গাড়ি কেনার নামে প্রতারণার মাধ্যমে তিন কোটি টাকা মূল্যের চারটি গাড়ি আত্মসাতের অভিযোগে চারটি গাড়ি উদ্ধারসহ পাঁচ প্রতারককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতাররা হলেন, জারাক আহমেদ (৩৮), আবুল কালাম রিফতিয়ার (৩৮), মো. জামির হোসেন (৩৬), মো. সজল আহম্মেদ (৩০) ও আব্দুর রহমান রুবেল (৫৬)।
মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ এলাকায় থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডের ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) ইবনে মিজান এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, মো. ইমদাদুল হক খান ওরফে নওশাদ (৪২) একজন গাড়ি ব্যবসায়ী। তেজগাঁওয়ের ২৪০, আজিজ কোর্ট গ্রাউন্ড ফ্লোরে তার একটি গাড়ি বিক্রয়ের শো-রুম রয়েছে। এবি ড্রাইভ লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জারাক আহমেদ (৩৮) ও চেয়ারম্যান মো. জামির হোসেন (৩৬) গত (২৬ নভেম্বর ২০২৪) হতে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বিক্রয়ের উদ্দেশে চারটি গাড়ি ডেলিভারি চালান মূলে ভাটারার থানার নর্দ্দা প্রগতি স্মরণি এলাকায় এবি ড্রাইভ লি. এর শো-রুমে নিয়ে যায়।
গাড়ি চারটির সর্বমোট বাজার মূল্য তিন কোটি টাকা। পরবর্তী সময়ে তাদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা গাড়িগুলো ফেরত দেবেনা বলে জানায় এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে। ইমদাদুল হক খান খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তারা গাড়িগুলো প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাতের উদ্দেশে এবি ড্রাইভ লি. নর্দ্দা বাসস্যান্ড এলাকার শো-রুম থেকে অন্যত্র সরিয়ে ফেলেছে।
এ ঘটনায় গত ৫ জানুয়ারি ইমদাদুল হক খানের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জারাক আহমেদ ও মো. জামির হোসেন সহ অজ্ঞাতনামা ২-৩ জনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়।। এই মামলার সূত্রে ধরে গত রাতে গুলশান লিংক রোড এলাকা হতে এবি ড্রাইভ লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জারাক আহমেদ (৩৮) কে আটক করে। পরবর্তীতে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর ও কাশিমপুর থানা এলাকা থেকে মো. জামির হোসেনের সহযোগি আবুল কালাম রিফতিয়ার (৩৮) কে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার আবুল কালাম রিফতিয়ার কে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিসি) ইবনে মিজান আরও জানান, তার বস মো. জামির হোসেন তাকে একটি টয়োটা এসকোয়্যার মাইক্রোবাস গাড়ি এবং একটি টয়োটা এক্সজিও প্রাইভেটকার তার জিম্মায় তার এক আত্মীয়ের বাসায় রাখতে বলে। ওই তথ্যের ভিত্তিতে তাকে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে ঢাকা মহানগর আফতাব নগর এলাকা হতে ওই গাড়ি দুইটি উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে তাকে আরও দুইটি গাড়ির কথা জিজ্ঞাসাবাদ করলে, সে বলে অন্য গাড়ি দুইটির বিষয়ে মো. সজল আহম্মেদ (৩০) অবগত রয়েছে। পরবর্তীতে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ি মো. সজল আহম্মেদ ও আব্দুর রহমান রুবেল কে গ্রেফতার করা হয়।
তাদের জিজ্ঞাসাবাদের তথ্যের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড ভূইগড় এলাকা হতে মো. সাইদুর রহমান কাছ থেকে একটি টয়োটা ভেলফেয়ার জিপ গাড়ি ও একটি টয়োটা হেরিয়ার জিপ গাড়ি উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার করা এই চারটি গাড়ি গ্রেফতাররা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছিলো বলে জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা স্বীকার করেছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
