ফেনীতে এক বছরে জরিমানা সাড়ে ২৪ লাখ, তবুও অরক্ষিত ভোক্তার অধিকার
রংপুরে জেঁকে বসেছে শীত, ভোগান্তি খেটে খাওয়া মানুষের
লালমনিরহাটে সমন্বয়কের ওপর হামলা, গ্রেফতার ২
কুমারখালিতে লাইসেন্স ছাড়াই সার মজুদ, ব্যবসায়ীর জরিমানা
‘মহিউদ্দিন চৌধুরী’ বদলে ‘শহীদ ওয়াসিম’র নামে চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে, শুক্রবার থেকে শুরু টোল
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের লালবাগ থানাধীন ২৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আমিনুল ইসলাম আমিনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আজিমপুর কবরস্থানে চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রাতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক (দপ্তরের দায়িত্বে) সাইদুর রহমান মিন্টু স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু এবং সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ রবিনের নির্দেশক্রমে দলের সকল পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ছাড়াও বহিষ্কৃত আমিনুল ইসলাম আমিনের সঙ্গে সকল রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক যোগাযোগ থেকে বিরত থাকার জন্য সকলকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের আওতায় ২০২৪ সালে ফেনীতে ২৪ লাখ ৩৯ হাজার ৫৫০ টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও জেলাপ্রশাসন ফেনী।
অন্যদিকে ২০২৩ সালে শুধুমাত্র ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর কর্তৃক ৯ লাখ ৬১ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। সংশ্লিষ্টরা বলছেন বছরব্যাপী জরিমানা বাড়লেও কমেনি ভেজালের সংখ্যা, এখনও অরক্ষিত ভোক্তার অধিকার।
জেলাপ্রশাসনের দেয়া তথ্যমতে ২০২৪ সাল জুড়ে জেলা ও উপজেলা জুড়ে ভোক্তা অধিকার আইনে ১৭৮টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ৩২৩টি মামলায় ৩২৩ জন ব্যাক্তিকে ১৩ লাখ ১৩ হাজার ৫০ টাকা জরিমানা করা হয়।
অন্যদিকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যনুযায়ী ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭২ দিন অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। যার মধ্যে ১৪০ টি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে ১১ লাখ ২৬ হাজার ৫০০ টাকা। এরমধ্যে জানুয়ারি মাসে ৭ দিন অভিযান পরিচালনা করে ১৩টি প্রতিষ্ঠানকে ১ লাখ ৪৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ফেব্রুয়ারিতে ৫ দিন অভিযান পরিচালনা করে ৭টি প্রতিষ্ঠানকে ১ লাখ ৪৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। মার্চে ৭ দিন অভিযান পরিচালনা করে ১৬টি প্রতিষ্ঠানকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এপ্রিলে ৪ দিন অভিযান পরিচালনা করে ৬টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। মে মাসে ৮ দিন অভিযান পরিচালনা করে ১০টি প্রতিষ্ঠানকে ২ লাখ ১২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
জুন মাসে ৫ দিন অভিযান পরিচালনা করে ৮টি প্রতিষ্ঠানকে ৬১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জুলাই মাসে ৩ দিন অভিযান পরিচালনা করে ৬টি প্রতিষ্ঠানকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। আগস্ট মাসে ১ দিন অভিযান পরিচালনা করে ১টি প্রতিষ্ঠানকে ৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সেপ্টেম্বর মাসে ৭ দিন অভিযান পরিচালনা করে ১০ টি প্রতিষ্ঠানকে ৯৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অক্টোবর মাসে ৯ দিন অভিযান পরিচালনা করে ২৩টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৬ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। নভেম্বর মাসে ৯ দিন অভিযান পরিচালনা করে ২৬টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং ডিসেম্বর মাসে ৭ দিন অভিযান পরিচালনা করে ১৪টি প্রতিষ্ঠানকে ৫৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এসব বিষয়ে কথা হয় শহরের কয়েকজন ব্যবসায়ীর সাথে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, অনেক ব্যবসায়ীরা আছে যারা আইন মেনে চলেনা।জরিমানার পরেও তারা সচেতন হয়না। যার কারনে ভোক্তার আইন অরক্ষিতই থেকে যায়।
সায়েম উল্ল্যাহ নামে এক কলেজ শিক্ষার্থী বলেন, বাজারে গেলে শুনি শুধু অভিযান হয় তবুও কারও মধ্যে সচেতনতা দেখিনা।।সচেতনতা বাড়াতে সবার সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
এ বিষয়ে এ বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ফেনীর সহকারী পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো: কাউসার মিয়া বলেন,ভোক্তা এবং ব্যবসায়ী কেউই সচেতন নয়। ব্যবসায়ীরা নৈতিকতার দিকে নজর দেয় না। তারা তাদের লভ্যাংশ চিন্তা করে। অন্যদিকে ভোক্তারাও প্রতিবাদ করে না। যার কারনে ভোক্তার আইন বাস্তবায়ন হয় না।
