ঘুরে দাঁড়াতে অভাবী মেয়ে কামরুন্নাহারের সংগ্রাম



রাকিবুল ইসলাম রাকিব, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ), বার্তা২৪.কম 
ঘুরে দাঁড়াতে অভাবী মেয়ে কামরুন্নাহারের সংগ্রাম। ছবি: বার্তা২৪.কম

ঘুরে দাঁড়াতে অভাবী মেয়ে কামরুন্নাহারের সংগ্রাম। ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ছোট একটা কুঁড়েঘর। সামনে ছোট একটা উঠান। সেখানে বসে ছোট একটি মেয়ে পাঠ্যবই সামনে নিয়ে বেত বুনে ধাড়ি (চাটাই) তৈরি করছে। মেয়েটি কিছুক্ষণ বেত বুনে, তার ফাঁকে কিছুক্ষণ বই পড়ে। এভাবেই বুনন ও বইয়ের পাতায় একটু একটু নজর দিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ ধাড়ি তৈরি করে চলেছে।

গতকাল শুক্রবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ২ নং গৌরীপুর ইউনিয়নে বায়রাউড়া গ্রামের একটি বাড়িতে এ দৃশ্য চোখে পড়ে।

কাছে গিয়ে কথা হয় মেয়েটির সঙ্গে। বার্তা২৪.কমকে তিনি জানান, তার নাম মোছা. কামরুন্নাহার। অভাবের সংসারে সারাক্ষণ কাজ করতে হয় বলে কলেজের পাঠ্যবই পড়ার সময় পান না। তাই বেত বুননের ফাঁকে ফাঁকে পড়েন তিনি।

কামরুন্নাহারের বাড়ি বায়রাউড়া গ্রামে। তিনি পড়াশোনা করছেন জেলার আনন্দমোহন কলেজের অনার্স বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে। তার বাবা সাইদুর রহমান। মা আছমা খাতুন। দুই ভাই ও চার বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়।

কথা বলতে বলতেই বুননের কাজ করে চলেছেন কামরুন্নাহার। হাতের নিপুন কৌশলে বেত বুনতে বুনতে একটি ধাড়ি তৈরি করে ফেলেছেন কয়েকঘণ্টার মধ্যেই। বার্তা২৪.কমকে তিনি বলেন, ‘আমার দরিদ্র বাবা শহরে ফেরি করে কলা বিক্রি করে। কিন্তু তার একার আয়ে ভাইবোনদের পড়াশোনার খরচ তো দূরের কথা, তিনবেলা খেতেই পারতাম না। বড় বোন শামসুন্নাহার অনেক কষ্টে এইচএসসি পাশ করলেও টাকার অভাবে ভর্তি হতে পারেনি। তাই পড়াশোনার খরচ নিজে জোগাতে বেতের কাজ, টিউশনি ও খণ্ডকালীন শিক্ষকতা করি। একই সঙ্গে সংসারের হাল ধরার পাশাপাশি নিজের ও ভাইবোনদের পড়াশোনা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Feb/09/1549697192705.jpg

কামরুন্নাহের বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। ছোট দুই বোনের মধ্যে কারিমাতুন্নাহার দশম শ্রেণিতে ও তানিয়া আক্তার অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছে। ছোট দুই ভাইয়ের মধ্যে তোফায়েল আলম প্রথম শ্রেণিতে ও তৌহিদুল ইসলাম শিশু শ্রেণিতে পড়ে। এরমধ্যে দুই বোন প্রতিবন্ধী হলেও তারা সরকারি কোনো ভাতা পায় না।

২০১৫ সালে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে কামরুন্নাহার বেসরকারি একটি ব্যাংক থেকে দুই বছরের অর্থবৃত্তি পান। কিন্তু ২০১৭ সালে এইচএসসিতে অল্পের জন্য জিপিএ-৫ ছুটে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় তার অর্থবৃত্তি। এরপর কিছুটা অর্থকষ্টের মধ্যে পড়ে যান কামরুন্নাহার। কিন্তু অদম্য মনোবল নিয়ে অভাব জয়ের যুদ্ধে নেমেছেন তিনি।

প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে ভাইবোনদের নিয়ে পড়তে বসেন কামরুন্নাহার। এরপর তিনি টিউশনি করানোর জন্য চার কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে উপজেলা শহরে যান। টিউশনি শেষ করে একটি স্কুলে পাঠদান করান তিনি। টাকার অভাবে বাসের বদলে গৌরীপুর থেকে ট্রেনে চড়ে ময়মনসিংহ শহরে নিজ কলেজে যান। কলেজে ক্লাস শেষে সন্ধ্যার ট্রেনে বাড়ি ফেরেন তিনি।