সারা বিশ্বে হ্যাকিং এত শক্তিশালী যে প্যারালাল আরেকটি গ্রুপ তৈরি করেও তাদেরকে প্রতিরোধ করাটা কষ্টকর হচ্ছে বলে বলে জানিয়েছেন ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে প্রাক-সাইবার ড্রিল সম্মেলন ২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত 'সাইবার নিরাপত্তা দৃষ্টিভঙ্গি অর্জনে সহযোগিতা বৃদ্ধি' শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা জানান তিনি।
হায়দার চৌধুরী বলেন, আমরা সাইবার স্পেস নিয়ে অনেক কথা বলি। এই সাইবার স্পেস কিন্তু অনেক ওয়াইড (বিস্তর) এরিয়া। যার কোন নির্দিষ্ট সীমানা নাই। এজন্য সিকিউরিটি নিয়ে আমরা এত কনসার্ন। সারা বিশ্বে যত ইন্সিডেন্ট ঘটে তার মধ্যে সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক ইন্সিডেন্টগুলো সবচেয়ে ট্যাসি এবং ক্যাসি। এমআইটি সর্বপ্রথম সিটিএসএস পদ্ধতিতে অথেন্টিকেশন শুরু করে। এটা ছিল সিম্পল পাসওয়ার্ড। সে সময় আমাদের দেশে সুপার কম্পিউটারের কথাও চিন্তা করতে পারতাম না। ওই সময় থেকে অনওয়ার্ড ডেভেলপমেন্ট গুলো হয়েছে।
আপনারা জানেন আইসিটি ডেভেলপমেন্টগুলো কিন্তু জিওমেট্রিক। এখানে ডেভেলপমেন্টগুলো এতো র্যাপিড (দ্রুত) যে দুজন মানুষ যখন রাস্তায় হাঁটে তখন একজন মানুষকে দ্রুতগামী হয় তাহলে আরেকজনের অনুরোধে দ্রুতগামী ব্যক্তি একটু স্লো মুভ করতে পারে। এই আইসিটি ডেভেলপমেন্টে কিন্তু সেই সুযোগ নেই। যখনই সাইবারের ব্যবহার বাড়বে তখনই কিন্তু মানষের মাঝে সর্বাগ্রে ভেসে উঠতে হবে। কারণ এই জায়গাটিকে অনিরাপদ রেখে কোন কাজ করা যাবে না।
বিজিডি গভট সার্টের অওতায় যে সাইবার ড্রিলগুলো হয় সেটা সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ কাভার করে। এখানে আমাদের সিআইএগুলো আছে এবং ফাইনান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন গুলো আছে। সেগুলোর সেনসিটিভিটি অনেক হাই। এগুলোর গুরুত্ব আমরা সবাই খুব ভালোভাবে জানি এবং জানি বলেই এগুলোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে কাজগুলো করা হয়।
সরকারের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। গভর্নমেন্ট ইন দ্যা স্টিয়ারিং। এই স্টিয়ারিংয়ে যখনি যারা বসে তখন তারা সারা দেশকে নেতৃত্ব দেয়। কিন্তু স্টিয়ারিংয়ে যারা আছে তাদের সক্ষমতার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে যদি না পাবলিক প্রাইভেট সেক্টরগুলো থেকে সাপোর্টগুলো আসে তাহলে পুরা কাজটা হয় না।
শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, আমাদের সবকিছু আছে কিন্তু একটা জায়গা শর্টেজ আছে, সেটা হচ্ছে এক্সেস অফ কো-অর্ডিনেশন। আমি সরকারি একটা এজেন্সির উদাহরণ দেই, এজেন্সি বা মন্ত্রণালয় ব্যবহার করছে। কিন্তু সেটা অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারছে না কারণ এক্সেস অব ইন্টারঅবিলিটি। তাই এই জিনিসগুলোকে অ্যাড্রেস করাটা জরুরি। আমরা সিস্টেম বেইজ কাজ করতে চাই, পেপার লেস অফিস চাই। সবকিছু ঠিক আছে কিন্তু যদি আমরা এই জায়গাগুলোকে সিকিউর (নিরাপদ) করতে না পারি তাহলে সিস্টেম বেইজ কাজ, পেপার লেস অফিস আপনাকে স্তব্ধ করে দিতে পারে। যে কথাগুলো আগেও আমি বললাম সাইবার স্পেসের কিন্তু কোন নির্দিষ্ট টেরিটোরিয়াল বাউন্ডারি নেই। পৃথিবীর যেকোনো জায়গা থেকে সাইবার আক্রমণ করতে পারে। আপনাকে স্তব্ধ করে দিতে পারে। তাই সবকিছুর আগে সাইবার সিকিউর