স্থায়ী বাঁধের দাবিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয় ঘেরাও
কুষ্টিয়ার পদ্মা নদীর ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয় ঘেরাও করেছে স্থানীয়রা।
রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে টানা বৃষ্টি উপেক্ষা করে দুই উপজেলার বিশেষ করে মির্জানগর, সাহেবনগর, খাদিমপুর, মসলেমপুর ও টিকটিকি পাড়ার কয়েক হাজার মানুষ পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয় ঘেরাও করে।
কুষ্টিয়ার মিরপুর ও ভেড়ামারা উপজেলার পদ্মাপাড়ের বেশ কয়েকটি গ্রাম ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়েছে। পদ্মায় পানি বৃদ্ধির ফলে প্রায় ৯ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। হুমকির মুখে পড়েছে কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী জাতীয় মহাসড়কও। আর এ ভাঙন থেকে রক্ষায় এবার পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয় ঘেরাও করেছে দুই উপজেলার প্রায় হাজারো মানুষ।
মানববন্ধনে বিক্ষোভকারীরা বলেন, পদ্মার তীর ঘেঁষে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বাঁধ নির্মাণের কারণে ভাঙন তীব্র হয়েছে। এটি নির্মাণের পর থেকেই তাদের বসতবাড়ি ও হাজার হাজার একর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
তারা আরও বলেন, মিরপুর ও ভেড়ামারা উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের শত শত বিঘা নদীর গর্ভে কৃষি জমি বিলীন হয়ে গেছে। নদী ভাঙ্গন এখন রোধ করা হলে অচিরেই আরও অনেক গ্রাম নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। বাড়িঘর ভাঙ্গনে আমরা এলাকাবাসী নিঃস্ব হয়ে যাব।
বর্তমান সরকারের অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের নিকট জরুরীভাবে বর্তমানে ভাঙন রোধ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ও ভবিষ্যতে নদী ভাঙন রোধ করতে স্থায়ী বাঁধের দাবী জানান স্থানীয়রা।
এ সময় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুর রহমান পদ্মার ভাঙন রোধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে আশ্বাস দিলে বিক্ষুব্ধ জনতা পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয় ত্যাগ করেন। এর আগে একই দাবিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেন বিক্ষুব্ধ জনতা।
এদিকে মিরপুর উপজেলার সাহেবনগর নদীভাঙন প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক মেহেদী হাসান অপু বলেন, 'পদ্মার তীব্র ভাঙনের কবলে পড়েছে বহলবাড়িয়া, বারুইপাড়া, তালবাড়িয়া, খাদিমপুর, সাহেবনগর, মির্জানগর ও ঘোড়ামারাসহ বেশকিছু এলাকা। বিগত তিন বছর যাবৎ নদীগর্ভে শত শত একর আবাদি জমি বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে জাতীয় গ্রিডের ছয়টি বিদ্যুৎ সঞ্চালনের টাওয়ারসহ বসতবাড়ি, শতবর্ষী স্কুল-কলেজ ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে। কুষ্টিয়া ঈশ্বরদী-মহাসড়ক থেকে নদী মাত্র ৫০ মিটার দূরে আছে। সড়কটি যেকোনো সময় ভাঙনের কবলে পড়বে।'
মেহেদী হাসানের অভিযোগ, এসব এলাকার ভাঙন রোধে সরকারিভাবে ১ হাজার ৪৭২ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হলেও চলতি মৌসুমে কোনো জিও ব্যাগ ফেলার কাজ করেনি পাউবো।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান বলেন, 'টানা বৃষ্টিতে নদীর পানি ২-৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া নদীর গতিপথ পরিবর্তন ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে ওই এলাকায় ভাঙন তীব্র হয়েছে। আমরা ব্যাপারটি অবজারভেশনের মধ্যে রেখেছি। শুক্রবারও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিদ্যুৎ সঞ্চালন টাওয়ার ও বেড়িবাঁধসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষায় সেখানে দ্রুত জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলার কাজ শুরু হচ্ছে।'