বার্তা২৪.কমকে কামরুন্নাহার বলেন, ‘সংসার ও ৫ ভাইবোনের পড়াশোনা বাবদ প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা প্রয়োজন। কিন্তু আমরা বেত বুনে আয় করি ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। বাবা কিছুটা সহযোগিতা করলেও টানাটানি থাকে। আমি টিউশনি করে ২ হাজার টাকা সংসারে দেই। সংসারের হাল ধরতে ছোটবোন সেলাই প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। কিন্তু টাকার অভাবে মেশিন কিনতে পারিনি। তাই মেশিন কিনতে এখন আরেকটি টিউশনি নিয়েছি। কিন্তু আমিও তো ছোট মানুষ, শরীরে এত পরিশ্রম সহ্য হয় না।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Feb/09/1549697212025.jpg

এরই মাঝে সকালের বেলা দুপুরে গড়িয়েছে। মসজিদে বেজে উঠেছে আজানের ধ্বনি। এমন সময় বাড়িতে প্রবেশ করেন কামরুন্নাহের বাবা সাইদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমার ৫টা পোলা-মাইয়্যা কষ্ট কইর‌্যা লেহাপড়া করতাছে। ওরা ভালা খাইতারেনা, ভালা কাপড় পায় না। তাই গেরামের মানুষ আমারে কয় তুমি অভাবী মানুষ মাইয়্যাগোরে লেহাপড়া করাইয়্যা কী করাইবা? হেরচেয়ে ভালা বিয়া দিয়া দেও। এই কথাডা হুনলে খুব দুঃখ লাগে।’

বাবার কথার রেশ টেনে কামরুন্নাহার বলেন, ‘দুঃখ করো না বাবা। দুই বছর পর আমার অনার্স শেষ হলে আমি চাকরি করব, শিক্ষক হব। তখন আমাদের কোনো অভাব থাকবে না। আর ছোটরাও তখন দাঁড়িয়ে যাবে।’

   

মেহেরপুরে রসুন ও কাঁচা মরিচের দর লাগামহীন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
মেহেরপুরে রসুন ও কাঁচা মরিচের দর লাগামহীন

মেহেরপুরে রসুন ও কাঁচা মরিচের দর লাগামহীন

  • Font increase
  • Font Decrease

মেহেরপুরে লাগামহীন হয়ে পড়েছে রসুন ও কাঁচা মরিচের দাম। গেল এক সপ্তাহে রসুন কেজিতে ৪৫ টাকা এবং কাঁচা মরিচে বেড়েছে ৫০ টাকা পর্যন্ত। তবে স্থীতিশীল রয়েছে পেঁয়াজসহ অন্যান্য কাঁচা পণ্যের দর।

শুক্রবার জেলার পাইকারী আড়তগুলোতে প্রতি কেজি রসুন ২১০ টাকা এবং কাঁচা মরিচ ১২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। খুচরা পর্যায়ে যা কেজিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে আরও ২৫-৪০ টাকা পর্যন্ত। রসুন ও কাঁচা মরিচের জোগান কম থাকায় দর বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। সংকট দূর করতে রসুন আমদানীর দাবি করেন তারা।

গাংনী কাঁচা বাজারের আড়তদার সাহাদুল ইসলাম বলেন, এখনই রসুন আমদানি করতে হবে। তা না হলে ব্যবসায়ীদের ঘাড়ে সিন্ডিকেট করার বদনাম আসবে। দেশে যে পরিমাণ রসুন আছে তাতে চাহিদা পূরণ হবে না। সামনে কোরবানির ঈদে আরও বেড়ে যাবে।
এদিকে রসুন ও কাঁচা মরিচের দর বৃদ্ধিতে নাভিশ্বাস শুরু হয়েছে ভোক্তা পর্যায়ে। ক্রেতার আর ভোক্তাদের মাঝে বিরাজ করছে অসন্তোষ।

জানা গেছে, আষাঢ় মাস থেকে মাঘ মাস পর্যন্ত মেহেরপুর জেলার মরিচ পাওয়া যায়। এ মরিচ জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। বাকি সময় উত্তরবঙ্গ থেকে আসা মরিচ জেলার চাহিদা পূরণ করে।

;

পদ্মায় ডুবে যাওয়া নিখোঁজ কিশোরের মরদেহ উদ্ধার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা নদীতে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হওয়া কিশোর আসলাম হোসেনের (১৫) মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।