তিনি বলেন, আইন বাস্তবায়নে ক্ষমতা দেয়া উচিত। মাঠ পর্যায়ে আইন বাস্তবায়ন না করতে পারলে আইন লঙ্গন হবে। আইনের পূর্ন ক্ষমতা প্রতিষ্ঠানকে দিতে হবে। ভোক্তা অধিকারকে সম্পূর্ণ ক্ষমতা দেয়না পাশাপাশি আইন বাস্তবায়নে লোকবল ও কম যা ভোক্তা অধিকারের নেই। এটি বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে লোক বাড়াতে হবে। নিয়মিত কর্মকর্তা দিতে হবে।
এ কর্মকর্তা বলেন, কয়দিন পর পর জিনিসের দাম বাড়ে।এটার সাথে অনেকগুলো দপ্তরের সম্পর্ক আছে। ভোক্তার কাজ বাজারে আসার পর অধিকার লঙ্গন হয় কিনা তা যাচাই করা। কিন্তু বাজারে আসার আগে এসব দেখার কথা কৃষি বিপনন কর্মকর্তার। এরপর ভোক্তা অধিকার ও জেলাপ্রশাসন দেখবে। সব দফতর একযোগে বাস্তবায়ন করলে ভোক্তার অধিকার বাস্তবায়ন হবে।
উত্তরের জেলা রংপুরে জেঁকে বসেছে শীত। টানা কয়েকদিন ধরে বিরাজ করছে ঘন কুয়াশা ও বইছে হিম বাতাস। দুপুর গড়িয়ে গেলেও দেখা মিলছেনা সূর্য মামার। কনকনে এই শীতে খেটে খাওয়া মানুষদের বেড়েছে ভোগান্তি। পেটের তাগিদে শীত উপেক্ষা করেই ছুটে চলছেন শ্রমজীবী মানুষজন। সন্ধ্যার পর থেকেই চোখে পরে আগুন পোহানোর ধুম।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রংপুরের তাপমাত্রা ১৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই অবস্থা আরও দুই থেকে তিন থাকতে পারে বলে রংপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে। এছাড়াও আগামী সপ্তাহে তাপমাত্রার উন্নতি হলেও মৃদু শৈতপ্রবাহের পূর্বাভাস জানানো হয়।
শীত উপেক্ষা করে নগরীর শাপলা চত্তরে ডালা কোদাল নিয়ে বসে থাকা রহিজ উদ্দিন বলেন, 'প্যাটতো বাহে জার বোজে না। হামার জার নাগে বাহে এই কতা শোনে কায়? হামার খোঁজ কাইয়ো না রাখে। জারোত বাড়িত থাইকলেতো প্যাটোত ভাত যাবার নায়। কি আর করার,জারোতে আসি বসি থাকায় নাগে।'
একই স্থানে বসে থাকা কয়েকজন খেটে খাওয়া মানুষ দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, 'কয়দিন হাতে খুবই শীত পরছে। হামার এতি এলাও কম্বল না দেয় কাইয়ো। শুধু গ্রামে গ্রামে দেয় বরলোকের ঘর। হামরা গরীব মানুষ শহরোত থাকি জইনতে কোন না পাই। কারো চোখে হারা না পরি। শীত শেষে কম্বল পায়া কি করমো। হামার জার কাটে এইতন করিয়াই৷'
রংপুর নগরীর রবার্টসনগঞ্জ এলাকায় ভোরে পিঠার পসরা সাজিয়ে বসা নারী তাছলিমা বলেন, 'স্বামী নাই দুই ছাওয়া নিয়া করি মিলি খাই। শীতের দিন পিঠা ভালো চলে এইজন্যে দুইবেলা পিঠা বিক্রি করি। টোনাটুনির মধ্যে কোনমতে দিন পার। ভোরে খোলা জায়গায় চুলা নিয়া বসি খুব শীত লাগে। এখনো কোন শীতের কাপর বা কম্বল কেউ দেয় নাই নিজের যা আছে কোনরকমে পরি থাকি।'
সন্ধ্যার পরে শহরে বিভিন্ন স্থানে এবং বিভিন্ন এলাকাগুলোতো দেখা যায়, খড়কুটো, পলিথিন জ্বালিয়ে আগুন পোহানের দৃশ্য। শীত মোকাবেলায় আগুন পোহানোর ধুম পরে যায় সব বয়সীদের মাঝে। তবে আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হওয়ার ঘটনাও বাড়ছে।।
চলমান শীতে রংপুর মেডিকেলে এখন পর্যন্ত আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হয়েছেন ৬ জন। শীতে আগুন পোহাতে গিয়ে দুর্ঘটনা এড়াতে সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।
এ বিষয়ে রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান জানান, চলমান শীতে কয়দিন ধরে বেশির সময় সূর্যের দেখা মিলছে না। সকাল থেকেই ঘন কুয়াশা ও তীব্র বাতাস অনূভুত হচ্ছে এই অবস্থা আরও দুই- তিন থাকতে পারে।
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় ছাত্র সমন্বয়ক গোলাম আজমের (২৫) ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। আহত অবস্থায় তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার পৌরসভার কোটতলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে তার বড় ভাই মাসুদ আলম বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, পৌরসভার কোটতলী এলাকায় নিজ বাড়ির পাশের সড়কে হাঁটছিলেন গোলাম আজম। এ সময় ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে প্রতিবেশী দেদুল মিয়া (৫৯), তার ছেলে সজিব মিয়া ওরফে টাইগার (২৬) ও রহিদুল ইসলাম (৩২) তাকে মারধর করেন।
পরে স্থানীয়দের সহায়তায় পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক বিকেলে আজমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
এ বিষয়ে পাটগ্রাম থানার ওসি আশরাফুজ্জামান সরকার জানান, দুপুরে এজাহারভুক্ত আসামি সজিব মিয়া ওরফে টাইগারও দেদুল মিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ। হামলার প্রতিবাদে এদিন বিকেলে শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও চৌরঙ্গী মোড়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।