রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত শিক্ষকদের আরআরআরসি অফিস ঘেরাও
কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলার রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে কর্মরত প্রায় ৪ হাজার হোস্ট কমিউনিটির শিক্ষক-শিক্ষিকা শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন (আরআরআরসি) কার্যালয় ঘেরাও করে অনশন কর্মসূচি পালন করছে।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে অনশন কর্মসূচি শুরু করে তারা। এতে অনেকেই তপ্ত গরমে হিটস্ট্রোক করে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।
ক্যাম্পে কর্মরত শিক্ষকদের ৪ দফা দাবি হলো- শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি করে ন্যূনতম ২২ হাজার ৫০০ টাকা করা, বেতনসহ মাতৃত্বকালীন ছুটি প্রদান, উৎসব ভাতা প্রদান এবং ক্লাস্টার সিস্টেম বাতিল এবং অযথা শিক্ষক ছাঁটাই বন্ধ করা।
আন্দোলনরত হোস্ট টিচারদের পক্ষে আছহাব চৌধুরী বলেন, ৪ দফা দাবি যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত না হওয়ায় আমরা গত ১২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কর্মসূচির অংশ হিসেবে কর্মবিরতিতে আছি এবং ক্যাম্পে মুভমেন্ট করছি না, সেই সাথে আমরা বিভিন্ন শিক্ষা প্রকল্প অফিসে গিয়ে তাদের প্রকল্প অফিসের কাজ চলমান না রাখার আবেদন করেছি, এতে তারা আমাদের কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়েছেন ও লিখিতভাবে সম্মতি দিয়েছেন যে তারা আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অফিসের কার্যক্রম স্থগিত রাখবেন।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা বলেছেন, ‘আমরা শিক্ষকরা রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে ঘাম ঝরানো পরিশ্রম করে সর্বোচ্চটুকু দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু দাতা সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা দিন শেষে আমাদের করা কার্যক্রমের ওপর রিপোর্ট পেশ করে বাহবা কুড়াচ্ছে এবং মাসে মাসে তাদের বেতন ভাতা বৃদ্ধি করেই চলেছে। কিন্তু আমরা স্থানীয়রা ছাগলের ৩ নং বাচ্চাদের মত বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। আর আমরা যারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ২০১৭ সাল হতে এ পর্যন্ত চাকরি করে আসছি, আমাদের যোগদানকালীন সময়ে বেতন ভাতা দিত ১৪ হাজার ৬০০ টাকা, ওখান থেকে বাড়িয়ে ২০২২ সালে ১৫ হাজার ৮০০ টাকা করেছে। এছাড়া আর কোনো বেতন ভাতা বাড়ানো হয়নি। বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে এই বেতন ভাতা দিয়ে আমাদের হয় না। আমাদের দাবি হল শিক্ষকদের সর্বনিম্ন ন্যূনতম বেতন ২২ হাজার ৫০০ টাকা করতে হবে, শিক্ষিকাদের মাতৃত্বকালীন ছুটি দিতে হবে, ক্লাস্টার সিস্টেম পড়া লেখা বাতিল করতে হবে, দুই ঈদের দুই বোনাসসহ উৎসব ভাতা প্রদান করতে হবে।
এই দাবিগুলো বাস্তবায়ন হলে আমরা আমাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেব। যদি দাবি মেনে নেওয়া না হয় আমরা বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের নিয়ে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়।
এ সময় মাঝখানে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় বিকেলের দিকে তাদের কয়েকজনের সাথে সংশ্লিষ্টরা বসে জানুয়ারি থেকে তাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দেন। কিন্তু তারা লিখিত না দেওয়ায় সেটি প্রত্যাহার করে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা ৬টা ৪৫) দুইটি গেইটে অফিস ঘেরাও করে আন্দোলন চলমান রেখেছে।