শুক্রবার (১৭ মে) সকালে খুলনা থেকে আসা ডুবুরি দল পদ্মা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে।

মৃত আসলাম হোসেন উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের ভূরকা মধ্যপাড়া এলাকার বারু মালিথার ছেলে।

বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে ভূরকা মধ্যপাড়া এলাকায় পদ্মা নদীতে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হয়েছিল সে।

মরিচা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মনোয়ারা খাতুন জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে আসলামসহ ১০-১২ জন সমবয়সী কিশোর একসাথে পদ্মা নদীতে গোসল করতে গিয়েছিল। গোসল শেষে সকলে নদী থেকে উঠে আসলেও আসলামকে না পেয়ে তার বন্ধুরা আসলামের বাবাকে খবর দেয়। পরে এলাকাবাসী নদীতে অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ভেড়ামারা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে খুলনা থেকে আসা ডুবুরি দল আজ সকালে মরদেহ উদ্ধার করে।

মরদেহ উদ্ধারের বিষয়ে ভেড়ামারা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার শরিফুল ইসলাম বলেন, পদ্মা নদীতে নিখোঁজ হওয়া কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা দৌলতপুর থানা পুলিশের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করেছি। আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন শেষে পুলিশ আসলামের পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করবে। 

;

চট্টগ্রামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা, সাংবাদিককে অব্যাহতি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রামের আঞ্চলিক একুশে পত্রিকায় কর্মরত লোহাগাড়া উপজেলার প্রতিনিধি মোহাম্মদ আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা থেকে আদালত তাকে অব্যহাতি দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার  (১৬ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জহিরুল কবির শুনানি শেষে আলাউদ্দিনকে অব্যহাতি প্রদান করেন।

জানা গেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট ও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশের জেরে আলাউদ্দিন ও একই উপজেলার ভোরের কাগজের প্রতিনিধি এরশাদ হোসাইনের বিরুদ্ধে মামলা করেন জাহাঙ্গীর আলম নামে এক ব্যক্তি। ২০২২ সালের ১৭ আগস্ট চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা করা হয়।

আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটকে তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলাটির তদন্ত শেষে ওই ইউনিটে কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক সিরাজুল মোস্তফা এরশাদ হোসাইনকে অব্যাহতির আবেদন এবং আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। বৃহস্পতিবার মামলাটির অভিযোগ গঠনের দিন ধার্য ছিল। এদিন আদালত শুনানি শেষে আলাউদ্দিনকে অব্যাহতি দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সাংবাদিক মোহাম্মদ আলাউদ্দিনের আইনজীবী এএইচএম জিয়া উদ্দিন বলেন, মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। সাংবাদিক আলাউদ্দিনের  অব্যাহতি চেয়ে বিজ্ঞ আদালতে আবেদন করা হয়।  উভয় পক্ষের শুনানি শেষে অভিযোগ গঠন করার মতো কোনো উপাদান না থাকায় উক্ত মামলা থেকে সাংবাদিক আলাউদ্দিনকে তাকে অব্যাহতি দেন বিজ্ঞ আদালত।

;

চুয়াডাঙ্গায় সড়ক দুর্ঘটনায় বাইসাইকেল আরোহী নিহত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চুয়াডাঙ্গা
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে সড়ক দুর্ঘটনায় জিয়ারুল হক (৫০) নামের এক বাইসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (১৭ মে) সকাল ১০টার দিকে জীবননগর-যশোর আঞ্চলিক মহাসড়কের বাঁকা ব্রিকস ফিল্ড নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত জিয়ারুল হক জীবননগর উপজেলার মিনাজপুর গ্রামের মৃত জহির মণ্ডলের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে বাইসাইকেলযোগে জীবননগর বাজারে যাচ্ছিলেন জিয়ারুল হক। পথের মধ্যে বাঁকা ব্রিকস ফিল্ড নামক স্থানে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মোটরচালিত পাখিভ্যানের সাথে ধাক্কা লাগে। এসময় জিয়ারুল সড়কের ওপর ছিটকে পড়ে মারাত্মক জখম হন। পরে স্থানীয়রা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মোস্তাফিজুর রহমান সুজন বার্তা২৪.কমকে জানান, আমরা হাসপাতালে তাকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি।

জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম জাবিদ হাসান বার্তা২৪.কমকে জানান, সকালে সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন। পরিবারের সদস্যরা মরদেহ বাড়িতে নিয়ে গেছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়েছে। সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।

;