নিউমার্কেটে চলছে 'জলজমাট' পূজার বাজার

  • গুলশান জাহান সারিকা, স্টাফ করেস্পন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

উৎসব হোক কিংবা যেকোন অনুষ্ঠান, রাজধানীর নিম্নবিত্ত থেকে উচ্চ মধ্যবিত্ত সকলের কেনাকাটার অন্যতম পছন্দের জায়গা ঢাকার নিউমার্কেট। দিন কয়েক বাদেই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। এ উপলক্ষ্যে যেখানে বিক্রেতাদের হাসিমুখ থাকার কথা সেখানে তাদের চোখেমুখে বিষন্নতার ছাপ। শুধু তাদের নয় ক্রেতাদেরও লক্ষ্য করা গেছে অস্বস্তির ছাপে।  তা-হবেই বা না কেন? বৃষ্টির আগমনে যে তলিয়েছে নিউমার্কেট। শুধু নিউমার্কেট নয়, আশপাশের সব এলাকাই পানিতে টইটম্বুর। এতে আশানুরূপ ক্রেতাদের সমাগম না হলেও চোখে উপস্থিতির টের পাওয়া গেছে। এমন পরিস্থিতিতে নিউমার্কেটে চলছে 'জলজমাট' পূজার বাজার- তা বললে কী খুব বেশি বলা হবে?  

শনিবার (৫ অক্টোবর) সরেজমিনে নিউমার্কেটসহ আশপাশের এলাকা ঘুরে এমন চিত্রের দেখা মেলে।

বিজ্ঞাপন

সকাল থেকে টানা বৃষ্টিতে রাস্তাসহ দোকানের মধ্যে জমেছে পানি। বাদ যায়নি ফুটপাতের দোকানগুলোও। বৃষ্টি উপেক্ষা করে ছাতা মাথায় পূজার কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।


তবে একদিকে ক্রেতারা দাম নিয়ে অসন্তোষের কথা জানাচ্ছেন অন্যদিকে বিক্রেতারা অজুহাত দিচ্ছেন বৃষ্টির।

পূজার কেনাকাটা করতে গাউসিয়া মার্কেটে এসেছে শিক্ষার্থী অনামিকা তন্দ্রা সাহা ও তার বোন সাগরিকা সমৃদ্ধি সাহা। অনামিকা বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান এই দুর্গাপূজা। ভাবছি স্বস্তি নিয়ে কেনাকাটা করতে পারবো। কিন্তু বৃষ্টির মধ্যে অস্বস্তি নিয়েই এখন কেনাকাটা করতে হচ্ছে।

আশপাশে যেখানেই তাঁকাই সেখানেই জলাবদ্ধতা। এর মধ্যে দিয়েই প্যান্ট উঁচু করে দোকানে ঢুকতে দেখা গেছে এক ভদ্রলোককে। কাছে গিয়ে জানতে পারলাম তার নাম মনরঞ্জন মন্ডল। তিনি বলেন, বসুন্ধরা, গুলশান কিংবা বনানীর মতো জায়গা থেকে কেনার সামর্থ্য নেই। তাই বৃষ্টি উপেক্ষা করেই পরিবার নিয়ে নিউমার্কেট এসেছি।

ফুটপাতের দোকানগুলো বসতে না পারায় স্বল্প আয়ের মানুষসহ ফুটপাত দোকানীরা জানাচ্ছেন দুরাবস্থার কথা।

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তানভীর বলেন, এই বৃষ্টির জন্য পূজোর বাজারই পাইলাম না। আমরা একের পর এক লস গুনতাছি। আমাদের প্রতিদিন আয় প্রতিদিন ব্যয়। এরম হইলে না খেয়ে মরতে হবে। 


অন্যদিকে কিছু ক্রেতা জানাচ্ছেন দাম নিয়ে অসন্তোষের কথা। কল্পনারানী রায় বলেন, প্রতিটা গজ কাপড় ২০/৩০ টাকা বেশি চাইতেছে। উৎসব আসলেই দাম বেড়ে যায়। এখন দেখতেছে কিনাই লাগবে তাই দাম কমাচ্ছে না। 

এদিকে বিক্রেতারা দাম বেশি নেওয়ার অভিযোগ নাকচ করে অজুহাত দিচ্ছেন বৈরী আবহাওয়া, জলাবদ্ধতা ও দেশের সম্প্রতি প্রেক্ষাপটের ওপর। পূজা উদ্দেশ্য করে ভালো বেচা-বিক্রির আশা করলেও তা হচ্ছে না।


গাউছিয়া মার্কেটের রফিক টেক্সটাইলের বিক্রেতা কামরুল বলেন, জলাবদ্ধতায় ক্রেতারা যে হারে আসার কথা সে হারে আসতে পারছেনা। ফলে বিক্রি কম।

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে আগামীকালও (রোববার) ঢাকাতে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ক্রেতা-বিক্রেতারা নিজেদেরকে কতটা সামলিয়ে নিতে পারে সেটাই এখন দেখার বিষয়।