সাভারের আশুলিয়ায় টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবীতে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন লেনী ফ্যাশনস ও লেনী অ্যাপারেলস কারখানার শ্রমিকেরা। একই সঙ্গে তারা ঢাকা রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ডিইপিজেড) পুরাতন অংশের মূল ফটকে অবস্থান নিয়েছেন।
সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে আন্দোলনরত শ্রমিকদের কয়েকজন প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করছেন ডিইপিজেডের কর্মকর্তারা।
বিক্ষোভকারী একাধিক শ্রমিক জানান, চার বছর আগে শ্রমিকদের বেতন বকেয়া রেখে বন্ধ হয়ে যায় লেনী ফ্যাশন ও লেনী অ্যাপারেলস কারখানা। এরপর কারখানা দুটির একটি বিক্রি করে দেন বেপজা কর্তৃপক্ষ। কারখানা বিক্রির টাকা ব্যাংকে জমা থাকলেও শ্রমিকদের বকেয়া এখন পরিশোধ করা হয়নি।
তারা জানান, গতকাল মঙ্গলবার সকালে বকেয়া বেতনের দাবিতে ডিইপিজেডের সামনে জড়ো হন এ দুটি কারখানা শ্রমিকেরা। পরে তারা নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। রাতে ৯ টার দিকে সড়ক ছেড়ে দিয়ে ডিইপিজেডের পুরাতন অংশের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নেন। সারারাত সেখানেই অবস্থান করেন।
আজ বুধবার (২৭ নভেম্বর) সকালে আরো শ্রমিক তাদের সঙ্গে যোগ দেন। পরে ফটকের সামনে ও মহাসড়কে অবস্থান নেন তাঁরা। সকালে ডিইপিজেডের পুরাতন অংশের কারখানার শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিতে তাঁদেরকে বাঁধা দেয়া হলে কাজ করতে আসা শ্রমিকেরা ফিরে যান।
শ্রমিক মেরিনা আক্তার বলেন, আমরা কাল থেকে কষ্ট করতেছি তারপরেও কোন সমাধান হয় নাই। আমাদের একটাই দাবি আমরা এখান থেকে টাকা নিয়ে যাবো। আমাদের বলা হইছিলো ৩০ নভেম্বর টাকা দিবো, যদি দিত তাহলে আর এরকম ঝামেলা করতে হতো না। যেহেতু তারাও ঝামেলা করতেছে আমরাও আমাদের ঝামেলা নিয়ে গতকাল থেকে এখানে বসে আছি। আমরা আমাদের টাকা নিয়ে এখান থেকে ঘরে ফিরবো।
অপর শ্রমিক ফিরোজ আহম্মেদ বলেন, ৪ বছর আগে পাওনা না দিয়ে হঠৎ করে ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দিছে। এখন আমরা বকেয়া বেতনের জন্য আন্দোলন করতেছি। যতক্ষণ পর্যন্ত টাকা না দেয়া হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, সমস্যা সমাধানে ডিইপিজেড কর্তৃপক্ষ শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। আমরাও শ্রমিকদের বুঝানোর চেষ্টা করছি। সড়ক অবরোধ করায় যানবাহনগুলোকে বিকল্প সড়ক ব্যবহার করতে হচ্ছে।
বেপজার নির্বাহী পরিচালক (জনসংযোগ) আনোয়ার পারভেজ বলেন, বেপজার পক্ষ থেকে শ্রমিকদের বুঝানোর চেষ্টা চলছে। তাদেরকে আমরা চাইলেও এই মুহূর্তেই কেন দুটি কারখানার শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না সেটি বুঝানোর চেষ্টা করছি। কারখানা বিক্রির পদ্ধতি, আইনী প্রক্রিয়া এবং বকেয়া পরিশোধের পদ্ধতির বিষয়টি তাদের জানানো হচ্ছে।