রংপুরে তীব্র গরমে বেড়েছে হাতপাখার কদর

  • বর্ণালী জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, রংপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

গরমে বেড়েছে হাতপাখার কদর/ছবি: বার্তা২৪.কম

গরমে বেড়েছে হাতপাখার কদর/ছবি: বার্তা২৪.কম

রংপুরে তীব্র গরম ও লোডশেডিংয়ে দ্বিগুণ বেড়েছে হাতপাখার কদর। গরমে স্বস্তি ফেরাতে তালের পাতা, সুতা ও কারুকার্য খচিত সৌখিন বাহারি পাখার পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা৷ বৈদ্যুতিক পাখার বিকল্প হিসেবে একমাত্র ভরসা হাতপাখা।

তীব্র গরমে তাপদাহের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শহরের পাশাপাশি গ্রামেও ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে পাখার। চাহিদার সঙ্গে দামেও এসেছে পরিবর্তন। ফলে জমজমাট ব্যবসা করছেন ব্যবসায়ীরা। রংপুর নগরীর কাচারী বাজার ঘুরে চোখে পড়ে এমন দৃশ্য৷

বিজ্ঞাপন

ফুটপাতের ধারে দোকানের চারিদিকে শোভা পাচ্ছে বাহারি হাতপাখা। যেন বাহারি রংয়ের সৌখিন পাখা দূর থেকে নজর কারছে ক্রেতাদের। কেউ উদ্দেশ্য করে আসছেন পাখা কিনছেন, কেউবা চলতি পথে কিনছেন, আবার অনেকেই পাখা দেখে দামে পুষলে কিনে নিচ্ছেন।

গরমে বেড়েছে হাতপাখার কদর/ছবি: বার্তা২৪.কম

পাখা কিনতে আসা ক্রেতা ডালিম দাস বলেন, 'বাসাত গরমে ছাওয়া পোয়া ধরি থাকা যায়না। আস্তা দিয়া চলতি পথে যাবার বাদে পাংকা দেখি মনে পড়িল তাই ৫০ টাকা দি নিনু এ্যাখান পাংখা। এ্যালা দাম বেশি নিলেও ছইলের ঘরের জইনতে নেওয়া তো খাইবেই। আগোত এ্যাখান পাংখা ছিল ১৫-২০ টেহা। এল্যা তিনগুন দাম বাইড়ছে।'

বিজ্ঞাপন

পাখা কিনতে আসা ক্রেতা কোহিনূর বলেন, 'কারেন্ট না থাকলে যতই চার্জার ফ্যান থাকুক হাতপাখার মত হয় না। বাসার জন্য পাখা কিনতে আসছি। সাথে ছোট ফোল্ডিং পাখা কিনলাম বাচ্চাদের জন্য। সুতার কাজ, ডলার বসানো পাখা কিনলাম ১৮০ টাকা দিয়ে। পাখার দাম বেশি মনে হচ্ছে কিন্তু উপায় নাই, গরমে পাখা কিনতেই হবে।'

শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে নারীদের তৈরি এই পাখা আসে এখানে। বিশেষ করে ময়মনসিংহ, বগুড়া, নওগা, সৈয়দপুর, পীরগাছা, বদরগঞ্জ থেকে পাইকারি এনে কিছু টাকা লাভে বিক্রি হয় এখানে। পাখা কারিগরদের পাশাপাশি দম ফেলার ফুসরত মিলছে না ব্যবসায়ীদের।

গরমে বেড়েছে হাতপাখার কদর/ছবি: বার্তা২৪.কম

কাচারি বাজার ফুটপাতে পসরা সাজিয়ে বসা পাখা ব্যবসায়ী ইমরান বলেন, 'দীর্ঘ বছর ধরে পাখার ব্যবসা করে সংসার চলে। গরম বাড়ার সাথে সাথে আগের থেকে ব্যবসা দ্বিগুণ বাড়ছে। আগে দৈনিক ৫০-৬০ পিস পাখা বিক্রি হতো। এখন ১৫০-২০০পিস পাখা বিক্রি হয়। সর্বনিম্ন পাখা বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা সর্বোচ্চ ১৮০ টাকা৷ একশো পাখা কিনতে হচ্ছে ২২০০ - ৬০০০ টাকা দরে। পাখা সেট করে দম ফেলাতে পারি না। মানুষের রুচির সঙ্গে পাখায় কারুকার্যে পরিবর্তন এসেছে। অনেকে ঘরসাজানোর জন্যও পাখা নিয়ে যায়। পাখা পল্লীর ব্যস্ততার পাশাপাশি আমাদের ব্যস্ততাও বাড়ছে।'

ব্যবসায়ী আব্দুল কাদের বলেন, 'গরম আর লোডশেডিং মানেই আমাদের পাখা বিক্রির ধুম। দোকানে ভিড় জমে, আমাদের বিক্রিও ভালো হয়। আমাদের কাছ থেকে পাইকারি নিয়ে গ্রামে গ্রামে বা শহরে ছোট-বড় কিছু দোকানেও পাখা বিক্রি করেন বিক্রেতারা। সবমিলিয়ে দ্বিগুণ চাহিদা হাত পাখার।'

গরমে প্রাণ জুড়ানো হাতপাখার বাতাসে চাহিদায় বেড়েছে দ্বিগুণ কদর। বাজারে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে, বেচাকেনাও ভালো হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।