমাত্র নেই। বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতুর পশ্চিমে এক জায়গায় ২ ঘণ্টা ধরে থমকে আছে বাসটি। শুধু বাসটি বললে ভুল হবে, শতশত নয় হাজার হাজার বাস-ট্রাক-প্রাইভেট গাড়ি।

বিজ্ঞাপন

ঈদের আনন্দ শেষে কর্মস্থলে ফেরা লোকজন মহাবিড়ম্বনায় পড়ে গেছেন। বিশেষ করে নারী শিশুদের ত্রাহী অবস্থা। তাদের না আছে খাবারের কোন ব্যবস্থা, না আছে জরুরি প্রয়োজন সারবার কোন সুযোগ। ঈদ যাত্রার এই দুর্ভোগ নিত্য দিনের চিত্রে পরিণত হয়েছে।

আগে যখন ফেরীতে পার হতে হতো তখন নানা দুর্ভোগ হতো। কখনও কুয়াশায় ফেরী বন্ধ, কখনও আবার ডুবোচরে আটকে রাত কাবার। বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু হওয়ার পর মনে হয়েছিল এবার বুঝি দুখের অবসান হল। কিন্তু কপালে সুখ বেশিদিন টিকল না। সাভার, নবীনগর, আশুলিয়ায় জট তৈরি হতে থাকল। এরপর যখন ঢাকা-টাঙ্গাইল চার লেন হল, তখন এদিকে জট কমে গেলো, এলেঙ্গা ও সেতুর টোল প্লাজায় দুর্ভোগ শুরু। এখন এলেঙ্গা, সিরাজগঞ্জে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয়।

এখন বলা হচ্ছে টাঙ্গাইল-রংপুর চার লেন হলে যানজট থাকবে না। চার লেন অনেকটা হয়েছেও কিন্তু দুর্ভোগ কমেনি। ময়মনসিংহ রুটেও চার লেন হয়েছে কিন্তু অবস্থার তেমন উন্নতি হয়নি। এর জন্য সবার আগে প্রয়োজন শৃঙ্খলা ও আইনের কঠোর প্রয়োগ

রাস্তায় জটের কারনে কয়েক বছর ধরে বাসের সূচি লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়া নিয়তিতে পরিণত হয়েছে। যানজটের কারণে নির্ধারিত সময়ে যাত্রী পৌঁছে দিয়ে ফিরতে পারেনি বাসগুলো। এমন সময় গেছে ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত বিলম্বে বাস ছেড়ে গেছে। ২০১৯ সালে বিলম্ব করতে করতে শেষ দিকের বাসগুলোর যাত্রা বাতিল করা হয়।

এ মাসের ২২ জুনেও অনেক বাস বিলম্বে ছেড়েছে রংপুর থেকে। শ্যামলী পরিবহনের রাত ৯.৩০ টার বাস ছেড়েছে রাত ১ টায়। এতে করে শুরুতেই দুর্ভোগ পিছু নিয়েছে। সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত পিছনে লেগে রয়েছে। অথচ আরও কয়েক ঘণ্টা আগেই ঢাকায় পৌঁছার কথা ছিল। আন্তর্জাতিক মানদন্ড বিবেচনা করলে ঢাকা-রংপুর ৩ ঘণ্টার পথ। কিন্তু ৬ থেকে ১০ ঘণ্টা ধরে নিয়েই অনেকে যাত্রা শুরু করেন। তার সাড়ে ১০ ঘণ্টা খেয়ে ফেলেছে অর্ধেক পথেই।