অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ ২ বছরের পক্ষে ৫৩ শতাংশ ভোটার

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ দুই বছর বা তারও কম সময় হওয়া উচিত বলে মনে করেন বাংলাদেশের ৫৩ শতাংশ ভোটার। নর্থ সাউথ ইউনির্ভাসিটির সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভরনেন্স (এসআইপিজি) পরিচালিত এক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে।

বুধবার (২ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত 'বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছ থেকে নাগরিকদের প্রত্যাশা' শীর্ষক একটি জাতীয় জরিপের ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়।

বিজ্ঞাপন

জরিপ সম্পর্কে বলা হয়, গত ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর দেশের আটটি বিভাগের ১৭টি জেলায় মোট এক হাজার ৮৬৯ জনের উপর এই জরিপ করা হয়। এটি জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী সর্বপ্রথম সরাসরি পরিচালিত একটি জাতীয় প্রতিনিধিত্বমূলক জরিপ। এই জরিপের উত্তরদাতাদের বৃহত্তম অংশ (৬৩ শতাংশ) মধ্যবয়সী যাদের বয়স ২৮ থেকে ৫০ বছর। ২২ শতাংশ জেনারেশ জেড (১৮-২৭) এবং ১৪ শতাংশের বয়স ৫০ বছরের উপরে। এছাড়া জরিপের উত্তরদাতাদের ৫৪ শতাংশ শহর অঞ্চল এবং ৪৬ শতাংশ গ্রামীণ অঞ্চলের।

জরিপের ফলাফল তুলে ধরে বলা হয়, উত্তর দাদাদের প্রায় ৫৩ শতাংশ মনে করেন বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ দুই বছর বা তার কম হওয়া উচিত। যেখানে ৪৭ শতাংশ মনে করেন এই অন্তবর্তীকালীন সরকারকে তিন বছর বা তার বেশি সময় ক্ষমতায় থাকতে হবে।

বিজ্ঞাপন

এই জরিপে উত্তরদাতাদের ৪৬ শতাংশ রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে তাদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে অনিশ্চিত আর ৫৪ শতাংশ মূলধারার রাজনীতিতে তাদের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এছাড়া ৯৬ শতাংশ প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিত করাকে সমর্থন করে। ৪৬ শতাংশ বিশ্বাস করে সংবিধানের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন প্রয়োজন এবং ১৬ শতাংশ সম্পূর্ন নতুন সংবিধানের পক্ষে তাদের মত জানিয়েছেন।

গবেষণার তথ্যে আরও বলা হয়, নাগরিকদের অন্তর্ভুক্ত করা গেলে সরকারের বর্তমান অবস্থান নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে আগস্ট সেপ্টেম্বর তাদের বন্যা ব্যবস্থাপনার প্রশংসা করেছেন। পুলিশ, শিক্ষা ব্যবস্থা, রাজনৈতিক ব্যবস্থা এবং নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কারের উপর নাগরিকদের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ পেয়েছে। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সচিব ড.বদিউল আলম মজুমদার বলেন, একটা বিষয় সুস্পষ্টভাবে মানুষের উপলব্ধিতে ছিল সেটি হলো বিচার। যারা এত বছর থেকে সকল অন্যায় করেছে, যারা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে, যারা ফৌজদারী অপরাধ করেছে, আর্থিক অপরাধ করেছে, নির্বাচনী অপরাধ করেছে তাদের বিচারের কথা অনেকে সুস্পষ্টভাবে বলছেন। অনেকের মনেও ছিলো। মানুষ নির্বাচনী সংস্কার চায় যাতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এটি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, এটিকে নির্বাসনে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। 

তিনি বলেন, আমাদের দায়িত্ব হল কারিগরি কিছু সুপারিশ করা। আমি যেই কমিশনের সাথে যুক্ত সেই কমিশনের কাজ হবে কিভাবে সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন করা যায়। তার কিছু টেকনিক্যাল সলিউশন আমাদের অভিজ্ঞতার আলোকে, বাইরের অভিজ্ঞতার আলোকে এবং জনগণের সাথে বা বিভিন্ন স্টোক হোল্ডারের সাথে আলোচনা করে কি কি আইন পরিবর্তন করা দরকার, নির্বাচনী ব্যবস্থার সাথে যেসব প্রতিষ্ঠান জড়িত আছে তাদের কি কি পরিবর্তন দরকার, সাংবিধানিক কি কি সংস্কার দরকার এগুলো সম্পর্কে আমরা সুপারিশ দিতে পারি। আমরা আশা করছি আমাদের সুপারিশ পাওয়ার পর সরকার রাজনৈতিক দলের সাথে বসে একটা ঐক্যমতে পৌঁছার চেষ্টা করবে এবং একটি রোডম্যাপ সৃষ্টি হবে ও নির্বাচনের সময়কাল নির্ধারিত হবে।

এসময় এসআইপিজি'র উপদেষ্টা অধ্যাপক সালাহউদ্দিন এম.আমিনুজ্জামান সহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।