করতে হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এর সহযোগী কমিটির চেয়ারম্যান রাফেল কবির, জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা সংস্থার মহাপরিচালক আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান, বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটি (বিসিএস) সহ-সভাপতি জয়নাল আবেদীন, এজিএস কোয়ালিটি অ্যাকশন লিমিটেড এর সফটওয়্যার টেস্টিং ল্যাবরেটরির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আহসান হাবিব প্রমুখ।
এনসিটিবি কর্তৃক নবম ও দশম শ্রেণীর বাংলা দ্বিতীয় পত্র বইয়ের পেছনের প্রচ্ছদ থেকে আদিবাসী শব্দ সংবলিত গ্ৰাফিতি বাতিলের প্রতিবাদে এনসিটিবি ভবন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করছে সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র জনতা।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল এগারোটার দিকে রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশ পালন করে সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র জনতা। পরবর্তী রোকেয়া হয় হয়ে কলাভবন ও মধু ক্যান্টিন প্রদক্ষিণ করে এনসিটিবি ভবন ঘেরাওয়ের উদ্দেশ্য রওনা দেয়।
বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অলিক মৃ বলেছেন,এনসিটিবি কর্তৃক নবম ও দশম শ্রেণীর বাংলা দ্বিতীয় বইয়ের পেছেনে হিন্দু ,বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, মুসলিম, আদিবাসী সংবলিত একটি গাছের গ্ৰাফিতি আঁকা হয়। কিন্তু একদল বিচ্ছিন্নবাদীদের চাপে পড়ে এনসিটিবি সেই গ্ৰাফিতি মুছে ফেলে। আমাদের বিচ্ছিন্নবাদী বলে আখ্যা দেয় তারা।
তিনি বলেন, এনসিটিবির কি রাষ্ট চালায় নাকি সরকার রাষ্ট চালাই? আমরা বাংলাদেশের নাগরিক। আপনাদের যেমন অধিকার আছে, আমাদের সেই অধিকার আছে। কিন্তু উল্টো আমাদের বিচ্ছিন্নবাদী বলে আখ্যা দিচ্ছে তারা।
আমরা এখন এনসিটিবি ভবন ঘেরাও করবো। আমাদের দাবি হলো: আদিবাসী সংবলিত গ্ৰাফিতি পুনর্বহাল করতে হবে। এখন থেকে পাঠ্য বইয়ে আদিবাসীদের যথাযথ মর্যাদা থাকতে হবে ।
তিনি আরো বলেন, একেক সরকার আমাদের একেক নাম দেয়। এক সরকার আমাদের উপজাতি বানিয়েছে, আরেক সরকার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বানিয়েছে। এখন দেখবো এই সরকার কি বানায় ? আমার নাম আমি ঠিক করবো আমরা কি, তারা ঠিক করার কে?
মানিকগঞ্জের ঘিওরে লায়লা আরজু (৬২) নামে এক ক্যান্সার আক্রান্ত বৃদ্ধাকে জবাই করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল ৮টার দিকে ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী ইউনিয়নের রাথুরা গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটে। দুই সন্তানের জননী লায়লা আরজু ওই এলাকার সেকেন্দার হোসেনের স্ত্রী।
নিহতের স্বামী সেকেন্দার আলী জানান, ক্যান্সার আক্রান্ত স্ত্রীকে বাসায় রেখে তিনি সকাল ৭টার দিকে কাঁচা বাজার করতে বের হয়। সকাল ৮টার দিকে বাসায় এসে স্ত্রীর রক্তাক্ত দেহ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন।
তার ধারণা কে বা কারা বাসায় প্রবেশ করে তার স্ত্রীকে গলা কেটে জবাই করে হত্যা করেছে। খবর পেয়ে ঘিওর থানার পুলিশসহ ডিবি কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি উদ্ঘাটনের চেষ্টা করছেন।
ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, সকাল পৌনে ৮টার দিকে এক বা একাধিক দুর্বৃত্তরা সেকেন্দার আলীর স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা করছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।