ঈশ্বরগঞ্জে ফার্মাসিস্ট দিয়ে চলেছে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র

  • উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের রাজিবপুর ইউনিয়নের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র/বার্তা২৪.কম

ছবি: ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের রাজিবপুর ইউনিয়নের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র/বার্তা২৪.কম

প্রতিদিন অন্তত ৭০/৮০ জন রোগী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসেন চিকিৎসা সেবা নিতে। কিন্ত চিকিৎসক না থাকায় তাদের প্রত্যেককেই ফিরতে হয় আশাহত হয়ে। অন্যান্য জনবল সংকটের পাশাপাশি নেই প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। রয়েছে অব্যবস্থাপনা ও তদারকির অভাব। এমন চিত্র ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের রাজিবপুর ইউনিয়নের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রের।

জানা গেছে, রাজিবপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে চারটি পদ রয়েছে। একজন করে মেডিকেল অফিসার, উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, ফার্মাসিস্ট ও এমএলএমএস। এরমধ্যে চার বছর ধরে মেডিকেল অফিসারের পদটি খালি। এলএমএস পদও শূন্য। আর উপসহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার পদ থাকলে দায়িত্ব পালন করেন অনিয়িমত জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

বিজ্ঞাপন

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, রাজিবপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রের দরজা-জানালা ভাঙা। দুতলায় কেউ না থাকায় ময়লা অবর্জনায় ভরপুর। এছাড়াও নেই প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র। এখানে চিকিৎসা নিতে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেন ফার্মাসিস্ট তোফায়েল।

তিনি জানান, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে প্রতিদিন ৭০/৮০ জন রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসে। তিনি চার বছর ধরে এখানে কর্মরত। এরমধ্যে কোনো মেডিকেল অফিসারকে দেখেননি।

স্থানীয়রা জানান, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি উপসহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার থাকলেও মাসে চার/পাঁচ দিনের বেশি তিনি আসেন না।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল জলিল (৪৫) জানান, তিনি এসেছেন গ্যাস্ট্রিকের ঔষুধ নিতে। সাথে প্যারাসিটিমলও নিবেন। চিকিৎসক না দেখিয়ে কেন নিজেই নাম ধরে ঔষুধ নিবেন এমন প্রশ্ন কররে তিনি বলেন,‘এইনো কারে কইয়াম,কোনো ডাক্তর তো নাই। তাই ঠেহা (প্রাথমিক) কাম সারি আরকি।'

বেদেনা বেগম( ৫০) বলেন, 'শইলডা জালাপোড়া করে, হাতপাও চাবায়। রাইতে ঘুমায়তাম পারিনা। সদরে গিয়া যে ডাক্তর দেহাইয়াম হেইডার যোগাড় নাই। অহন তো দেহি এই হসপিটালে ডাক্তর নাই। অহন কিতা করবাম। অহন নিজেই কইছি আইরন ও ভিটামিনের বড়ি দিতো।'

এ ব্যাপারে রাজিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল আলী ফকির জানান,এই হাসপাতালের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মজনু মিয়া গত কিছুদিন আগে সরকারী ঔষুধ নিয়ে পালানোর সময় জনতা হাতে নাতে ধরে। কিন্তু কর্তৃপক্ষকে জানালেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

এছাড়া ফার্মাসিস্ট সপ্তাহে ২/৩দিন আসলেও ঘন্টাখানেক ওষুধ দিয়ে চলে যায়। এ ঘটনা তিনি উপজেলা সমন্বয় সভায় উপস্থাপন করেছেন।

এ ব্যাপারে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সোমাইয়া হোসেন লিয়া জানান, চার বছর ধরে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়মিত কোন চিকিৎসক নেই। পরপর দুজন চিকিৎসক নিয়োগ পেলেও উচ্চতর প্রশিক্ষণ এর কারণ দেখিয়ে তারা চলে যান। আর উপসহকারি কমিউনিটি অফিসার মজনু মিয়ার অনিয়মিত থাকার বিষয়ে বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নেবো।