রাঙামাটিতে জেলা প্রশাসনের সম্প্রীতি সমাবেশ
সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের দুইদিন পর রাঙামাটি জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীর পাশাপাশি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি, জামায়াত, সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএসসহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, গণমাধ্যম ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যবসায়ী নেতাদের নানামুখী তৎপরতায় রাঙামাটির জনজীবনে স্বস্তি ফিরে আসছে।
গত শুক্রবার রাঙামাটিতে সংগঠিত সংঘর্ষের কারণে ব্যাপকহারে ধ্বংসযজ্ঞ, অবরোধ, ধর্মঘট ও ১৪৪ ধারা জারির পাশাপাশি নানাবিধ গুজবের ফলে রাঙামাটি শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে আস্থার সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। পরিস্থিতির উন্নয়নে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের তিনজন গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টাসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিবৃন্দ শনিবার রাঙামাটি পরিদর্শন করে মতবিনিময় করে যাওয়ার পর রোববার রাঙামাটিতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সম্প্রীতি সমাবেশ করা হয়।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নিজ সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো: মোশারফ হোসেন খান। এতে রাঙামাটি সদর সেনা জোন কমান্ডার মোঃ এরশাদ হোসেন চৌধুরী পিএসপি, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কেএসমং, সিভিল সার্জন ডা. নূয়েন খীসা, পুলিশ সুপার ড. এস এম ফরহাদ হোসেন, প্রেসক্লাব সভাপতি মো: সাখাওয়াত হোসেন রুবেল, জেলা বিএনপির সভাপতি দিপন তালুকদার দিপু, জামায়াতের আমীর আব্দুল আলীম বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাঙামাটি প্রেসক্লাব, সাংবাদিকবৃন্দসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা সভায় অংশগ্রহণ করেন।
সমাবেশে পাহাড়ি-বাঙালি সাম্প্রদায়িক ঘটনায় যারা হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা, জেলা শহরের পৌর এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসি ক্যামরা স্থাপন, সম্প্রীতি রক্ষায় কমিটি গঠন, সম্প্রীতি সমাবেশ, নতুন করে আইন শৃঙ্খলা কমিটি গঠন, ১৪৪ ধারা প্রত্যাহারের বিষয়ে সকলকে অবহিত করা, জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের সামনে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ, বনরূপা এলাকায় সেনাক্যাম্প স্থাপন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা রুজু, পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডের শিকার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান, ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এই কোর কমিটি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো সরেজমিনে পরিদর্শনের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সাথে সরাসরি কথা বলে ক্ষয়-ক্ষতির বিষয়টি পূঙ্খানুপুঙ্খভাবে তুলে ধরে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে এবং সেই প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
অপরদিকে রাঙামাটিতে সংগঠিত সাম্প্রদায়িক ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুইটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাঙামাটির নবাগত পুলিশ সুপার ড. এস এম ফরহাদ হোসেন। এই দুইটি মামলার আলোকেই রাঙামাটিতে সংগঠিত সংঘর্ষের ঘটনার তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, যাই আরাইন হাতে তুলে নিয়েছে তাদের কোনোভাবেই ছাড় দেয়া হবে না। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সকলকেই ভূমিকা রাখার আহবানও জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।